ভেড়ামারায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বাড়িতে হামলা ও আগুন
Published: 12th, July 2025 GMT
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় এক নেতার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। এ সময় তাঁর ছোট ভাইয়ের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব লাল চাঁদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাত একটার দিকে লাল চাঁদের বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা লাল চাঁদের ছোট ভাই যুবদলের কর্মী সুবেল আহম্মেদের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তারা বাড়ির দিকে লক্ষ্য করে ককটেল ফাটিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
আগুন জ্বলার একটি ভিডিও সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, ঘরের বেড়ায় আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। একজনকে চিৎকার করে বলতে শোনা যাচ্ছিল, ‘বাড়ির রান্নার ঘরের গ্যাসসিলিন্ডার সরিয়ে ফেল। সুবেলের ঘরে আগুন দিয়েছে। আগুন নিভাও পানি দাও।’ পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সুবেল আহম্মেদ অভিযোগ করেন, ‘রাজনীতি করার কারণে প্রতিপক্ষের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। বড় ভাইয়ের ঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে। আমার ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বোমাও ছুড়েছে।’
স্থানীয় কুঁচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেন বলেন, একটি ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছিল। ঘরটি পুড়ে আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার একাধিক নাম উল্লেখ করেছে, সেসব বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রব তালুকদার আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, একটা ঘটনা ঘটেছে। থানায় এখনো কেউ মামলা করেনি। মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত দুটি ককটেলের খালি কৌটা উদ্ধার করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’