ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে ইবি শিক্ষার্থী নিহত
Published: 16th, June 2025 GMT
কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে রাশেদুল ইসলাম নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো দুই শিক্ষার্থী।
গতকাল সোমবার ভোর ৫টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে বিত্তিপাড়া নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাশেদুল আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন, আল ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের আবু নাইম।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.
সহপাঠীরা জানান, রাশেদ রোববার রাতের ট্রেনে জয়পুরহাট থেকে পোড়াদহ আসেন। পরে সেখান থেকে কুষ্টিয়ায় গিয়ে শ্যামলী পরিবহনের বাসে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। পথে বিত্তিপাড়ায় বাসটির সঙ্গে একটি ট্রাকের ধাক্কা লাগে। এসময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গিয়ে মুখে ও হাতে গুরুতর আঘাত পান তিনি।
পরে আহত অবস্থায় পরে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাশেদের সহপাঠী তানভির মাহমুদ জানান, রাশেদের মুখের চোয়াল দুই/তিন খণ্ড হয়ে গেছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত তার জ্ঞান ছিল। পরে প্রায় আধাঘণ্টা পর ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একই বাসে মারাত্মক আহত হন আল ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক। তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হোসেন ইমাম বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। একজন মারা গেছে, আরেকজন শঙ্কামুক্ত। তবে ৪৮ ঘণ্টার আগে বলা যাচ্ছে না, চিকিৎসা চলছে। কেউ ক্লেইম না করায় আপাতত মরদেহের পোস্টমর্টেম করছি না।
অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রাশেদুলের মৃত্যু হয়েছে। গোসল ও দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তার মৃত্যুতে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ শোকাহত।
এদিকে রাশেদুলের মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এক শোকবার্তায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।