যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় গুলি করে এক আইনপ্রণেতা ও তাঁর স্বামীকে হত্যা, আহত আরও দুজন
Published: 15th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে স্থানীয় সময় শনিবার ভোরে বন্দুকধারীর গুলিতে একজন নারী আইনপ্রণেতা ও তাঁর স্বামী নিহত হয়েছেন। একই বন্দুকধারীর হামলায় আরেকজন আইনপ্রণেতা ও তাঁর স্ত্রী আহত হয়েছেন।
অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজ এ ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছেন। বন্দুকধারী পুলিশের পোশাকে ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
নিহত আইনপ্রণেতার নাম মেলিসা হর্টম্যান। তিনি ডেমোক্র্যাট দলের রাজনীতিক। তিনি মিনেসোটার সাবেক স্পিকার ছিলেন। তাঁর স্বামীর নাম মার্ক। তাঁরা দুজন মিনিয়াপোলিসের পাশে নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বলে জানান গভর্নর টিম ওয়ালজ।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সিনেটর জন হফম্যান ও তাঁর স্ত্রী ইভেট। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকদের আশা, তাঁরা হয়তো বেঁচে যাবেন।
টিম ওয়ালজ সাংবাদিকদের বলেন, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক সহিংসতা। তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আলোচনা আমাদের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। মতের পার্থক্য ঘোচাতে আমরা সহিংসতা বা অস্ত্রের ব্যবহার করি না।’
পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজন বন্দুককারী প্রথমে হফম্যান দম্পতিকে গুলি করে। এর ৯০ মিনিটের মধ্যে হর্টম্যান দম্পতির বাড়িতেও একই ঘটনা ঘটানো হয়। পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির পর বন্দুকধারী পালিয়ে যায়। এখন তাকে খুঁজে বের করতে বড় অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
বন্দুকধারীর হামলায় আইনপ্রণেতা নিহতের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘মিনেসোটার ভয়াবহ গুলির ঘটনা সম্পর্কে আমাকে জানানো হয়েছে। আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।’
এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এমন ভয়ংকর সহিংসতা যুক্তরাষ্ট্রে সহ্য করা হবে না। মিনেসোটার মানুষদের জন্য প্রার্থনা রইল, তারা সত্যিই দুর্দান্ত।’
এমন এক সময়ে এ ঘটনা ঘটল, যখন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজন খুব তীব্র হয়ে উঠেছে। ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে শনিবার সকাল থেকে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আজ বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য (এমইপি) মুনির সাতোরির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিনিধিদলকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেছি। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে, রমজানের ঠিক আগে।’ তিনি উল্লেখ করেন, জনসাধারণ, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নির্বাচনী উৎসাহ বাড়ছে। কারণ, দীর্ঘদিন পর কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশকের বেশি সময় পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন আবার শুরু হয়েছে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর।’ তিনি বলেন, কিছু শক্তি এখনো নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, তবে অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, তরুণ ভোটাররা এবার রেকর্ড সংখ্যায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। কারণ, ১৫ বছরের বেশি সময় পর অনেকেই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সূচনা বয়ে আনবে। এটি আমাদের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে—জাতির জন্য এক নতুন যাত্রা।’
ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ও ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সমর্থন ও চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেন।
আগামী নির্বাচন বাংলাদেশে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা। এক আইনপ্রণেতা প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সরকারের গত ১৪ মাসের ‘অসাধারণ’ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
এক ডাচ আইনপ্রণেতা মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ কতিপয় দেশের মধ্যে অন্যতম, যেখানে ‘ঘটনাগুলো সঠিক পথে এগোচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য বাড়তি তহবিল প্রদানের আহ্বান জানান।
বিশেষ করে সম্প্রতি অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্কুলগুলো আবার চালু করতে সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ শ্রম সংস্কারগুলো তুলে ধরে বলেন, এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশ–ইইউ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।