নাটোরের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মাহিদুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। 
মাহিদুর রহমানের অভিযোগ, সাবেক এমপি শিমুলের বেয়াই মীর হাবিবুল আলম বখতিয়ার নামের ওই ঠিকাদার পাথর নিয়ে তাঁকে প্রায় চার কোটি টাকা দিচ্ছেন না। 
মাহিদুরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদে। তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স নয়ন এন্টারপ্রাইজ। সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করে ঠিকাদারদের কাছে সরবরাহ করতেন।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মীর হাবিবুর কনস্ট্রাকশনের নির্বাহী পরিচালক  মীর হাবিবুর আলম বখতিয়ারকে মাহিদুর রহমান ১৯ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকার পাথর সরবরাহ করেন। লেনদেনের এক পর্যায়ে বখতিয়ার ৩ কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকা আর পরিশোধ করেননি। 
টাকা চাইলে তাঁকে নাটোরে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নেন। সেখানে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জিম্মি করেন। এর পর তিন-চারজন মিলে ভয় দেখিয়ে একটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। মাহিদুর সাধারণত যে স্বাক্ষর দিয়ে থাকেন, তা না দিয়ে শুধু নিজের নাম লিখে দিয়ে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসেন। পরে ওই স্ট্যাম্পে লেখা হয় যে, মাহিদুর তাঁর সব পাওনা বুঝে পেয়েছেন।
ওই ঘটনার পর মাহিদুর টাকার জন্য মোবাইল ফোনে বখতিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। তিনি টাকা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টাকা দেননি। মামলা করলে টাকা আদায়ে বিলম্ব হবে, তাই মামলা না করে মাহিদুর আপসে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে সেনাবাহিনী, রাজপাড়া থানা, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছেও অভিযোগ করেন। এদিকে ঠিকাদার বখতিয়ার আত্মগোপনে থেকে এখনও রাজশাহী সওজ থেকে কোটি কোটি টাকার কাজের বিল তুলে যাচ্ছেন। কিন্তু টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। এ সময় মাহিদুর বখতিয়ারকে ধরিয়ে দিতে ১ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাহিদুরের স্ত্রী ময়েদা বেগম ও ভাগনে জিল্লুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ময়েদা বেগম বলেন, পাওনা টাকা না পেয়ে তারা ব্যাংক ঋণের বোঝায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। এলাকায়ও অনেক পাওনাদার তৈরি হয়েছে। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাদের মাঠের জমিও দখল নিয়েছেন পাওনাদাররা।
এ বিষয়ে মীর হাবিবুর আলম বখতিয়ারকে ফোন করলে তিনি বলেন, মাহিদুর রহমানের সব টাকা চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি 
শেষে এসে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা পেতেন। কিন্তু দাবি করছেন ৪ কোটি টাকা। হিসাব করে পরে ৫০ লাখ করে চারটি চেকের মাধ্যমে ২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এতদিন পরে এসে মিথ্যা অভিযোগ আনছেন।
সাবেক এমপি শিমুলের প্রভাব খাটানোর বিষয়ে তিনি বলেন, শিমুল আমার বড় ভাইয়ের শ্যালক। এ ঘটনা যখন ঘটে তখন তিনি দেশেই ছিলেন না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম হ দ র রহম ন বখত য় র

এছাড়াও পড়ুন:

৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

সিএমএসএমই ঋণ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

ব্যাংকের কার্ড থেকে নগদ, বিকাশে টাকা পাঠানোর নতুন সুবিধা

তিনি জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণে রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। আর এই প্রাইসেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কেনার ফলে বাজারে তারল্য বাড়ছে, আর রিজার্ভে যোগ হচ্ছে নিলামে কেনা ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট দুই হাজার ১২৬ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ৬ অক্টোবর ৮টি ব্যাংক থেকে নিলামে ১৪০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে,  ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে,  একই দরে গত ১৫ জুলাই ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া গত ২৩ জুলাই ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫  পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং  গত ১০ আগস্ট ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। আর ডলারের দাম আরও কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বে অপরদিকে রেমিট্যান্স আয় বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছে।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্ব অর্থনীতিতে ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব এখনো তেমন একটা পড়েনি: আইএমএফ
  • এক ছাতার নিচে ৪৮ ব্র্যান্ডের ফার্নিচার, ৫-১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়
  • ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
  • নবম-দশম শ্রেণির সাড়ে পাঁচ কোটি পাঠ্যবই ছাপাবে সরকার
  • কুষ্টিয়ায় দুই দিনে ১৪ কোটি টাকার কারেন্ট জাল জব্দ
  • পুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প