নবীগঞ্জে সংঘর্ষ: সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৭ জন
Published: 9th, July 2025 GMT
স্থানীয় দু’জন গণমাধ্যমকর্মীর বিরোধের জেরে সোমবার নবীগঞ্জে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একজন, আহত শতাধিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটক হয়েছেন সাতজন। তবে এখনও কোনো পক্ষ মামলা করেনি।
সংঘর্ষের পরদিন মঙ্গলবার নবীগঞ্জ এক অচেনা শহরে পরিণত হয়। প্রতিটি সড়ক ছিল জনশূন্য। মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল। সড়কের বিভিন্ন স্থানে আগুনে পোড়া আর ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানপাট ও যানবাহন। রাস্তায় যে দু-একজন চলাচল করছিলেন, তাদের কেউ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছেন না।
নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও নবীগঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষে নবীগঞ্জ শহরের দেড় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। হাসপাতাল-ক্লিনিকও রক্ষা পায়নি। প্রশাসন সংঘর্ষ শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা পর ১৪৪ ধারা জারি করে। এ সিদ্ধান্ত আরও আগে নিলে ক্ষয়ক্ষতি কম হতে পারত।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করছে। এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যানথ্রাক্স ঝুঁকি: ঝালকাঠিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই চলছে পশু জব
রংপুর ও গাইবান্ধা অঞ্চলে সম্প্রতি দেখা দিয়েছে অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগের প্রাদুর্ভাব। গবাদিপশুর শরীরে এই ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ ও শঙ্কা ছড়িয়েছে। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই ঝালকাঠি জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে অবাধে গবাদিপশু জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। জবাই করা পশুর কোনো রোগ-বালাই আছে কিনা এমন কোনো ধারণাও রাখেন না তারা। ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
মাংস ক্রেতারা জানান, আইন প্রয়োগের দায়িত্ব প্রাণিসম্পদ ও প্রশাসনের। তবে, তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায় না।
আরো পড়ুন:
হাত-পায়ের ব্যথা কমাতে পাঁচটি নিয়ম মেনে চলুন
টকদইয়ের সঙ্গে যেসব খাবার খেলে হিতে বিপরীত
ঝালকাঠির বিভিন্ন এলাকায় গরু, ছাগল ও ভেড়া জবাই করেন মাংস ব্যবসায়ীরা। জবাই করার আগে প্রতিটি গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা রয়েছে। এই দায়িত্বে একজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও নিয়ম মানা হচ্ছে না। পশু জবাইয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে বাড়ছে সংক্রামকজনিত রোগবালাই।
মাংসের ক্রেতা সদর উপজেলার আবদুস সালাম বলেন, “পশু অসুস্থ নাকি সুস্থ ছিল জানি না। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র এবং পশুর শরীরে সিল দেবেন এটাই স্বাভাবিক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের তদারকি না থাকায় লোকজন মারা যাওয়া পশুর মাংস, নাকি রোগাক্রান্ত গরু-মহিষ-ছাগল-ভেড়ার মাংস খাচ্ছে, তা বোঝার কোনো উপায় নেই।”
নলছিটি উপজেলার এইচ এম সিজার বলেন, “রংপুর ও গাইবান্ধায় সম্প্রতি অ্যানথ্রাক্স রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত প্রাণী বা তাদের দেহবস্তুর সংস্পর্শে এলেই ছড়ায় যা মানুষকে সংক্রমিত করে। আমাদের এই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাংস বিক্রেতারা পশু জবাই করেন। পশুটি সুস্থ আছে কিনা সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। যেখানে পশু জবাই হয় সেখানে কখনো কোনো পশু চিকিৎসককে দেখিনি।”
গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো ছাড়পত্র আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাংস ব্যবসায়ী জানান, ৫ আগস্টের আগে নিয়মিত পশু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হতো। এখন আর তা করা হয় না, প্রশাসনের কেউ থাকেন না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নীরোদ বরণ জয়ধর বলেন, “আমি নতুন যোগদান করেছি। কেন পশু জবাইয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না বিষয়টি জেনে বলতে পারব। অসুস্থ পশু জবাই হলে তা থেকে মানব শরীরে অ্যানথ্রাক্স ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে।”
ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন কবির বলেন, পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়ায় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক জায়গায় খোলা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করা হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য আরো ঝুঁকিপূর্ণ। স্যানিটারি ইন্সপেক্টর এরপর থেকে যাতে তদারকি করেন সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, এ বিষয়টিতে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসারকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।
ঢাকা/অলোক/মাসুদ