Samakal:
2025-08-01@04:36:13 GMT

‘লবণরেখা’ অনতিক্রম্য নহে

Published: 12th, June 2025 GMT

‘লবণরেখা’ অনতিক্রম্য নহে

কোরবানির পশুর চামড়া লইয়া এই বৎসরও মৌসুমি ব্যবসায়ীগণ যেইভাবে বিপাকে পড়িয়াছেন, উহা হতাশাব্যঞ্জক। বুধবার সমকালে প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদনে যথার্থই বলা হইয়াছে, কাঁচা চামড়া ঘিরিয়া বেদনাদায়ক বাস্তবতা হইয়া উঠিয়াছে ‘লবণরেখা’। কারণ লবণ যুক্তকারী চামড়া ব্যবসায়ীগণ সরকারি প্রণোদনাসহ বিবিধ সহায়তা পাইলেও সংকটে পড়েন লবণমুক্ত চামড়া সংগ্রাহক মৌসুমি ব্যবসায়ীগণ। তৎসহিত কাঁচা চামড়া সংগ্রহকারী মাদ্রাসা ও এতিমখানার ন্যায় প্রতিষ্ঠানগুলিও প্রত্যাশিত দর হইতে বঞ্চিত হয়। প্রায় এক যুগ ধরিয়া চামড়া খাত যেই সংকট মোকাবিলা করিতেছে, এইবার সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করিলেও তদবস্থা হইতে উত্তরণ না ঘটা উদ্বেগজনক। 

সাম্প্রতিক বৎসরগুলির ন্যায় এইবার কোরবানির পূর্বেই সরকার চামড়ার দর ধার্য করিয়াছিল। বাস্তবে ধার্যকৃত দরে চামড়া বিক্রয় না হইবার কারণে সমস্যা বৃদ্ধি পাইয়াছে। তদুপরি ইহাও কহতব্য, সরকার মূলত লবণযুক্ত চামড়ার দরই নির্ধারণ করিয়া দিয়াছে।
মধ্য পর্যায়ের ব্যবসায়ীগণ কাঁচা চামড়া ক্রয় করিয়া লবণ প্রয়োগান্তে ট্যানারিতে বিক্রয় করিয়া থাকেন। সরকারের চামড়া ব্যবস্থাপনা যেইখানে কেবল তাহাদের স্বার্থ বিবেচনা করে, সেইখানে মৌসুমি ব্যবসায়ীগণের দিকে কে দৃষ্টিপাত করিবে? আমরা মনে করি, সাধারণ কোরবানিদাতা হইতে পাড়া-মহল্লার মৌসুমি ক্রেতা এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানার সংগৃহীত চামড়াও সরকারি ব্যবস্থাপনায় আসা উচিত। কারণ লবণহীন চামড়া ক্রয়-বিক্রয়ে যুক্ত এই গোষ্ঠীই বৃহৎ এবং প্রাথমিক উৎস। তাহারাই মহল্লায় গিয়া কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করিয়া থাকে।

আমরা মনে করি, কোরবানি পশুর চামড়ার দর নির্ধারণের বিষয়টি নূতন করিয়া ভাবিতে হইবে। চামড়ার সকল পর্যায়ের অংশীজনকে সরকারি প্রণোদনায় আনিতে হইলে কাঁচা চামড়া সংগ্রহকারীদিগকেও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করিতে হইবে। এইবার চামড়া সংরক্ষণে সরকার বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে লবণ বিতরণ করিয়াছে, যাহা সাধুবাদযোগ্য। ভবিষ্যতে উহার পরিসর বৃদ্ধি করিলে মৌসুমি ব্যবসায়ীগণের জন্য স্বস্তিদায়ক হইবে। কোরবানির পশুর চামড়া দরিদ্রের অধিকার হইলেও আমাদের অব্যবস্থাপনা ও চামড়া খাতের মান সংকটে তাহারা প্রতি বৎসর বঞ্চিত হইয়া আসিতেছে।
স্মরণে রাখিতে হইবে, বাংলাদেশ কোরবানির পশুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতিবেশী দেশ হইতে যদ্রূপ গরু আমদানির পথ বন্ধ হইয়াছে, তদ্রূপ কাঁচা চামড়া পাচার না হওয়াও স্বস্তির বিষয়। কিন্তু দুঃখজনক হইলেও সত্য, বেশ কয়েক বৎসর ধরিয়া পশুতে দেশীয় সক্ষমতা অর্জন বিষয়ে সুবিধা ভোগ করিলেও চামড়ার বাজার ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আমরা গড়িয়া তুলিতে পারি নাই। এমনকি প্রত্যাশিত দাম না পাইয়া কোরবানির পশুর চামড়া ভাগাড়ে ফেলিবার অঘটনও ঘটিয়াছে। এই সংকট হইতে উত্তরণে চামড়া কারবারিদের দিকে দৃষ্টি দিতেই হইবে।

আমাদের চামড়ার উৎপাদন বৃদ্ধি পাইলেও যেইভাবে উহার রপ্তানি ক্রমহ্রাসমান, তাহাও কম উদ্বেগজনক নহে। এমনকি চামড়াজাত পণ্য তৈরির দেশীয় চাহিদা পূরণে চামড়া আমদানি করিতে হয়। যথেষ্ট দেশীয় চামড়া থাকা সত্ত্বেও আমদানি করিবার কারণ হইল আমাদের চামড়াশিল্প আন্তর্জাতিক মান ও বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করিতে পারে নাই। চামড়ার হৃতগৌরব ফেরাইতে প্রথমত এলডব্লিউজি সনদ অর্জন করিতে হইবে। তজ্জন্য জরুরি ভিত্তিতে সাভারে অবস্থিত ট্যানারি শিল্পের বর্জ্য শোধনাগার বাস্তবায়নের বিকল্প নাই। রাজধানীর হাজারীবাগ হইতে সাভারে চামড়াশিল্প স্থানান্তরের পরও দুরবস্থা দূরীভূত হয় নাই, তদ্বিষয়ে মনোযোগ বৃদ্ধি করিতে হইবে। চামড়া মূল্যবান হইলেও এবং দেশ-বিদেশে ইহার ব্যাপক চাহিদার পরও কোরবানির পশুর চামড়াবিষয়ক সংকট প্রলম্বিত হইতে পারে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় গণ ক রব ন র প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ