ধাওয়া করে সুন্দরবনের ‘জলদস্যু’ ধরল জনতা, বন্দুক ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার
Published: 17th, June 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই ‘জলদস্যুকে’ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং থেকে তাদের আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় জনতা ধাওয়া করে একজনকে আটকের পর তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে আরেকজনকে আটক করে পুলিশ।
আটক দু’জনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুকসহ ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্যামনগর থানার ওসি মো.
আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন, আকবর আলীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অপরিচিত পাঁচ থেকে সাতজন সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে আসেন। তারা গন্তব্যে যাওয়ার জন্য মাইক্রোবাস বা ভাড়ায় মোটরসাইকেল সন্ধান করছিলেন। স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তাদের পরিচয়সহ সুন্দরবনে আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালানোর চেষ্টা করেন।
এ সময় বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে আটকের পর পুলিশে খবর দেন। শ্যামনগর থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালিয়ে নজীরকে আটক করেন। এ সময় তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক, গুলি ও দা উদ্ধার করা হয়।
আটক নজীর আলীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের ত্রাস জোনাব বাহিনীর সদস্যদের ‘ওপরে তুলে দেওয়া’ এবং সুন্দরবনে পাঠানোর কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। দিদারুল বলেন, তিনি নজীরের শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করাসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। তাঁর কাছে থাকা অন্য সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
শাহাজান, আতিয়ারসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে বেশি তৎপর নয়। নজীর ও তাঁর ছেলে আব্দুর রহিম, দিদারুলসহ উপজেলার মুন্সীগঞ্জ আটির উপর এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে জোনাব নামে সুন্দরবনে দস্যুতা করেন। পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মুন্সীগঞ্জের এক ব্যক্তির নৌকার জেলে হিসেবে দিদারুল বনে প্রবেশ করেন।
এ ঘটনায় শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক মুরসালিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে নজির আলী, তার ছেলে আব্দুর রহিম, দিদারুল ইসলাম ও বজরুল ইসলামের নাম উল্লেখ রয়েছে। অজ্ঞাতনামা দুই-তিনজনকে এতে আসামি করা হয়েছে।
অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবির মোল্যা বলেন, নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককসিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো একনলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন দরবন জলদস য আটক শ য মনগর থ ন র স ন দরবন বন দ ক
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাকিমপুর সীমান্ত থেকে আটক ১৫ বাংলাদেশিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তথ্য সহায়তার আহ্বান বিজিবির
ফিরিয়ে আনা বাংলাদেশিদের মধ্যে আটজন নারী, দুইজন পুরুষ ও পাঁচজন শিশু। তারা সাতক্ষীরা সদর, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার বাসিন্দা। তাদের রাতে সাতক্ষীরা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার হাকিমপুর সীমান্ত পার হওয়ার সময় বাংলাদেশি নাগরিকরা বিএসএফের কাছে আটক হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী গ্রামের মো. শাহীন সানা, তার স্ত্রী নিলুফা ও কন্যা শাহিনা সুলতানা, একই উপজেলার নওয়াবেকি গ্রামের মিস সুরাইয়া ইয়াসমিন, মোছা. রাবিয়া বেগম, বড়কুপট গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, লিপিকা খাতুন, নাজমা খাতুন, জিম তরফদার, বয়ারসিং গ্রামের মোছা. ফারহানা আক্তার ও তার ছেলে ফারহান ঢালী, উত্তর আটুলিয়া গ্রামের সেমিনা খাতুন, আশাশুনি উপজেলার হিজলিয়া গ্রামের রাবিয়া খাতুন ও রিয়াদ হাসান এবং সদর উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের ফুলমতি খাতুন।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামিনুল হক বলেন, “ভারতের হাকিমপুর সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা বিএসএফের হাতে আটক হন। পরবর্তীতে বিএসএফের আমুদিয়া কোম্পানি কমান্ডার বিকাশ কুমার সাতক্ষীরার তলুইগাছা কোম্পানি কমান্ডার আবুল কাশেমের নিকট পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এসব বাংলাদেশিদের হন্তান্তর করেন।”
তিনি আরো বলেন, “বিজিবি ফেরত আনা নারী-পুরুষ ও শিশুদের সাতক্ষীরা থানায় হন্তান্তর করেছে। পরিচয় যাচাই শেষে তাদের পরিবারের কাছে হন্তান্তর করা হবে।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ