নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর ব্যবসায়ীর ৬ খণ্ড মরদেহ উদ্ধার
Published: 12th, June 2025 GMT
নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর রাজধানীর সবুজবাগের বাইকদিয়া এলাকা থেকে জাকির হোসেন (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃতদেহের ছয়টি খণ্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় খণ্ডগুলো পাওয়া যায়। এর আগে হত্যায় সন্দেহভাজন আজহারুল ইসলামকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যে মেলে মৃতদেহের সন্ধান।
সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন আলী সমকালকে বলেন, হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জাকির হোসেনের কাছে কোরবানির গরু কেনার জন্য আড়াই লাখ টাকা ছিল। সেই তথ্য জানতেন আজহারুল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সেই টাকা লুটের জন্য হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। এতে গ্রেপ্তার ব্যক্তি ছাড়াও আরও কয়েকজন জড়িত ছিলেন। তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, সবুজবাগের বাইকদিয়া এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন জাকির। তিনি প্লাস্টিকের বোতলের ব্যবসা করতেন। রংমিস্ত্রি আজহারুলের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তারা একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। গত ৪ জুন রাতে মোবাইল ফোনে কল করে তাকে বাসায় ডেকে নেন অভিযুক্ত আজহারুল। সিসিটিভি ফুটেজে জাকিরকে ওই বাসায় যেতে দেখা যায়। এর পর থেকে তার খোঁজ মিলছিল না। সম্ভাব্য স্থানগুলোয় তার সন্ধান না পেয়ে গত ৫ জুন সবুজবাগ থানার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন স্বজনরা। তবে পুলিশও তার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানতে পারেনি। পরে কিছু তথ্যের ভিত্তিতে ১০ জুন অপহরণের মামলা করেন জাকিরের স্ত্রী রেখা বেগম। তার সন্দেহের সূত্র ধরে তদন্তে এগিয়ে যায় পুলিশ। আজহারুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
সবুজবাগ থানা পুলিশ জানায়, জাকিরের মাথায় প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করা হয়। আহত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর মৃতদেহের দুই হাত, দুই পা ও মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। শেষে মৃতদেহের ছয়টি খণ্ড বাইকদিয়া এলাকার একটি জঙ্গলে মাটিচাপা দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল আজহারুলের বাড়ি নাকি অন্য কোথাও তা জানার চেষ্টা চলছে। মৃতদেহের খণ্ডগুলো উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য় হত য আজহ র ল
এছাড়াও পড়ুন:
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।
আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।
চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।