জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এনসিপি: নাহিদ ইসলাম
Published: 3rd, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না এনসিপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার হাতিখানা কবরস্থানে ‘জুলাই শহীদ’ সাজ্জাদ হোসেনের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এখনও অনলাইনে সরব। তারা ঘাপটি মেরে দেশেই রয়েছে। এ কারণে আমাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। গতকালও এনসিপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তাদের ধরে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ পরাজিত শক্তি নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এমন অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেবে কে? সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ।
পরাজিত শক্তির রেখে যাওয়া পুরাতন বন্দোবস্ত পরিবর্তন করা ছাড়া কাঙ্খিত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যত দ্রুত সংষ্কার হবে, তত তাড়াতাড়ি দেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাবে। আমরা জুলাই পদযাত্রার মাধ্যমে যে সাড়া পাচ্ছি তাতে জনগণের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করেই ছাড়বো।
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সংবিধান বদলাতে হবে। কারণ বর্তমান সংবিধান আওয়ামী সংবিধান। এটার পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ নির্মূল হবে না। ফ্যাসিস্ট বিদায় হলেও ফ্যাসিবাদীতন্ত্র এখনও জেঁকে বসে আছে রাষ্ট্রযন্ত্রে।
তিনি বলেন, গত ফ্যাসিস্ট আমলে নীলফামারীর মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত। এখানে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জেলার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। এজন্য এনসিপির পক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলের সমর্থন প্রত্যাশা করেন তিনি।
একই পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘দেশে আমরা আর চাঁদাবাজি দেখতে চাই না, দখলদারিত্ব দেখতে চাই না। কোনো লুটপাট দেখতে চাই না। আমরা কোনো সরকারি অফিসে দাসত্বের মতো ব্যবহার দেখতে চাই না। টাকা ছাড়া কাজ হয় না- এমন কোনো সরকারি অফিসে দেখতে চাই না। সকলের সহযোগিতা এবং সমর্থন নিয়ে সুন্দর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম, মুনিয় শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব তাসনিয়া জারা, নাহিদ সারোয়ার নিভা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কারী আবদুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ন মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিউনসহ জেলা ও উপজেলা নেতারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম এনস প জ ল ই সনদ ইসল ম এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’