নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর রাজধানীর সবুজবাগের বাইকদিয়া এলাকা থেকে জাকির হোসেন (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃতদেহের ছয়টি খণ্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় খণ্ডগুলো পাওয়া যায়। এর আগে হত্যায় সন্দেহভাজন আজহারুল ইসলামকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যে মেলে মৃতদেহের সন্ধান।

সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন আলী সমকালকে বলেন, হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জাকির হোসেনের কাছে কোরবানির গরু কেনার জন্য আড়াই লাখ টাকা ছিল। সেই তথ্য জানতেন আজহারুল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সেই টাকা লুটের জন্য হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। এতে গ্রেপ্তার ব্যক্তি ছাড়াও আরও কয়েকজন জড়িত ছিলেন। তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, সবুজবাগের বাইকদিয়া এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন জাকির। তিনি প্লাস্টিকের বোতলের ব্যবসা করতেন। রংমিস্ত্রি আজহারুলের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তারা একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। গত ৪ জুন রাতে মোবাইল ফোনে কল করে তাকে বাসায় ডেকে নেন অভিযুক্ত আজহারুল। সিসিটিভি ফুটেজে জাকিরকে ওই বাসায় যেতে দেখা যায়। এর পর থেকে তার খোঁজ মিলছিল না। সম্ভাব্য স্থানগুলোয় তার সন্ধান না পেয়ে গত ৫ জুন সবুজবাগ থানার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন স্বজনরা। তবে পুলিশও তার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানতে পারেনি। পরে কিছু তথ্যের ভিত্তিতে ১০ জুন অপহরণের মামলা করেন জাকিরের স্ত্রী রেখা বেগম। তার সন্দেহের সূত্র ধরে তদন্তে এগিয়ে যায় পুলিশ। আজহারুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

সবুজবাগ থানা পুলিশ জানায়, জাকিরের মাথায় প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করা হয়। আহত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর মৃতদেহের দুই হাত, দুই পা ও মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। শেষে মৃতদেহের ছয়টি খণ্ড বাইকদিয়া এলাকার একটি জঙ্গলে মাটিচাপা দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল আজহারুলের বাড়ি নাকি অন্য কোথাও তা জানার চেষ্টা চলছে। মৃতদেহের খণ্ডগুলো উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় হত য আজহ র ল

এছাড়াও পড়ুন:

নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।

আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ