হাতিয়ায় বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৩০
Published: 10th, June 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়ায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা একটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত উপজেলার তমরুদ্দি বাজারের আশপাশে দফায় দফায় ওই হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান ওরফে শামীম এবং হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা বিমান চন্দ্র আচার্য্য। তাঁদের মধ্যে মো.
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে তমরুদ্দি বাজারে আজ বেলা তিনটায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি অংশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান ওরফে শামীমকে। আনুমানিক বেলা একটায় শামীমের অনুসারীরা ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আসা শুরু করেন। পথে তমরুদ্দি বাজারে তাঁদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শামীমের অনুসারীদের অভিযোগ, সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের অনুসারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোকজন তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ নিয়ে বাজারের আশপাশে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। পরে খবর পেয়ে হাতিয়া থানার পুলিশ এবং নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলমগীর কবির ও শামীমের অনুসারীদের সরিয়ে দিয়ে মাঝখানে অবস্থান নেন। হামলা-সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের ২৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আর বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মাহবুবের রহমান শামীমের পক্ষের উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, দলের উদ্যোগে তাঁরা তমরুদ্দি বাজারে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আসার পথে কর্মীদের ওপর হামলা করেন দল থেকে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আলমগীর কবিরের লোকজন। এতে দলের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
অপর দিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘তমরুদ্দি এলাকায় আমাদের পক্ষের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় পাঁচ-ছয়জন আহত হয়েছে। আমাদের কোনো লোক কারও ওপর হামলা করেনি।’
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আজমল হুদা সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, তমরুদ্দি বাজারে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা-সংঘর্ষ হয়েছে। দুই পক্ষই মারমুখী ছিল। তবে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র অন স র য় ব এনপ র ব এনপ র স অন ষ ঠ ন স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।