প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেছেন, বিদেশগামী বাংলাদেশিদের ভিসা জটিলতার অন্যতম প্রধান কারণ হলো জাল সনদপত্র ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দেওয়ার মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। 

বুধবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাপানের শ্রম বাজার: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ  কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, আমাদের কর্মীরা ভাবে যে জাল সনদ এবং অদক্ষতা নিয়ে কোনভাবেই বিদেশে যেতে পারলেই হলো। ফলে অনেকগুলো দেশে একই সঙ্গে ভিসা জটিলতা হচ্ছে। জাপানের ভিসা আবেদনের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে না, এটার একটা কারণ ভুয়া সার্টিফিকেট, ভুয়া ব্যাংক একাউন্ট। এইজন্য এখন শাস্তির ব্যবস্থা জরুরি। আমাদের স্ট্যান্ডার্ড কমিটি আছে, আমরা নিয়মিত এই বিষয় নিয়ে বসছি।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের নীতিগত উপদেষ্টা জিয়া হাসান বলেন, আগে জাপান দূতাবাস সরাসরি বাংলাদেশি আবেদনকারীদের ভিসা দিতো। কিন্তু জাল কাগজপত্র দাখিলের একটি ঘটনা ধরা পড়ার পর সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, এখন জাপানের ভিসা VFS-এর মাধ্যমে ইস্যু করা হয়, তবে আমরাও দূতাবাসের তুলনায় এটা খুব ধীরগতির।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী পর্যটক ও অভিবাসনপ্রত্যাশী কর্মীরা এখন জনপ্রিয় গন্তব্যগুলোতে ভিসা পেতে নানা ধরনের সমস্যার মুখে পড়ছেন।
 
এতে শুধু চিকিৎসা, ব্যবসা ও বিনোদন ভ্রমণকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না, একইসঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও ওমানের মতো দেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগও কমে গেছে বলে জানান তারা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ