কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে রাশেদুল ইসলাম নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো দুই শিক্ষার্থী।

গতকাল সোমবার ভোর ৫টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে বিত্তিপাড়া নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রাশেদুল আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

আহতরা হলেন, আল ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের আবু নাইম।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ আব্দুস সালাম।

সহপাঠীরা জানান, রাশেদ রোববার রাতের ট্রেনে জয়পুরহাট থেকে পোড়াদহ আসেন। পরে সেখান থেকে কুষ্টিয়ায় গিয়ে শ্যামলী পরিবহনের বাসে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। পথে বিত্তিপাড়ায় বাসটির সঙ্গে একটি ট্রাকের ধাক্কা লাগে। এসময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গিয়ে মুখে ও হাতে গুরুতর আঘাত পান তিনি।

পরে আহত অবস্থায় পরে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

রাশেদের সহপাঠী তানভির মাহমুদ জানান, রাশেদের মুখের চোয়াল দুই/তিন খণ্ড হয়ে গেছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত তার জ্ঞান ছিল। পরে প্রায় আধাঘণ্টা পর ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

একই বাসে মারাত্মক আহত হন আল ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক। তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হোসেন ইমাম বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। একজন মারা গেছে, আরেকজন শঙ্কামুক্ত। তবে ৪৮ ঘণ্টার আগে বলা যাচ্ছে না, চিকিৎসা চলছে। কেউ ক্লেইম না করায় আপাতত মরদেহের পোস্টমর্টেম করছি না।

অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রাশেদুলের মৃত্যু হয়েছে। গোসল ও দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তার মৃত্যুতে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ শোকাহত।

এদিকে রাশেদুলের মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এক শোকবার্তায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ