সাড়ে ৩ কেজি সোনা পরেন রাজস্থানের ফল ব্যবসায়ী, এখন চাঁদা দাবি করছে সন্ত্রাসীরা
Published: 28th, November 2025 GMT
ভারতের রাজস্থান রাজ্যের চিতোরগড়ের ব্যবসায়ী কানাইয়ালাল খাটিকের অভিযোগ, গ্যাংস্টার রোহিত গোদারার সঙ্গে সম্পর্ক আছে দাবি করে কিছু লোক ফোন করে তাঁর কাছে চাঁদা চেয়েছে। খাটিক ফল ব্যবসায়ী।
প্রচুর সোনা পরার প্রতি খাটিকের আগ্রহের কারণে চিতোরগড়ের মানুষের কাছে তিনি ভারতের প্রখ্যাত শিল্পী–সুরকার ‘বাপ্পি লাহিড়ী’ নামে পরিচিত। তিনি বাপ্পী লাহিড়ীকে দেখেই নাকি এভাবে সোনা পরার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই দিন আগে খাটিকের মুঠোফোনে প্রথম একটি মিসড কল আসে। এরপর একই নম্বর থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ কল আসে। তিনি ফোন ধরেননি। এরপর তাঁর ফোনে একটি অডিও রেকর্ডিং পাঠানো হয়। এতে ভয়েস দেওয়া ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন।
খাটিক পুলিশকে জানিয়েছেন, মুঠোফোনে কল করা ওই ব্যক্তি তাঁকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দাবি মানা না হলে তিনি ‘সোনা পরার মতো অবস্থায়ও আর থাকবেন না’।
এ ছাড়া খাটিককে চুপচাপ বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
খাটিক কোনো কিছু না বলায় তাঁর মুঠোফোনে আবারও কল আসে। সেখানে অপর প্রান্ত থেকে তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে আবার পুরোনো কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। চিতোরগড়ের কোতোয়ালি থানায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে।
৫০ বছর বয়সী খাটিক ফল ব্যবসা শুরু করার আগে একসময় হাতে টানা ভ্যানে সবজি বিক্রি করতেন। আপেলের ব্যবসা শুরু করার পর তার ভাগ্য বদলে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি সোনার গয়নার প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকেন।
বর্তমানে খাটিক প্রায় সাড়ে ৩ কেজি সোনার গয়না পরেন। এ জন্য স্থানীয়দের কাছে তিনি বেশ পরিচিত। এ কারণে চিতোরগড়ের মানুষ তাঁকে ‘গোল্ডম্যান’ নামে ডাকে।
‘গ্যাংস্টার’ রোহিত গোদারা কে
বিকানেরের লুনাকারানের বাসিন্দা গোদারা বর্তমানে কানাডায় বসবাস করছেন বলে ধারণা করা হয়। ভারতের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ৩২টির বেশি মামলা নথিভুক্ত রয়েছে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গোদারা রাজস্থানের ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদাবাজি করতেন, তাঁর একটি বড় বাহিনী ছিল। গত বছরের ২৯ মে পাঞ্জাবের মানসা জেলায় গুলিতে নিহত হওয়া পাঞ্জাবি র্যাপার সিধু মুস ওয়ালার চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম গোদারা। তিনি সিকারের গ্যাংস্টার রাজু থেহাট হত্যাকাণ্ডেরও প্রধান অভিযুক্ত আসামি।
২০২২ সালের ১৩ জুন গোদারা ‘পবন কুমার’ নামে একটি জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে নয়াদিল্লি থেকে দুবাই পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করা আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আহত পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ (অপরাধ) সুপার আবুল বাশার, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে।
শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন আম বটতলা বাজারে মুঠোফোন মেরামত করতে এক দোকানে যান। এ সময় ওই দোকানদারের সঙ্গে ওই নারী শিক্ষার্থীর কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই নারী শিক্ষার্থীকে অশ্লীল কথা বলেন। এরপর ওই শিক্ষার্থীর বন্ধুরা সমবেত হয়ে ওই দোকানে গিয়ে দোকানদারকে মারপিট করেন। এরপর গ্রামবাসী একত্র হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়।
সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’