ভারতের আসাম রাজ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রুখতে দুষ্কৃতিকারীদের দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
হনুমান মন্দিরে গোমাংস ফেলাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অশান্তি চরম আকার নিয়েছে আসমের ধুবরি এলাকায়। শুক্রবার ওই এলাকা পরিদর্শন করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
এরইপরই এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “ধুবরিতে গিয়েছিলাম। নিরাপত্তাবাহিনীকে আমাদের মন্দির, নামঘর ও পবিত্র স্থানগুলোকে রক্ষায় জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছি। যারা ধুবরির হনুমান মন্দিরের গোমাংস ফেলে এসেছে তাদের কোনোভাবে রেহাই দেওয়া হবে না।”
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “একটি বিশেষ গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে যাদের লক্ষ্য আমাদের মন্দিরগুলো ধ্বংস করা। আমরা দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ জারি করেছি।”
পাশাপাশি আরও একটি পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “এবার ঈদে কিছু অসামাজিক লোক ধুবরির হনুমান মন্দিরে গোমাংস ফেলার মতো ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় অপরাধ করেছে। পরবর্তী ঈদে যদি প্রয়োজন পড়ে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মন্দির পাহারা দেব।”
উল্লেখ্য, ধুবরিতে সাম্প্রদায়িক হিংসার সূত্রপাত গত রবিবার। শহরের এক মন্দিরে গোমাংস ছুড়ে ফেলার ঘটনায় রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। রাস্তায় নামে স্থানীয় জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে হয়। মঙ্গলবার থেকে অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিকের দিকে রয়েছে।
ধুবরির ডেপুটি কমিশনার দিবাকর নাথ বলেন, “শহরের পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে। অশান্তি রুখতে সংবেদনশীল এলাকায় শান্তিরক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র পর স থ ত মন দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’