জুলাইয়ে আহতরাও ঢাকায় ফ্ল্যাট পাচ্ছেন
Published: 9th, July 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য এবার বিনা মূল্যে ঢাকায় ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। আহত ব্যক্তিদের জন্য দেড় হাজারের বেশি ফ্ল্যাট তৈরিতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। সরকারের কোষাগার থেকে এই টাকা দেওয়া হবে। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য ফ্ল্যাট বানানো হবে মিরপুর ৯ নম্বরে সরকারি জমিতে। ফ্ল্যাট তৈরি করবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।
এসব ফ্ল্যাটের নকশাও তৈরি করেছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা যায়, আহত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য তৈরি করা ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট। প্রতিটি ফ্ল্যাটে দুটি শয়নকক্ষ (বেডরুম), একটি ড্রয়িংরুম (বসার ঘর), একটি লিভিং রুম (বিশ্রাম ঘর), একটি খাবার কক্ষ, রান্নাঘর ও তিনটি শৌচাগার বা টয়লেট থাকবে। একটি কক্ষ থাকবে শুধু আহত ব্যক্তির জন্য, যিনি পঙ্গু বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। ওই কক্ষে তাঁদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
এর আগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট দিতে আলাদা একটি প্রকল্প নিয়েছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তাঁদের জন্য মোট ৮০৪টি ফ্ল্যাট তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬২ কোটি টাকা। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ১ হাজার ৩৫৫ বর্গফুট। রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে সরকারি জমিতে শহীদ পরিবারগুলোর জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে।
আহত ব্যক্তিদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো.
৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনে ‘ঢাকার মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কর্মক্ষমতা হারানো জুলাই যোদ্ধা পরিবারের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানে এক হাজার ৫৬০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শিরোনামে প্রকল্পের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। ওই বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদনে সবুজ সংকেত দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানান। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি মাসেই জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের জন্য আলাদা দুটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাবে। এ দুটি প্রকল্পই ২০২৯ সালে শেষ হবে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আহত ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ যে জমি ঠিক করেছে, সেটি অনেক নিচু। এর আগেও সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে বেশি নিচু হওয়ার কারণে করা যায়নি। জায়গাটি ভরাট করতে বিপুল পরিমাণ মাটির প্রয়োজন হবে। ভূমি উন্নয়নে প্রায় ১২ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। তা ছাড়া সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে কোনো প্রকল্প নেওয়ার আগে সমীক্ষা করতে হয়। জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রকল্পে সমীক্ষা করা হয়নি। তাঁদের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা ফ্ল্যাট পাবেন, সেটি ঠিক হয়নি।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, জুলাই আন্দোলনে ক শ্রেণিতে ‘অতি গুরুতর আহত’ ঘোষণা করা হয়েছে ৪৯৩ জনকে। খ শ্রেণিতে ‘গুরুতর আহত’ ঘোষণা করা হয় ৯০৮ জনকে। সব মিলিয়ে গুরুতর আহতের তালিকায় রয়েছে ১ হাজার ৪০১ জনের নাম। এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এখন পর্যন্ত ৮৩৪ জনকে শহীদ ঘোষণা করা হয়েছে। শহীদ ও আহত পরিবারকে নানাভাবে সহায়তা দিচ্ছে সরকার। প্রত্যেকের পরিবার পাচ্ছে এককালীন টাকা। সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে এ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি মাসে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এবার তাঁদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলো।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ১৯ জন দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। এক চোখ নষ্ট হয়েছে ৩৮২ জনের। জুলাই আন্দোলনে অনেকে পা হারিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আহত ব্যক্তিদের অঙ্গহানির বিষয়টি মাথায় রেখে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ভবনে তাঁদের ওঠানামা এবং বাসায় বসবাসের উপযোগী করে নির্মাণ করা হবে। মিরপুর হাউজিং এস্টেটে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে মোট ১৫টি ভবন করা হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য ফ ল য ট ন র ম ণ দ র জন য ফ ল য ট র পর ব র প রকল প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় বাস ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাবা-মেয়ে নিহত হয়েছে। একই পরিবারের চারজন আহত হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার দয়ামীর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ও আহতরা সবাই একই পরিবারের বলে জানায় পুলিশ।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল পুলিশবাহী বাস, আহত ২০
৪০ বছরেও পাকা হয়নি হাওলাদারপাড়া-বারঘর সড়ক
এতে নিহতরা হলেন প্রাইভেটকার চালক ও ওসমানীনগর পজেলার উমরপুর ইউনিয়নের খাদিমপুর গ্রামের মো. সফিক মিয়ার ছেলে মো. হারুন মিয়া (৩১) ও তার মেয়ে আনিসা (৮)। আহতরা হলেন নিহত হারুনের তিন বোন রাইমা বেগম, মুন্নি বেগম, পান্না বেগম ও ভগ্নিপতি মুকিত মিয়া।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানা ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পাশাপাশি আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ সরকার দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে জানান, নিহতের লাশ ও দুঘটনাকবলিত দুটি গাড়ি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেট থেকে হবিগঞ্জগামী বাসের সঙ্গে বিপরীতদিক থেকে আসা প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলে প্রাইভেটকারের চালক হারুন মিয়া ও তার মেয়ে আনিসা মারা যায়।
সিলেট জেলা বাস-মাইক্রোবাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আলী আকবর রাজন বলেন, ‘‘সড়ক দুর্ঘটনায় উমরপুর-খাদিমপুর শ্রমিক সংগঠনের এক সদস্য বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায় মেয়েসহ নিহত হয়েছেন। লাশ বর্তমানে মর্গে রয়েছে। আমরা তাদের পক্ষ থেকে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।’’
ঢাকা/নুর/বকুল