আসামের মুখ্যমন্ত্রী এনআরসি মানতে চাইছেন না, তবে নথিপত্রবিহীন বিদেশিদের পুশ ব্যাক করতে চাইছেন
Published: 13th, June 2025 GMT
ভারতের আসামের বিজেপি–দলীয় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জি মানতে চাইছেন না। তবে রাজ্যটিতে নথিপত্রবিহীন বসবাসকারী বিদেশিদের ঠেলে পাঠাতে (পুশ ব্যাক) চান। সেই লক্ষ্যে তাঁর সরকার আসামজুড়ে কাজও শুরু করেছে।
গত বুধবার আসামের দারাং জেলায় এক সভায় হিমন্ত বিশ্বশর্মা এ কথাগুলো বলেছেন। তিনি বলেন, আসাম সরকারের নীতি হলো, এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জিতে নাম থাকলেও বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সমস্যা হবে না। তবে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হলে তাঁদের পুশ ব্যাক করা হবে।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, যেভাবে আসামে এনআরসি করা হয়েছে, তাতে সন্দেহের অবকাশ আছে। তাই এই এনআরসি আসামের কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব নির্ধারণের জন্য একমাত্র নথি হতে পারে না।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট এনআরসি হালনাগাদ করা হয়েছিল। সেই সময় ১৯ লাখের বেশি নাগরিকের আবেদন বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু তখন তা ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত হয়নি।
তাই হিমন্ত বিশ্বশর্মার দাবি, বিতর্কিত ওই নথিগুলো সরকারি বৈধতা ছাড়াই রয়ে গেছে। দেখা গেছে, অনেক মানুষ বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বিভিন্ন উপায়ে নাম নথিভুক্ত করেছে। তাই কর্তৃপক্ষ যদি নিশ্চিত হয় যে এই সব ব্যক্তি অবৈধভাবে নথিভুক্ত হয়েছে, তখন তাদের পুশ ব্যাক করে ফেরত পাঠানো হবে।
বিজেপির এই মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত মাস থেকে আসামজুড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী ‘বিদেশিদের’ চিহ্নিত করে আটক করা হচ্ছে। তাদের অনেককে পুশ ব্যাক করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে গ্রহণ না করায় তাদের অনেকে ফিরে এসেছে।
গত সোমবার (৯ জুন) আসামের বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে বিদেশি শনাক্তকরণ এবং ফেরত পাঠানো নিয়ে কথা বলেছিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তখন তিনি বলেছিলেন, আসাম সরকার ১৯৫০ সালের অভিবাসী আইন (আসাম থেকে বহিষ্কার আইন) বাস্তবায়ন করবে। এই আইনে জেলা কমিশনারদের নথিপত্রবিহীন অভিবাসী শনাক্ত করে তাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই জন্য আদালতের অনুমতি লাগবে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প শ ব য ক কর আস ম র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আয়কর রিটার্নে ভুল হলে কীভাবে ঠিক করবেন
বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমায় ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, ভুল হতেই পারে। করের হিসাবেই বেশি ভুল হয়। কর রেয়াতের হিসাবেও ভুল করেন অনেক করদাতা। এ ছাড়া করদাতারা এমনিতেই আয়কর নিয়ে ভয় ও শঙ্কায় থাকেন।
যদি কোনো কারণে রিটার্ন ভুল হয়ে যায়, তাহলে আপনার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না। আপনি রিটার্ন জমার পরও তা সংশোধন করতে পারবেন। দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
এবার দেখা যাক, কীভাবে রিটার্নের ভুল সংশোধন করবেন।
তিন ভুল সংশোধন করা যাবে
রিটার্নে তিন ধরনের ভুল সংশোধন করা যাবে। রিটার্ন দাখিলের পর যদি করদাতার কাছে প্রতীয়মান হয় যে তাঁর প্রদেয় কর সঠিকভাবে পরিগণিত হয়নি বা সঠিক অঙ্কে পরিশোধিত হয়নি, তাহলে তিনি সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। যেসব ভুল সংশোধন করা যাবে, তা হলো—১. প্রদর্শিত আয়, ২. দাবি করা কর অব্যাহতি বা ক্রেডিট ও ৩. অন্য যেকোনো যৌক্তিক কারণে ভুল।
যাঁরা ভুল সংশোধন করতে পারবেন না
রিটার্নে তিন ধরনের কারণে ভুল সংশোধন করা যাবে না। এগুলো হলো—১. রিটার্ন দাখিল করার তারিখ থেকে ১৮০ দিন শেষ হওয়ার পর, ২. সংশোধিত রিটার্ন প্রথমবার দাখিলের পর ও ৩. মূল রিটার্নটি নিরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর।
অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন
করদাতাদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন জমার সুবিধা চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সংশোধন অপশন ব্যবহার করতে হবে। সংশোধনী রিটার্নে যদি করের পরিমাণ বাড়ে, তাহলে নিয়ম অনুসারে বাড়তি করসহ জরিমানা দিতে হবে।
যেসব করদাতা অনলাইনে মূল আয়কর রিটার্ন দাখিলের পর ভুলত্রুটির কারণে অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে চান, তাঁদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত আয়কর রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু আছে। যাঁরা সংশোধন অপশন ব্যবহারের জন্য অনলাইনে প্রবেশ করবেন, তাঁদের অবশ্যই সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
আয়কর দিবস–পরবর্তী সময়েও বছরব্যাপী অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সুবিধাও চালু আছে।
সরাসরি রিটার্ন দাখিল
আয়কর আইনে কর কার্যালয়ে গিয়েও ভুল সংশোধনী রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে কোনো করদাতা রিটার্ন দেওয়ার পর যদি দেখেন যে অনিচ্ছাকৃত ভুলে রিটার্নে কম আয় দেখিয়েছেন, কম কর পরিশোধ করেছেন কিংবা বেশি কর রেয়াত, কর অব্যাহতি বা অন্য কোনো কারণে কম কর পরিশোধ করেছেন। হিসাবের ভুলেও এমন হতে পারে। তাহলে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে এই রিটার্ন জমা দিতে হয়।
আপনি ভুল সংশোধনী রিটার্ন জমার পর উপকর কমিশনার যদি সন্তুষ্ট হন যে সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে, তাহলে তিনি রিটার্নটি গ্রহণ করবেন। প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ দেবেন।