সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এদিকে হামলার ঘটনার পর আজ থেকে কাছারিবাড়িতে দর্শনার্থীদের প্রবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছলাম আলী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

মামলায় শাহজাদপুর পৌর শহরের রূপপুর মহল্লার প্রবাসফেরত মো.

শাহনেওয়াজকে প্রধান আসামি করে তাঁর ভাই সবুজ, হান্নান, সুমনসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে আজ সকালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) শেখ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর মামলার সিদ্ধান্ত দেয়। এরপর দুপুরের দিকে কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার বাদী হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তো স্থানীয় কাউকে নামে চিনি না। যে কারণে ঘটনার পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নামগুলো থেকে ১২ জনের নাম নিয়ে তাঁদের আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদগুলো জমা দিয়ে সেখান থেকে ৫০ থেকে ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। পুলিশ সেগুলো দেখে আসামি শনাক্ত করতে পারবে।’

দর্শনার্থী প্রবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

এদিকে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের পর দর্শনার্থীদের প্রবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। বুধবার সকালে কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি কাছারিবাড়ির প্রধান ফটকের সামনে লাগিয়ে দেওয়া হয়।

কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে দুর্বৃত্তরা কাছারিবাড়িতে ঢুকে মিলনায়তনসহ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় এবং কর্মচারীদের মারধর করে। এমন পরিস্থিতিতে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর থেকে কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ রাখার জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ সকালে বিজ্ঞপ্তিটি লিখে কাছারিবাড়ির প্রধান ফটকের সামনে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকলেও ভেতরে তাঁদের দৈনন্দিন কার্যক্রম চলমান থাকবে। অবস্থার উন্নতি হলে আবার আগের মতো দর্শনার্থী প্রবেশের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।

ভাঙচুরের শিকার রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি মিলনায়তনের দরজা। মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক স ট ড য় ন হ ব ব র রহম ন রব ন দ র ক ছ র ব ড় প রথম আল ক র ঘটন য় র জন য প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

হোটেল ডোরচেস্টারে ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক দুপুরে

যুক্তরাজ্য সফররত প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। 

আজ ১৩ জুন (শুক্রবার) লন্ডন সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা থেকে ৪টা) তাদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকের বিষয়ে দুদিন আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, এই বৈঠকের কোনো ফরমেট নেই। যেহেতু তারেক রহমান বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতা, তাই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মিটিংটি হবে।

শফিকুল আলম বলেন, “দুজনের আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনের দিনক্ষণ, সংস্কার ও জুলাই চার্টারসহ যে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।”

এদিকে, মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ১৩ তারিখ ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টাইমে এই সময়টা দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকের ভেন্যু সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “লন্ডনে যে হোটেলটিতে (হোটেল ডোরচেস্টার) উনি (প্রধান উপদেষ্টা) আছেন সেটাই ভেন্যু। ওখানেই তার সঙ্গে ইংল্যান্ডে হাউজ অব কমন্সের ডেপুটি লিডার অব দ্য হাউজ দেখা করবেন তারেক রহমান সাহেবের বৈঠকের পরে। এরপরে অন্যান্য নেতা যারা আছেন তারা ওখানেই দেখা করবেন। ভেন্যু একটাই।”

চার দিনের সরকারি সফরে সোমবার (৯) সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে তিনি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময় কারামুক্ত হয়ে সপরিবারে লন্ডনে চলে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। আওয়ামী লীগের সময়ে তার অনুপস্থিতিতে পাঁচ মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়। দায়ের করা হয় শতাধিক মামলা। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। 

যেসব মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল, একে একে তার সবগুলোতেই খালাস পান খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। মুক্ত খালেদা এ বছরই চিকিৎসার জন্য লন্ডন ঘুরে এসেছেন। সেখানে ছেলের বাসাতেই তিনি ছিলেন। তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানও ১৭ বছর পর গত মে মাসে ঢাকা ঘুরে যান।

তবে তারেক রহমান কবে ফিরবেন, তার উত্তর বিএনপি নেতাদের কাছে নেই। তারা বলে আসছেন, ‘সময় হলেই’ তারেক রহমান ফিরবেন। আর দেশে না থাকলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তিনিই দল চালাচ্ছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিয়মিত বৈঠক করছেন।

ঢাকা/হাসান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ