লাখ লাখ আফগান শরণার্থীকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ ইরানের
Published: 6th, July 2025 GMT
ইরানে বসবাসকারী লাখ লাখ আফগান অভিবাসী ও শরণার্থীকে দেশ ছাড়তে শেষবারের মতো নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। স্বেচ্ছায় ইরান ত্যাগের জন্য নির্ধারিত সময়সীমার শেষ দিন আজ রোববার। এরপর থেকে ‘অবৈধভাবে অবস্থানরত’ আফগানদের গ্রেপ্তার করে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। খবর আল জাজিরার
এমন এক সময় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো, যখন ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতের পর ইরানে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ওই সংঘাতে জড়িয়ে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রও।
গত মার্চ মাসে ইরান সরকার একটি আদেশ জারি করে। সেখানে অবৈধভাবে বসবাসকারী আফগানদের ৬ জুলাইয়ের (আজ রোববার) মধ্যে স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, তা না হলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে আদেশে জানানো হয়।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, ইরান থেকে আফগানদের গণহারে ফেরত পাঠানো হলে আফগানিস্তান আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। যুদ্ধ, দারিদ্র্য এবং তালেবান শাসন থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা এই মানুষদের অনেকে কয়েক দশক ধরে ইরানে বসবাস করছেন।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, তেহরান ২০২৩ সালে ‘অবৈধভাবে’ দেশে বসবাসকারী বিদেশিদের বহিষ্কারের জন্য একটি অভিযান শুরু করে। পরে চলতি বছরের মার্চে ইরান সরকার একটি সময়সীমা ঘোষণা করে-যার মধ্যে যারা বৈধতা ছাড়া অবস্থান করছে, তাদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এরপর থেকে প্রায় সাত লাখ আফগান ইরান ছেড়েছে, শুধু জুন মাসেই ফিরে গেছে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি।
ইরানে প্রায় ৪০ লাখ আফগান শরণার্থী ও অভিবাসী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তাদের অনেকে সেখানেই জন্মেছে এবং বেড়ে উঠেছে।
তেহরানে বসবাসকারী আফগান রেস্তোরাঁ মালিক বতৌল আকবরি আল জাজিরাকে বলেন, ইরানে এখন ‘অ্যান্টি-আফগান’ মনোভাব দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের ভীষণভাবে কষ্ট দিচ্ছে। আমাদের অনেকের কাছে এটাই একমাত্র চেনা ঘর।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার আফগানকে ইরান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যেখানে আগের গড় ছিল দিনে মাত্র দুই হাজার।
ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, আমরা সবসময় অতিথিপরায়ণ ছিলাম। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশিদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে।
তেহরান থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক রেসুল সেরদার জানান, ইরানের অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সামাজিক সমস্যার জন্য আফগানদের দায়ী করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই অভিযোগগুলো আরও উসকে উঠেছে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চালানো প্রচারণা ও রাজনৈতিক ভাষণের মাধ্যমে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে ইসরায়েল আফগানদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন ল খ আফগ ন ইসর য় ল শরণ র থ বসব স সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন বউ ঘরে রেখে মাঠে নেমেই সামির ৫ উইকেট
আফগান পেসার বিলাল সামির জীবনে সৌভাগ্য বয়ে এনেছেন তাঁর স্ত্রী। চলতি মাসের ৪ তারিখে ইনস্টাগ্রাম পোস্টে নিজের বিয়ের কথা জানান সামি। পোস্টে লিখেন, ‘গট ম্যারিড’। সামি তখনো বোধ হয় জানতেন না দুই দিন পরই ডাক আসবে আফগানিস্তান দলে। ছাড়তে হবে ঘর ও প্রিয় স্ত্রীকে।
কীভাবে জানবেন, সুযোগই যে পেয়েছেন একজনের চোটের কারণে। হুট করে আফগানিস্তান দলে সুযোগ পেয়ে বিয়ের দুই দিন পরই ঘরছাড়া সামির সামনেই গতকাল আবুধাবিতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বাংলাদেশ দল।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সামি সুযোগ পান আরেক পেসার মোহাম্মদ সালিমের চোটে। পেশির চোটে সিরিজ থেকে ছিটকে যান সালিম। সামি কালকের আগে আফগানিস্তানের হয়ে খেলেছেন মাত্র একটি ম্যাচ।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর অভিষেক। অভিষেক ম্যাচে ৩ ওভারে দিয়েছিলেন ২৫ রান। উইকেট পাননি। এরপর আর দলে সুযোগ পাননি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছন্দে ছিলেন ২১ বছর বয়সী এই পেসার।
সম্প্রতি শেষ হওয়া গাজী আমানুল্লাহ খান রিজিওনাল ওয়ানডে টুর্নামেন্টে (আফগানিস্তানের ঘরোয়া লিস্ট এ প্রতিযোগিতা) সামি স্পিনঘার অঞ্চলের হয়ে খেলেন। সেখানে তিনি দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন। ২২.৯০ গড় ও ৪.৯৭ ইকনোমি রেটে নিয়েছেন ১০ উইকেট। এমন পারফরম্যান্স আর একটু ভাগ্য তাঁকে আবার দলে ফেরার সুযোগ করে দেয়।
সামি বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে সুযোগ পাননি। সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত করা আফগানিস্তান কাল তাকে মাঠে নামায়। আর আফগানিস্তানের এমন সিদ্ধান্ত কাজেও লেগে যায়। নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই নেন ৩৩ রানে ৫ উইকেট। এটি সামির লিস্ট এ ক্রিকেটেও সেরা বোলিং।
আরও পড়ুনমিরাজরা ভাবছেন কীভাবে পরের সিরিজে ভালো করা যায়৫৭ মিনিট আগেসামি কাল শুরুটা করেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেনকে বোল্ড করে। এরপর অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও আউট হন এই পেসারের বলে। আফগানিস্তানের ২০০ রানের জয়ের দিনে শেষ তিনটি উইকেট নিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন সামি। আউট করেন রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম ও হাসান মাহমুদকে। ম্যাচসেরার পুরস্কারও ওঠে তাঁর হাতে।
ম্যাচসেরার হয়ে সামি বলেছেন, ‘নিজের খেলা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছি। দল আমার পাশে ছিল। কাজটা সহজ ছিল না, কারণ দলে অনেক বিকল্প আছে। খুবই ভালো লেগেছে আজ (কাল) নিজের সেরাটা দিতে পেরেছি।’
আরও পড়ুনবিপিএলের টাকার ভাগ পাবে ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও১১ ঘণ্টা আগে