যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে স্থানীয় সময় শনিবার ভোরে বন্দুকধারীর গুলিতে একজন নারী আইনপ্রণেতা ও তাঁর স্বামী নিহত হয়েছেন। একই বন্দুকধারীর হামলায় আরেকজন আইনপ্রণেতা ও তাঁর স্ত্রী আহত হয়েছেন।

অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজ এ ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছেন। বন্দুকধারী পুলিশের পোশাকে ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

নিহত আইনপ্রণেতার নাম মেলিসা হর্টম্যান। তিনি ডেমোক্র্যাট দলের রাজনীতিক। তিনি মিনেসোটার সাবেক স্পিকার ছিলেন। তাঁর স্বামীর নাম মার্ক। তাঁরা দুজন মিনিয়াপোলিসের পাশে নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বলে জানান গভর্নর টিম ওয়ালজ।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সিনেটর জন হফম্যান ও তাঁর স্ত্রী ইভেট। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকদের আশা, তাঁরা হয়তো বেঁচে যাবেন।

টিম ওয়ালজ সাংবাদিকদের বলেন, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক সহিংসতা। তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আলোচনা আমাদের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। মতের পার্থক্য ঘোচাতে আমরা সহিংসতা বা অস্ত্রের ব্যবহার করি না।’

পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজন বন্দুককারী প্রথমে হফম্যান দম্পতিকে গুলি করে। এর ৯০ মিনিটের মধ্যে হর্টম্যান দম্পতির বাড়িতেও একই ঘটনা ঘটানো হয়। পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির পর বন্দুকধারী পালিয়ে যায়। এখন তাকে খুঁজে বের করতে বড় অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।

বন্দুকধারীর হামলায় আইনপ্রণেতা নিহতের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘মিনেসোটার ভয়াবহ গুলির ঘটনা সম্পর্কে আমাকে জানানো হয়েছে। আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।’

এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এমন ভয়ংকর সহিংসতা যুক্তরাষ্ট্রে সহ্য করা হবে না। মিনেসোটার মানুষদের জন্য প্রার্থনা রইল, তারা সত্যিই দুর্দান্ত।’

এমন এক সময়ে এ ঘটনা ঘটল, যখন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজন খুব তীব্র হয়ে উঠেছে। ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে শনিবার সকাল থেকে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ