লক্ষ্মীপুরে ‌‘পূর্ব শত্রুতার জেরে’ হামলায় এক জামায়াত নেতার মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০ জনকে। রবিবার (৮ জুন) রাতে নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এ ঘটনায় সোমবার (৯ জুন) পাল্টাপাল্টিা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত ও বিএনপি। 

নিহত কাউছার আহমেদ রাজিবপুর এলাকার মৃত মমিন উল্যার ছেলে। তিনি বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন জামায়াতের ওলামা বিভাগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি। 

আরো পড়ুন:

নগরকান্দায় চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার ৪

পাঁচ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর

কাউছারকে হত্যার প্রতিবাদ ও মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে জেলা জামায়াত। দলের জেলা কমিটির সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে, আজ সকাল ১০টার দিকে শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলা হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিএনপি। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান এ তথ্য জানান। 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে নিহত কাউছারের পরিবারের বিরোধ চলছে। এরই জেরে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে রাজিবপুর এলাকায় বাদীর বাড়ির সামনে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে কাউসারের ভাই আফতাব হোসেন আরজুর ওপর হামলা করে আসামিরা। তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করা হয়। 

ঘটনাটি দেখে কাউছার তার ভাইকে বাঁচাতে যান। তখন তার মাথার পেছনে লোহার রড দিয়ে কয়েকটি আঘাত করা হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের সামনে তাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়। 

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এতে ভয়ে তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। সন্ধ্যায় কাউছারের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, “নিহতের স্ত্রী থানায় মামলা করেছেন। মামলায় মো.

রিয়াজ, রনি, কামাল, সোহাগ, জহির, রকি, বাবুল, সোহেগ হেবেছা, বাবুল, সাহেদ, সুমন, স্বপন আহমেদের নাম রয়েছে। নাম না জানা ২০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। তারা আদিলপুর ও রাজিবপুর এলাকার বাসিন্দা। বিবাদীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।” 

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তরবঙ্গ দীর্ঘ সময় উন্নয়নবৈষম্যের শিকার: আখতার হোসেন

উত্তরবঙ্গ দীর্ঘ সময় উন্নয়নবৈষম্যের শিকার বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। আজ সোমবার দুপুরে রংপুরের কাউনিয়ায় এক সম্প্রীতি ও ঐক্য সমাবেশ অনুষ্ঠানে আখতার হোসেন এ মন্তব্য করেন।

কাউনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড মেডিকেল স্টুডেন্সস অ্যাসোসিয়েশন (আমসা) এ সম্প্রীতি ও ঐক্য সমাবেশ এবং নবীণবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমাদের অপ্রাপ্তির অসংখ্য জায়গা রয়েছে। শুধু কাউনিয়া উপজেলা নয়, গোটা উত্তরবঙ্গ যেভাবে উন্নয়নবৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে, প্রত্যেকটা বিষয়ে আমাদের দীর্ঘ সময়ের আক্ষেপ ও হতাশা রয়েছে। ঢাকা থেকে রংপুরে রেলপথে আসতে গেলে সিরাজগঞ্জ থেকে এত দূর ঘুরে বগুড়া হয়ে তারপর আমাদের আসতে হয়। যদি বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ রেললাইন থাকত, রংপুর অঞ্চলের মানুষের ঢাকা থেকে রংপুর আসতে অন্তত চার ঘণ্টা সময় কম লাগত।’

ঈদ উপলক্ষে ‘স্পেশাল’ ট্রেনেও উত্তরাঞ্চল বৈষম্যের শিকার উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘দুর্ভাগের বিষয়, আমাদের উত্তরাঞ্চেলের মানুষকে ঈদের সময় ট্রেনের ছাদে করে আসতে হয়। আমাদের জন্য স্পেশাল ট্রেন থাকে না। রংপুরের মানুষ যাতে সহজে ঢাকা-রংপুর যাতায়াত করতে পারে, সে জন্য সড়কপথ ও রেলপথের যে সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কারের জন্য এনসিপি, বিএনপি, জামায়াত—সকলকে এই সুরে কথা বলতে হবে। উত্তরাঞ্চেলের স্বার্থে আমরা কখনো মতপার্থক্যকে প্রাধান্য দেব না।’

সম্প্রীতি ও ঐক্য সমাবেশে তিস্তা নদী সমস্যা নিয়েও কথা বলেন এনসিপির সদস্যসচিব। আখতার হোসেন বলেন, ‘যদি তিস্তা নদীকে শাসন করা হতো, বাঁধ থাকত, নদীর গভীরতা থাকত, পানির প্রবাহ সঠিকভাব হতো, তিস্তা নদীকে কেন্দ্র করে শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠত। তাহলে এই নদী আমাদের জন্য কয়েকগুণ সৌভাগ্যের প্রতীক হতো। সম্প্রতি আমরা সে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি। সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা আশাবাদী, দলমতের পার্থক্য চাই না। আমরা আমাদের তিস্তা সমস্যার সমাধান চাই।’

কাউনিয়া উপজেলাকে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল থেকে এগিয়ে নিতে শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান আখতার হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির উপযোগী করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে গড়ে তোলা ও ভর্তি–ইচ্ছুদের যে ধরনের পরামর্শ ও উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন, তা গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।

আমসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা, রংপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির এ টি এম আজম খানসহ স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতারা বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ