Prothomalo:
2025-06-15@04:29:49 GMT

জীবন বাঁচাতে রক্ত দিন

Published: 14th, June 2025 GMT

বাংলাদেশ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন ২০০২ অনুসারে রক্তদাতার বয়সের সীমারেখা হচ্ছে ১৮ থেকে ৬০ বছর। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে ৬০ শতাংশ জনগোষ্ঠী প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বাস্থ্যবান; ১৮ থেকে ৬৬ বছর বয়সের সীমারেখার মধ্যে সে দেশের মানুষকে রক্তদাতা হিসেবে গণ্য করা হয় বং তাঁদের মধ্যে ১০ শতাংশ লোক রক্তদানে অভ্যস্ত। সুইজারল্যান্ডসহ উন্নত বিশ্বের আরও অন্যান্য দেশেও বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়।

অনুন্নত বিশ্বে এ রক্তদাতার হার ১ ভাগের কম। বাংলাদেশে এ রক্তদানের সংক্ষেপ চিত্র হচ্ছে, প্রতিবছর বিভিন্ন হাসপাতালের প্রয়োজন ১০ লাখ ইউনিট এবং স্বাস্থ্যবান সক্ষম নিরাপদ রক্তদাতাদের থেকে সংগৃহীত হয় ৪ লাখ ৫০ হাজার ইউনিট।

সাধারণত অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ, যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছর, যাঁরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, যাঁদের কোনো কঠিন রোগ নেই এবং যাঁরা কোনো মারাত্মক ব্যাধি অন্যের দেহে সঞ্চালনের আশঙ্কা বহন করেন না, বিশেষ করে এইচআইভি ভাইরাস; তাঁদের রক্তদাতা হিসেবে উপযোগী বলে গণ্য করা হয়।

রক্তদাতা হওয়া উচিত স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ও বিনা মূল্যে জীবন রক্ষাকারী মহাকল্যাণকামী দানের প্রতি আস্থাশীল। বিনা মূল্যে দানের রক্ত, অর্থের মাধ্যমে কেনা রক্তের চেয়ে অনেক নিরাপদ। বিভিন্ন দেশে রক্ত পরিসঞ্চালন সেবায় রক্তদাতা নির্বাচনে রক্তদাতা ও গ্রহীতার নিরাপত্তা বিধানে আইন প্রণীত হয়েছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ বছর বয়সী মানুষকে রক্তদাতা হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং ডেনমার্কসহ কিছু দেশে ৭০ বছর বয়সেও রক্তদাতা নির্বাচিত হন, কিছু দেশ মা–বাবার সম্মতি ব্যতিরেকে ১৬ বছর বয়সী মানুষকেও রক্তদাতা হিসেবে নির্বাচিত করে।

রক্তের শিরা ছিদ্রকরণ (ভেনিসেকশন) পদ্ধতির একটি চিকিৎসা আইনসম্মত বিধান থাকা উচিত। একজন রক্তদাতা রক্তদানের পর অসুস্থ হলে রক্তদাতা নিজে বা তার নিকটাত্মীয়রা রক্তদানের কারণে অসুস্থ হয়েছেন বলে একটি বিরূপ ধারণার জন্ম নিতে পারে বলেই একজন সক্ষম রক্তদাতা অবশ্যই ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে এবং তাদের এমন কোনো অসুস্থতা থাকবে না যাতে সে সাধারণ রক্তদাতা হিসেবে নিগৃহীত হতে পারে। যেমন রক্তশূন্যতা, যক্ষ্মা, ক্যানসার, স্ট্রোক, এপিলেপসি, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, কার্ডিয়াক, রেসপিরেটরি অথবা রেনাল ডিজিজ। উচ্চ রক্তচাপের ব্যক্তিদের রক্তদাতা ও রক্ত সংগ্রহকারী কর্তৃপক্ষ উভয়েই নির্দ্বিধায় বলতে পারে যে রক্তদানের মাধ্যমে উভয় পক্ষই একটি বিপদমুক্ত মহৎ কাজ করছে।

রক্ত সংগ্রহকারী কর্তৃপক্ষ রক্তদানে ইচ্ছুক লোকজনের মাঝে রক্তদানের তথ্যবহুল কাগজপত্র সরবরাহ করলে এ রকম একটি কঠিন কাজ অনেক সহজ হতে পারে। স্বেচ্ছায় রক্তদাতারা বোনম্যারো দানের জন্য অত্যন্ত উপযোগী, সে জন্য অনেক রক্ত সংগ্রহকারী কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে অনেক রেকর্ড সংরক্ষণ করে ম্যারোদাতা নিযুক্ত করতে সহায়তা করে। বিশ্ব মেরুডোনারস অ্যাসোসিয়েশনের (Buskard,1991) বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায় যে প্রায় চার লাখ বোনম্যারো ডোনার তাঁদের কাছে মজুত আছে, যাঁদের এইচএলএ প্রকারভেদও সম্পন্ন করা আছে।

প্রতিটি রক্তদান ও সংগ্রহের সামগ্রিক তথ্য রেকর্ড করা এবং বছরের পর বছর সংরক্ষণ করা উচিত। পূর্ববর্তী রক্তদানের বিভিন্ন তথ্য যেমন রক্তের গ্রুপ রক্তদানে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার তথ্য, অণুজীব অ্যান্টিবডি উপস্থিতি, হঠাৎ বেহুঁশ বা পড়ে যাওয়ার ইতিহাস পরবর্তী সেশনের রক্তদানে অনেক সহায়তা করে। চলতি ও পূর্ববর্তী রক্তদানের বিভিন্ন তথ্য–সংবলিত বিশালসংখ্যক রক্তদাতার প্যানেল কম্পিউটারে সংগ্রহ করা বর্তমানকালের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

সমাজের সব স্তরের, সব ধর্মের, সব পেশার লোকজনকে আহ্বান জানাচ্ছি—
১.

১৮ থেকে ৬০ বছর বয়স্ক সব সুস্থ নারী-পুরুষ, যাঁদের ওজন ১০০ পাউন্ড বা তার বেশি, তাঁরা প্রতি চার মাস অন্তর নিয়মিত রক্তদান করুন।
২. পরিচিতজনদের রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করুন।
৩. স্বেচ্ছা রক্তদাতা তৈরির আয়োজনে সক্রিয় সহযোগিতা করুন।
৪. স্ক্রিনিং ছাড়া রক্ত নেবেন না, এমনকি আপনজনের হলেও নয়; কারণ তার রক্তেও সুপ্ত থাকতে পারে সংক্রামক ঘাতক ব্যাধির জীবাণু।
৫. কখনো পেশাদার রক্তদাতার রক্ত কিনবেন না।
৬. রক্তদানে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না এবং বোনম্যারো নতুন রক্তকণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়।
৭. রক্তদান জীবনদান, তাই নিয়মিত রক্তদানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

পরিবেশ বাঁচাতে বনায়ন যেমন পূর্বশর্ত। জীবন বাঁচাতে তেমনি দরকার নিরাপদ রক্ত।

ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ। উপদেষ্টা, ব্লাড ট্রান্সফিউশন সোসাইটি অব বাংলাদেশ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর বয়স ন রক ত ১৮ থ ক বছর ব র বয়স

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি

চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনজন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। করোনার কারণে ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। এ ছাড়া আজ শনিবার নতুন করে আরও একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সরকারিভাবে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯ জনে।

জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে আজ দুজন এবং গতকাল শুক্রবার একজন রোগী বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালটিকে ইতিমধ্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ২০ শয্যার আইসোলেশন কেন্দ্র ও ৫ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আকরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, করোনা নিয়ে ইতিমধ্যে তিনজন রোগী ভর্তি হয়েছেন। আরও একজন রোগী আসবেন বলে যোগাযোগ করেছেন। করোনার পাশাপাশি তাঁরা আগে থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত। তবে তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। চিকিৎসার সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আপাতত একটি আইসিইউ ভেন্টিলেশন শয্যা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল থেকে জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জেনারেল হাসপাতালে বিদ্যমান আইসিইউ শয্যাগুলোর মেরামতও চলমান রয়েছে বলে তত্ত্বাবধায়ক জানান।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে জেনারেল হাসপাতালকে করোনার বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র ঘোষণা করা হয়। ওই বছরই করোনো রোগীদের সেবায় হাসপাতালটিতে প্রথমে ১০টি আইসিইউ শয্যা দেওয়া হয়। পরের বছর যুক্ত করা হয় আরও আটটি আইসিইউ শয্যা। কিন্তু শয্যাগুলো বর্তমানে নানাভাবে ত্রুটিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রায় সবগুলোর ভেন্টিলেশনই বিকল।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরান অনড়, ইসরায়েল কঠোর
  • ইরানে নিরাপদে আছেন ৬৬ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী
  • নীরব ভালোবাসার আরেক নাম
  • নারীবাদের ছদ্মবেশে ভারত যখন যুদ্ধ চালায়
  • কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত ৪
  • একজন মার্করাম, একটি সেঞ্চুরি এবং ২৭ বছর পর একটি ট্রফি
  • বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে নতুন ভর্তি ১০১ জন
  • ঝালকাঠিতে দূরপাল্লার বাস-পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে দুজন নিহত
  • চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি