দশ বছরে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বাজে অবস্থা বাংলাদেশের
Published: 3rd, July 2025 GMT
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্ম ১৯৭১ সালে। তারও ১৫ বছর পর ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ ওয়ানডে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশের নাম। এশিয়া কাপের ওই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান।
সময় গড়িয়ে এখন ২০২৫। ক্রিকেটের সব অলিগলি পেরিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে অঙ্গনে বড় এক নাম। সত্যিই কী বড় নাম? সেটা নিয়েই বিরাট প্রশ্ন উঠতে পারে। যদি বড় নাম হয়ে-ই থাকে তাহলে শেষ সাত ওয়ানডেতে কোনো জয় নেই কেন? প্রত্যেক পরাজয়ের পর উত্তর আসে একটাই, ‘‘আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি।’’
বলা হয়, ওয়ানডে ক্রিকেট বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যের ফরম্যাট। ক্রিকেটাররা পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটটা বোঝেন ভালো। ভালো খেলেন। যখনই নিজেদের অস্তিত্বের সংকট কিংবা খারাপ সময় এসেছে তখনই ওয়ানডে ক্রিকেট ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই পছন্দের ফরম্যাটেই এখন ব্যাকগিয়ারে চলছে বাংলাদেশ। ফল হওয়া শেষ সাত ওয়ানডেতে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। মাঝের একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পণ্ড হয়েছিল। বাকি সবগুলোতেই অসহায় আত্মসমর্পণ। ভুলে স্তুপে আটকে নিজেদের রীতিমত প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন ক্রিকেটাররা।
আরো পড়ুন:
অপেক্ষার অবসান, নাকি আরও বাড়বে?
তিন উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে আমিনুলের ব্যাখ্যা
অথচ শেষ দশ বছরেও ওয়ানডেতে এমন অবস্থা কাটেনি বাংলাদেশের। ফল হওয়া ম্যাচগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে একই বছরের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১২ ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। যার নয়টিই ঘরের মাঠে। তিনটি দেশের বাইরে। এরপর ওয়ানডে ক্রিকেটে এমন পরাজয়ের মিছিল আর ছিল না বাংলাদেশের। এতোটা খারাপ অবস্থাও কখনো আসেনি।
২০১৫ সালে বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের পালাবদল শুরু হয়। ভয়-ডরহীন ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট গড়ে উঠে। সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার হাত ধরে ওয়ানডেতে সাফল্যের রসদ খুঁজে পেয়েছিল বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে। প্রতিপক্ষের সমীহ আদায় করে নেওয়া, নিজেদের পায়ের নিচের মাটি শক্ত হওয়াতে বলে কয়ে বাংলাদেশ হারাতো পারতো যে কোনো দলকে।
শুধু দ্বিপক্ষীয় সিরিজই নয়, বাংলাদেশ বৈশ্বিক ও মহাদেশীয় প্রতিযোগিতাতেও ভালো ক্রিকেট খেলেছে। এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালও খেলেছে।
অথচ সময়ের চোরাবালির স্রোতে এখন পুরো দলটাই ওলটপালট। এমন না যে, বাংলাদেশ সব ম্যাচই জিতত এই সময়ে। তবে জয়ের ধারাবাহিকতা থাকত। আবার পরাজয়ও ছিল। লম্বা সময়ে সময়ে টানা তিন ম্যাচ হেরেছে পাঁচবার, টানা চার ম্যাচ দুইবার, টানা পাঁচ ও ছয় ম্যাচ একবার করে।
২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে হারিয়ে শুরু করেছিল। এরপর ধর্মশালায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, চেন্নাইয়ে নিউ জিল্যান্ডের, পুনেতে ভারতের, ওয়াংখেড়েতে দক্ষিণ আফ্রিকার, ইডেনে নেদারল্যান্ডস ও পাকিস্তানের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ার কাছেও হেরেছিল দল। মাঝে কেবল জিতেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বিশ্বকাপে টানা ছয় ম্যাচ হারের পর এবারই সংখ্যাটাকে সাতে নিয়ে গেল বাংলাদেশ।
গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে শারজাহতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পায়। তৃতীয় ওয়ানডেতে আবার হার। এরপর পরাজয়ের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের কাছে হার। শেষ ম্যাচ ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। দলের যেই পারফরম্যান্স ছিল তাতে বাজি ধরার লোক থাকার কথা না। বৃষ্টি ‘বাঁচিয়ে’ দেয় বাংলাদেশকে। এরপর গতকাল কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চরম নাটকীয় পরাজয়। ৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিব্রতকর হারকে সঙ্গী করে বাংলাদেশ।
১৯৮৬ সালে ওয়ানডে অভিষেকের পর বাংলাদেশকে প্রথম জয়ের জন্য ২৩ ম্যাচ ও এক যুগ অপেক্ষা করতে হয়। ১৯৯৮ সালে কেনিয়াকে হারিয়ে ভারতের হায়দরাবাদে প্রথম জয় পায় বাংলাদেশ। মোহাম্মদ রফিক ছিলেন প্রথম ওয়ানডে জয়ের নায়ক।
দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে রফিক বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে দলটার মধ্যে ঐক্য নেই। একেবারে খাপছাড়া। এভাবে তো আপনি ম্যাচ জিততে পারবেন না। কোনোদিন বোলিং ভালো হচ্ছে না। কোনোদিন ব্যাটিং। আবার কোনোদিন দুটাই খারাপ। শুধু তো পিছিয়েই যাচ্ছেন। ভালো কোচ, নামি কোচ এনেও তো কিছু করা হচ্ছে না। অধিনায়ক পরিবর্তন করলেন। কোনো লাভ তো হলো না। এখানে ঘরোয়া ক্রিকেটকে দোষ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। খেলোয়াড়দের টিকে থাকতে হলে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হলে অনেক উন্নতি করতে হবে। বিশাল একটা গ্যাপ রয়ে গেছে।’’
পরাজয়ের মিছিল বাংলাদেশের জন্য নতুন না। ’৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে নর্দাম্পটনে হারানোর পর বাংলাদেশ টানা ৪৫ ম্যাচ জেতেনি। ৮ অক্টোবর ১৯৯৯ থেকে পরের জয়ের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ২০০৪ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত। দীর্ঘতম সেই পরাজয়ের মিছিল পেরিয়ে একটা সময়ে বাংলাদেশ ওয়ানডে দল চোখে চোখ রেখে বড় দলগুলোকেও হারিয়েছে। সুসময় আড়াল হয়েছে। এখন চলছে দুঃসময়। কলম্বোতেই একদিন পর দ্বিতীয় ওয়ানডে। মিরাজ অ্যান্ড কোং কি পারবে পরাজয়ের এই মিছিল আটকাতে? নাকি পরাজয়ের এই স্তুপ পাহাড়ে রূপ নেবে?
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প পর জয় র র জয় র অবস থ প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিলেন অভিনেত্রীর স্বামী
ভারতীয় বাংলা টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুস্মিতা রায়ের সংসার ভেঙে গেছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) এ অভিনেত্রীর জন্মদিন। বিশেষ দিনে সুস্মিতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তার স্বামী সব্যসাচী চক্রবর্তী।
ফেসবুক পোস্টে সুস্মিতাকে প্রথমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান সব্যসাচী। এরপর তিনি লেখেন, “ভালো থাক। বড় হ আরো। জন্মদিনে আমার শেষতম শুভেচ্ছায় অনেক ভালো থাকিস। নতুন অধ্যায় ভালো হোক। আমরা আলাদা হচ্ছি। কিছু জিনিস দুই তরফে মিলল না, মন খারাপ দুই তরফেই। সেটা কাটিয়েই এগিয়ে যাওয়া হোক!”
সবাইকে সমালোচনা বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে সব্যসাচী লেখেন, “বাকিদের চর্চা, আলোচনা দয়া করে এখানেই শেষ হোক। আপনাদের কাছ থেকে দুই তরফেই গলাগলি আশা করছি, গালাগালি নয়। এরপর আপনাদের যা ইচ্ছে। এই পোস্ট দু তরফের সম্মতিক্রমে, আলোচনা করে। আপনারা এবার প্লিজ আলোচনা থামিয়ে দিন। আমাদের দু জনেরই আলাদা করে অনেক কিছু করার বাকি আছে। প্লিজ।”
আরো পড়ুন:
দাম্পত্য জীবনের এক বছর, স্বামীকে অর্ষার খোলা চিঠি
‘নাটকটি দেখে চোখের পানি ধরে রাখা সম্ভব না’
পরে এ বিষয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে সুস্মিতা রায় বলেন, “এটা নিয়ে আসলে একদম আলোচনা করতে চাই না। সব্যসাচী এবং আমি দুজনে মিলে যে পোস্ট করেছি ওইটুকুই সকলকে বলতে চাই। আমি কারো দিকে আঙুল তোলা বা কোনো কাদা ছোড়াছুড়ি হোক চাই না। আমার কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। কাউকে দোষারোপও করব না। এটা সম্মিলিত একটা সিদ্ধান্ত। দুজন দুজনের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।”
‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিক নাটকে শ্যামার বৌদির চরিত্রে অভিনয় করে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেন সুস্মিতা। এরপর ‘জগদ্ধাত্রী’ ধারাবাহিকে তার অভিনয় সকলের নজর কাড়ে।
ঢাকা/শান্ত