ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্ম ১৯৭১ সালে। তারও ১৫ বছর পর ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ ওয়ানডে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশের নাম। এশিয়া কাপের ওই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান।

সময় গড়িয়ে এখন ২০২৫। ক্রিকেটের সব অলিগলি পেরিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে অঙ্গনে বড় এক নাম। সত্যিই কী বড় নাম? সেটা নিয়েই বিরাট প্রশ্ন উঠতে পারে। যদি বড় নাম হয়ে-ই থাকে তাহলে শেষ সাত ওয়ানডেতে কোনো জয় নেই কেন? প্রত্যেক পরাজয়ের পর উত্তর আসে একটাই, ‘‘আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি।’’

বলা হয়, ওয়ানডে ক্রিকেট বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যের ফরম্যাট। ক্রিকেটাররা পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটটা বোঝেন ভালো। ভালো খেলেন। যখনই নিজেদের অস্তিত্বের সংকট কিংবা খারাপ সময় এসেছে তখনই ওয়ানডে ক্রিকেট ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই পছন্দের ফরম্যাটেই এখন ব্যাকগিয়ারে চলছে বাংলাদেশ। ফল হওয়া শেষ সাত ওয়ানডেতে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। মাঝের একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পণ্ড হয়েছিল। বাকি সবগুলোতেই অসহায় আত্মসমর্পণ। ভুলে স্তুপে আটকে নিজেদের রীতিমত প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন ক্রিকেটাররা।

আরো পড়ুন:

অপেক্ষার অবসান, নাকি আরও বাড়বে?

তিন উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে আমিনুলের ব্যাখ্যা

অথচ শেষ দশ বছরেও ওয়ানডেতে এমন অবস্থা কাটেনি বাংলাদেশের। ফল হওয়া ম্যাচগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে একই বছরের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১২ ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। যার নয়টিই ঘরের মাঠে। তিনটি দেশের বাইরে। এরপর ওয়ানডে ক্রিকেটে এমন পরাজয়ের মিছিল আর ছিল না বাংলাদেশের। এতোটা খারাপ অবস্থাও কখনো আসেনি।

২০১৫ সালে বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের পালাবদল শুরু হয়। ভয়-ডরহীন ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট গড়ে উঠে। সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার হাত ধরে ওয়ানডেতে সাফল্যের রসদ খুঁজে পেয়েছিল বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে। প্রতিপক্ষের সমীহ আদায় করে নেওয়া, নিজেদের পায়ের নিচের মাটি শক্ত হওয়াতে বলে কয়ে বাংলাদেশ হারাতো পারতো যে কোনো দলকে।

শুধু দ্বিপক্ষীয় সিরিজই নয়, বাংলাদেশ বৈশ্বিক ও মহাদেশীয় প্রতিযোগিতাতেও ভালো ক্রিকেট খেলেছে। এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালও খেলেছে।

অথচ সময়ের চোরাবালির স্রোতে এখন পুরো দলটাই ওলটপালট। এমন না যে, বাংলাদেশ সব ম্যাচই জিতত এই সময়ে। তবে জয়ের ধারাবাহিকতা থাকত। আবার পরাজয়ও ছিল। লম্বা সময়ে সময়ে টানা তিন ম্যাচ হেরেছে পাঁচবার, টানা চার ম্যাচ দুইবার, টানা পাঁচ ও ছয় ম্যাচ একবার করে।

২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে হারিয়ে শুরু করেছিল। এরপর ধর্মশালায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, চেন্নাইয়ে নিউ জিল্যান্ডের, পুনেতে ভারতের, ওয়াংখেড়েতে দক্ষিণ আফ্রিকার, ইডেনে নেদারল্যান্ডস ও পাকিস্তানের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ার কাছেও হেরেছিল দল। মাঝে কেবল জিতেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বিশ্বকাপে টানা ছয় ম্যাচ হারের পর এবারই সংখ্যাটাকে সাতে নিয়ে গেল বাংলাদেশ।

গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে শারজাহতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পায়। তৃতীয় ওয়ানডেতে আবার হার। এরপর পরাজয়ের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের কাছে হার। শেষ ম্যাচ ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। দলের যেই পারফরম্যান্স ছিল তাতে বাজি ধরার লোক থাকার কথা না। বৃষ্টি ‘বাঁচিয়ে’ দেয় বাংলাদেশকে। এরপর গতকাল কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চরম নাটকীয় পরাজয়। ৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিব্রতকর হারকে সঙ্গী করে বাংলাদেশ।

১৯৮৬ সালে ওয়ানডে অভিষেকের পর বাংলাদেশকে প্রথম জয়ের জন্য ২৩ ম্যাচ ও এক যুগ অপেক্ষা করতে হয়। ১৯৯৮ সালে কেনিয়াকে হারিয়ে ভারতের হায়দরাবাদে প্রথম জয় পায় বাংলাদেশ। মোহাম্মদ রফিক ছিলেন প্রথম ওয়ানডে জয়ের নায়ক।

দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে রফিক বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে দলটার মধ্যে ঐক্য নেই। একেবারে খাপছাড়া। এভাবে তো আপনি ম্যাচ জিততে পারবেন না। কোনোদিন বোলিং ভালো হচ্ছে না। কোনোদিন ব্যাটিং। আবার কোনোদিন দুটাই খারাপ। শুধু তো পিছিয়েই যাচ্ছেন। ভালো কোচ, নামি কোচ এনেও তো কিছু করা হচ্ছে না। অধিনায়ক পরিবর্তন করলেন। কোনো লাভ তো হলো না। এখানে ঘরোয়া ক্রিকেটকে দোষ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। খেলোয়াড়দের টিকে থাকতে হলে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হলে অনেক উন্নতি করতে হবে। বিশাল একটা গ্যাপ রয়ে গেছে।’’

পরাজয়ের মিছিল বাংলাদেশের জন্য নতুন না। ’৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে নর্দাম্পটনে হারানোর পর বাংলাদেশ টানা ৪৫ ম্যাচ জেতেনি। ৮ অক্টোবর ১৯৯৯ থেকে পরের জয়ের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ২০০৪ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত। দীর্ঘতম সেই পরাজয়ের মিছিল পেরিয়ে একটা সময়ে বাংলাদেশ ওয়ানডে দল চোখে চোখ রেখে বড় দলগুলোকেও হারিয়েছে। সুসময় আড়াল হয়েছে। এখন চলছে দুঃসময়। কলম্বোতেই একদিন পর দ্বিতীয় ওয়ানডে। মিরাজ অ্যান্ড কোং কি পারবে পরাজয়ের এই মিছিল আটকাতে? নাকি পরাজয়ের এই স্তুপ পাহাড়ে রূপ নেবে?

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প পর জয় র র জয় র অবস থ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি-এনসিপির পদ হারিয়ে মুনতাসির কেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাইকে দুষছেন

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি করে বিক্ষোভ করেছিলেন মুনতাসির মাহমুদ; তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠকের পদটি হারান তিনি। রেড ক্রিসেন্টের চাকরিটিও হারান। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন মুনতাসির। এদিকে মাহবুব দাবি করেছেন যে তাঁকে জড়িয়ে মনগড়া কথা বলছেন মুনতাসির।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে গতকাল রোববার দুপুরে মগবাজারে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করেন মুনতাসির। এরপর সন্ধ্যায়ই এনসিপি তাঁকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে আসলে কী ঘটছে, মুনতাসির কেন এনসিপি থেকে অব্যাহতি পেলেন, এখন কেন তিনি উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাইকে দুষছেন—এসব বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাতে জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর মুনতাসির রেড ক্রিসেন্টে উপপরিচালক পদে চাকরি পেয়েছিলেন। আর উপদেষ্টা মাহফুজের ভাই মাহবুব রেড ক্রিসেন্টের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রেড ক্রিসেন্টে মুনতাসির মাহমুদের চাকরিটি ছিল অস্থায়ী। কয়েক দিন ধরে তিনি রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন। এনসিপির পক্ষ থেকে নিষেধ করার পরও গতকাল তিনি সেখানে বিক্ষোভ করেন। ওই দিন রেড ক্রিসেন্টের বোর্ড সভায় তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।

রেড ক্রিসেন্টে মুনতাসির মাহমুদের চাকরিটি ছিল অস্থায়ী। কয়েক দিন ধরে তিনি সংস্থাটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন। এনসিপির নিষেধ শুনছিলেন না। এরপর রেড ক্রিসেন্ট তাঁকে চাকরিচ্যুত করে, এনসিপি দেয় অব্যাহতি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, বোর্ড সভায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব আলমও ছিলেন। সভার পর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে বের হতে গেলে তাঁকে অবরুদ্ধ করেন মুনতাসির মাহমুদের অনুসারীরা। দফায় দফায় এনসিপির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন মুনতাসিরকে ফোন করে রেড ক্রিসেন্টে আন্দোলন বন্ধ করে চলে যেতে অনুরোধ করতে থাকেন। আন্দোলন বন্ধ না করলেও সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাহবুবকে রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয় থেকে বের হতে দেন মুনতাসিরের অনুসারীরা। কিন্তু সংস্থার চেয়ারম্যান তখনো অবরুদ্ধ ছিলেন। পরে পুলিশ গিয়ে মুনতাসিরের অনুসারীদের ওপর চড়াও হয়।

এর মধ্যে সন্ধ্যায় মুনতাসিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও অব্যাহতির চিঠি ফেসবুকে প্রকাশ করে এনসিপি।

মুনতাসিরের অভিযোগ

গতকালের ওই ঘটনার পর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেন মুনতাসির। উপদেষ্টার ভাই কেন রেড ক্রিসেন্ট চেয়ারম্যানের পক্ষ নিলেন, এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘সে (মাহবুব) আমাকে সরাসরি হুমকি দিয়েছে, “আমি উপদেষ্টা মাহফুজের ভাই, তুই মুনতাসির কে? তোর চাকরি আমি খেয়ে দিব।” আমিও পাল্টা জবাব দিই। তখন সে চেয়ারম্যানের (রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান) কক্ষে ঢুকে ওসি এবং অন্যান্য পুলিশকে বলে, “আমি উপদেষ্টা মাহফুজের ভাই, আমি বলছি আপনারা এখনই মুনতাসিরকে গ্রেপ্তার করুন এবং বাকি সবাইকে মেরে সরিয়ে দিন।”’

অবশ্য পরে মাহবুব তাঁর কাছে ‘মাফ’ চেয়ে কিছু প্রতিশ্রুতি দেন বলে মুনতাসির দাবি করেন। তিনি লিখেছেন, ‘সে (মাহবুব) প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায় যে সে মাহফুজ ভাইকে বোঝাতে যাচ্ছে এবং আজকেই চেয়ারম্যান পদত্যাগ করবে। কিন্ত সে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স আসে। ডিসি আমাকে চাপ দেন এবং পরে পুলিশ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে আমাদের আহত করে। যা–ই হোক, জুলাইয়ের গাদ্দার, ভাই আমার আজ সফল হয়েছে! আসলেই আমার চাকরি খেয়ে দিছে, দল থেকে অব্যাহতি দেওয়াইছে এবং পুলিশ দিয়ে মাইর খাওয়াইছে, কত বিশাল ক্ষমতা তার। আমি আমার ভাইয়ের হেদায়েতের জন্য দোয়া করি।’

আসলেই আমার চাকরি খেয়ে দিছে, দল থেকে অব্যাহতি দেওয়াইছে এবং পুলিশ দিয়ে মাইর খাওয়াইছে, কত বিশাল ক্ষমতা তার। আমি আমার ভাইয়ের হেদায়েতের জন্য দোয়া করি।মুনতাসির মাহমুদ

আজ সোমবার বিকেলে মুনতাসির দুটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) কপিসহ আরেকটি পোস্ট দেন। দুটি জিডিই হাতিরঝিল থানায় করা। দুটি জিডিতেই বাদীর নামটি ঢেকে দিয়েছেন মুনতাসির। এর মধ্যে ৮ অক্টোবর করা জিডিতে ছয় ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা, গালাগালি ও হুমকির অভিযোগ করা হয়।

৯ অক্টোবর করা অন্য জিডিতে তিন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়, একজনের বিরুদ্ধে রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পর অফিসে এলে তাঁর অনুমতি না নিয়ে আরেকজন গোপনে তাঁর ভিডিও ধারণ করেন। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৭ অক্টোবর হাতিরঝিলের গাবতলা এলাকায় রিকশা দিয়ে যাওয়ার পথে তাঁকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়।

এই পোস্টের ক্যাপশনে মুনতাসির লিখেছেন, ‘অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত বা ব্যবস্থা না নিয়ে ভুক্তভোগীদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং পাল্টা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর পাঁয়তারা করছে! জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও কোন ফ্যাসিবাদের নির্দেশে এসব সাহস তারা দেখাচ্ছে এবং কারা প্রশাসন চালাচ্ছে?’

যোগাযোগ করা হলে এনসিপির নেতা মুনতাসির প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর যা বক্তব্য, তা ফেসবুক পোস্টেই রয়েছে।

উপদেষ্টার ভাই যা বলছেন

উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব আলম প্রথম আলোর জিজ্ঞাসায় বলেন, প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা না থাকার পরও ‘বিশেষ বিবেচনায়’ রেড ক্রিসেন্টের উপপরিচালক পদে চাকরি নিয়েছিলেন মুনতাসির। তিনি কয়েক দিন ধরে রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। এর মধ্যে গত শনিবার রাতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন মুনতাসির ও এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা মিতু (রেড ক্রিসেন্টের আরেক বোর্ড সদস্য)। নাহিদ তাঁদের আন্দোলনের পরিবর্তে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু মুনতাসির তারপরও বিক্ষোভ চালিয়ে যান।

রোববার রেড ক্রিসেন্টের বোর্ড সভায় মুনতাসিরের সদলবল ‘মব’ সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা হয় জানিয়ে মাহবুব আলম বলেন, ‘হঠাৎ বোর্ড সভায় ঢুকে মুনতাসির দুটি জিডির কপি দেখান, যেগুলো নিয়ে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। পরে তিনি চলে যান। এরপর বোর্ডের বেশির ভাগ সদস্যের সিদ্ধান্তে তাঁকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সভার পর মুনতাসিরের সঙ্গে আমার কথা হয়। সেখানে হুমকিধমকির মতো কিছু হয়নি। রেড ক্রিসেন্ট থেকে বেরোতে গেলে তাঁর সঙ্গে থাকা ছেলেরা আমার পথরোধ করে আধঘণ্টা আটকে রেখে জেরা করেন। তাঁরা ৬টা পর্যন্ত আমাকে অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অবশ্য পরে মুনতাসির এসে আমার কাছে ক্ষমা চান।’

অভিযোগ আছে, তিনি (মুনতাসির) রেড ক্রিসেন্টের নিয়মকানুন অনুযায়ী কাজ করেন না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি আমার সমর্থন চেয়েছিলেন। সেটা না করায় তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার নাম জড়িয়ে মনগড়া কথা বলছেন।মাহবুব আলম

মাহবুব আলম বলেন, হাতিরঝিল থানার ওসি ও তেজগাঁও জোনের এসি রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়ে গতকাল সারা দিন ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের ওপর কোনো বল প্রয়োগ করা হয়নি। তবে রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান বিভিন্ন মহলে কথা বলেছেন। পরে রমনার ডিসিও এসেছিলেন। তিনি (মাহবুব) চলে আসার পর বিক্ষোভকারীদের ওপর বল প্রয়োগ করা হয়ে থাকতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই।

কিছু না করে থাকলে মুনতাসির কেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন? প্রশ্নে মাহবুব বলেন, ‘অভিযোগ আছে, তিনি (মুনতাসির) রেড ক্রিসেন্টের নিয়মকানুন অনুযায়ী কাজ করেন না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি আমার সমর্থন চেয়েছিলেন। সেটা না করায় তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার নাম জড়িয়ে মনগড়া কথা বলছেন। তাঁর চাকরি যাওয়ার ক্ষেত্রে আমার কোনো হাত নেই। গতকালের ঘটনার সময় এনসিপির শৃঙ্খলা কমিটি, স্বাস্থ্য সেলসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে মুনতাসিরকে ফোন করে আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলা হয়। তিনি কারও কথাই শুনছিলেন না। পরে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এখানে আমার কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। আমি তাঁকে কোনো হুমকিও দিইনি।’

আরও পড়ুনদুপুরে রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ, সন্ধ্যায় এনসিপি থেকে অব্যাহতি১২ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকাপের আরও এক ম্যাচ বৃষ্টির পেটে
  • এবার বিপিএলে রেভেনিউ শেয়ারিং মডেল, ১৭ নভেম্বর ড্রাফট
  • নতুন বউ ঘরে রেখে মাঠে নেমেই সামির ৫ উইকেট
  • বাসে স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ, গ্রেপ্তার চালক কারাগারে
  • ডিভোর্সের পর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে এক ফ্রেমে মাহি!
  • ক্লাস না করে সরকারি কলেজশিক্ষকদের কর্মবিরতি
  • সায়েন্স ল্যাবের ব্লকেড কর্মসূচি তুলে নিলো ছাত্ররা
  • বাসে স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ, চালক আটক
  • রেলস্টেশনে ঝুঁকি নিয়ে ভিডিও করছেন পড়শী, এরপর...
  • চাকরি-এনসিপির পদ হারিয়ে মুনতাসির কেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাইকে দুষছেন