দুদককে চিঠি দেওয়ার বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
Published: 7th, July 2025 GMT
বিটিসিএলের ৫জি রেডিনেস প্রকল্প চালিয়ে নিতে দুদককে চিঠি দেওয়ার বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেছেন, ব্যক্তিস্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থেই দুদকের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। কারণ প্রকল্পটি থমকে গেলে সরকারের ৬০০ কোটি টাকা গচ্চা যাবে।
আজ সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ সুবিধায় টেলিকম ব্যবসায়ীরা ১২ বছরে ৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি করেছে। তিনি বলেন, নতুন টেলিযোগাযোগ লাইসেন্স নীতিমালা নিয়ে স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়েছেন। দেশি কোম্পানি বন্ধ হবে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো.
দেশের স্বার্থেই এই উদ্যোগ
সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, বিটিসিএল ফাইবার নেটওয়ার্ক বাড়ানোর প্রকল্পটি গত সরকারের আমলের। সে সময়ই দরপ্রক্রিয়া প্রভাবিত করা হয়েছে এবং একটা এলসিও করা হয়েছিল। আমি এবং নাহিদ ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার আগে সেই এলসির ২৯০ কোটি পরিশোধ করা হয়ে গেছে। এই সব কিছু আমলে নিয়ে আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি নিজে ওনার অফিসে গিয়েছি। আমি বলেছি, যেহেতু ২৯০ কোটি টাকা চলে গেছে তাই প্রকল্পটি চালিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া বিটিসিএলের সক্ষমতা বৃদ্ধির আরও একটি ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প শেষ হয়েছে। ৫জি রেডিনেস প্রকল্পটি শেষ না হলে ওই প্রকল্পটি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত না হলে বিটিসিএল দুর্বল হয়ে মার্কেট আউট হয়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। প্রতিদ্বন্দ্বী বেসরকারি কোম্পানিগুলো এটাই চাইছে। তাই দেশের স্বার্থে বিটিসিএলের প্রকল্প এগিয়ে নিতে বলিষ্ঠ উদ্যোগ নিয়েছি।
কারো লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না
নতুন টেলিযোগাযোগ নীতিমালা কার্যকর হলে আইসিএক্স, আইজিডব্লিউসহ দেশীয় বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে দাবি করা হচ্ছে- এ প্রশ্নের জবাবে বিশেষ সহকারী বলেন, এটা সম্পূর্ণ একটা অপব্যাখ্যা। আমরা বলেছি, কারো লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না। যেটা হবে, যেহেতু এই লাইসেন্সগুলো আন্তর্জাতিক স্তরের বা আন্তর্জাতিক স্বীকৃত নেই। আর এত স্তর থাকার জন্য গ্রাহকের প্রতি কলে খরচ বেড়ে যায়। নতুন লাইসেন্স ব্যবস্থায় এ গুলো আর থাকবে না। তাদের নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে লাইসেন্স নিয়ে নতুনভাবে ব্যবসা করতে হবে। এক্ষেত্রে পুরনো উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এর বাইরে যেসব আইসিএক্স, আইজিডব্লিউর লাইসেন্স ২০২৭ সালের দিকে শেষ হবে; তারা চাইলে আউটসোর্সিং হিসেবে বিদ্যমান লাইসেন্সে কাজ করার সুযোগ পাবে। সুতরাং এটা সম্পূর্ণ অপব্যাখ্যা যে দেশীয়দের ব্যবস্থা বন্ধ করা হচ্ছে।
সরকারের ক্ষতি ৮ হাজার কোটি টাকা
টেলিযোগাযোগ খাতে বিগত সরকারের অনিয়ম দুর্নীতির উল্লেখ করে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, ‘২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে সাতটি আইজিডব্লিউ অপারেটর আইওএফ নামে একটি সংগঠন গঠন করে। বিটিআরসি এবং টেলিযোগাযোগ বিভাগ আইওএফকে বৈধতা দিতে এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু করে, যা প্রায় ১২ বছরব্যাপী পরীক্ষামূলকই ছিল। মোবাইল অপারেটরদের সরাসরি আন্তর্জাতিক কল আনতে নিষিদ্ধ করা হয়। এদিকে আইওএফ প্রতি মিনিটে ০.০৩ ডলারে কল টার্মিনেট করলেও রাজস্ব ঘোষণা করত মাত্র ০.০০৬ ডলার। ২০২৪ সাল নাগাদ প্রকৃত আন্তর্জাতিক টার্মিনেশন রেট ০.০০১ ডলারে নেমে এলেও আইওএফ প্রতি মিনিটে মাত্র ০.০০০৪ ডলারই ঘোষণা করতে থাকে। এইভাবে গত ১২ বছরে সরকারের ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব ক্ষতির কারণ হয়েছে। এ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির পুরোটাই সালমান এফ রহমান গংদের পকেটে ঢুকেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ট স এল সরক র র প রকল প ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চাইছে চরের দল: সালাহউদ্দিন আহমদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যারা ১৪ দলের নামে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, তারাই এখন সংস্কার কমিশনে এসে বড় বড় কথা বলছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যারা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চাইছে, তারা একটি চরের দল। তারা আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনের বৈধতা দিয়েছিল।
শনিবার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। চুনকুটিয়ার শুভাঢ্যা গার্লস স্কুল প্রাঙ্গণে ‘দ্রুত নির্বাচনে’র দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণতন্ত্রের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। স্বল্পমেয়াদী সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। জনগণ ম্যান্ডেট দিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনলে সংবিধানসহ সব সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, দ্বিমত ও বিরোধিতা থাকলেও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কেউ যদি সংস্কার ও বিচারের নামে দীর্ঘমেয়াদে ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকতে চায় সেটি দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও সংগ্রাম করবে বিএনপি।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারও হাতে নেই। একজন ভদ্রলোক মানুষ ওয়াদা করছেন, তিনি তার ওয়াদা পূরণ করবেন, যথাসময়ে নির্বাচন দেবেন, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা ধৈর্য ধরে আছি।
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, শিক্ষা আর স্বাস্থ্য দুইটা দখল করছে জামায়াত। ওখানে আর কারও কোনো ঠাঁই নাই। যারা নির্বাচন চায় না, সংস্কার সংস্কার করে, তারা তো ভারতের দালাল। এরাই কিন্তু আওয়ামী লীগের জঘন্য লোকদের তাদের দলের সদস্য বানাইতেছে গোপনে। পরাগ মণ্ডল যে অপহরণ হলেন, আপনার সবাই জানানে কে অপহরণ করেছে। এখন শুনি তিনি জামায়াতের নেতা। জামায়াত কী জিনিস আপনারা একটু চিনে রাখেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।