ইসরায়েল ও ইরান একে অপরের ওপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশেই বেসামরিক মানুষজনের প্রাণহানি বাড়ছে। হামলা থেকে বাঁচতে রাজধানী তেহরান ছাড়তে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরান ছাড়ার আহ্বানের পর এ প্রবণতা আরও বেড়েছে। অন্যদিকে হামলা-পাল্টা হামলার শুরু থেকেই দিন-রাতের বেশির ভাগ সময় বাঙ্কারে অবস্থান করছেন ইসরায়েলিরা।

এএফপির যাচাইকৃত একটি ছবিতে দেখা গেছে, উত্তর দিকের তেহরানের একটি মহাসড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি এবং বিপরীত লেনে প্রায় কোনো যানবাহন নেই।

বিবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্পের বার্তার পর মঙ্গলবার তেহরান ছাড়ার প্রবণতা বেড়েছে। সোমবারও কেউ কেউ শহর ছেড়েছেন। যদিও অনেকে শহরেই থেকে গেছেন। অনেকের আবার তেহরান ছাড়ার সুযোগও নেই।

এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, আমার অনেক প্রতিবেশী তেহরান ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু আমি রয়ে গেছি। যাব কোথায়? আমার পুরো জীবন তেহরানে কেটেছে।

তবে সংকটকালে তেহরান ছেড়ে চলে যাওয়া মানুষের জন্য গ্রামাঞ্চলের মানুষ তাদের বাড়ি খুলে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার যাদের গাড়ি নেই, নিজ গাড়িতে করে তাদের দূরদূরান্তে পৌঁছে দিচ্ছেন।

যদিও সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত রাজধানী তেহরান ছাড়ার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এটি ‘শত্রুর মানসিক যুদ্ধ’ বা মনস্তাত্ত্বিক চাপের অংশ। কিছু অনলাইন ব্যবহারকারীও এই বার্তার পেছনে ‘ভুয়া আতঙ্ক’ ছড়ানোর কথা বলছেন। তারা বলছেন, তেহরান নিরাপদ। যদিও শহরে প্রতিদিনই ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটছে। 

এদিকে ইসরায়েলিরা হামলার প্রথম দিন ১৩ জুন থেকেই দিন-রাতের বেশির ভাগ সময় ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় (বাঙ্কার) অবস্থান করছেন। ইরানের হামলার আশঙ্কায় ইসরায়েলজুড়ে নিয়মিত সাইরেন বাজছে, মানুষ আতঙ্কে বাঙ্কারে ছুটছেন। এ অবস্থায় দেশটিতে স্বাভাবিক জনজীবন কার্যত থমকে গেছে।

ইরানের শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে বাঙ্কারগুলো ইসরায়েলিদের সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারছে কিনা– তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ফলে ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়ার পরও আতঙ্কে দিন পার করছেন ইসরায়েলিরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ইরানের হামলার পর বাঙ্কারের ভেতর আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হওয়ার চিত্র উঠে এসেছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শক্তপোক্ত দেয়াল ও ছাদ ইসরায়েলিদের মাথার ওপর ধসে পড়েছে। আতঙ্কিত লোকজন সাহায্যের জন্য দিগ্বিদিক ছুটছেন।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনী আগেই বেসামরিক ইসরায়েলিদের সতর্ক করে বলেছিল, তারা যেন দখলকৃত ভূখণ্ড (ইসরায়েল) পুরোপুরি ত্যাগ করে, ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসী হামলা চলাকালে বাঙ্কারগুলো তাদের রক্ষা করতে পারবে– এমন আশা যেন না করে তারা। ইরান এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর হোম ফ্রন্ট কমান্ড। তারা বলেছে, নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন না। 

তবে ইরান বলেছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা। ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় চালানো ইসরায়েলি হামলার জবাবে আরও প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে তেহরান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গুলিতে ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে গুলিতে অন্তত তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন পুলিশ সদস্য।

অঙ্গরাজ্যটির পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যারিস বুধবার সংবাদমাধ্যমকে হতাহতের এ তথ্য জানান।

ক্রিস্টোফার প্যারিসের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শাপিরো ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১১৫ মাইল পশ্চিমে নর্থ কোডোরাস টাউনশিপে ঘটনাস্থলে গেছেন।

কে বা কারা এ গুলিবর্ষণের পেছনে জড়িত, সে সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে ‘আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ’ বলে অভিহিত করেছেন।

পামেলা বন্ডি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য ফেডারেল এজেন্টরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ