ফেনীর পরশুরামে দোকানের পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে এক ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে মো. সায়েম নামের এক যুবক ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

শনিবার (১২ জুলাই) দিবাগত রাতে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একদল যুবক এক ব্যবসায়ীকে দোকান থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। এ সময় একজন বলেন, ‘আমি ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি, জানোস?’

ভুক্তভোগী সুমন জানান, প্রায় এক বছর আগে সায়েম তার দোকান থেকে ৪ হাজার ৯১০ টাকার সদায় নেন। এরপর অনেকবার তাগাদা দেওয়া হলেও বাকি টাকা পরিশোধ করেননি সায়েম। গত ৯ জুলাই সায়েমের সঙ্গে দেখা হলে টাকা ফেরত চান সুমন। এরপর ওই দিন রাতেই সায়েম, তার ভাতিজা ফয়সাল ও আরো কয়েকজন দলবদ্ধ হয়ে সুমনকে দোকান থেকে বের করে মারধর করেন।

আরো পড়ুন:

স্কুলের গেট থেকে ছাত্রকে তুলে নিয়ে মারধর, অস্ত্র উঁচিয়ে শিক্ষকদের হুমকি

নরসিংদীতে চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবককে গণধোলাই 

ভিডিওতে দেখা যায়, মারতে মারতে সুমনের গায়ের পোশাক খুলে নেওয়া হয়। এ সময় সুমনকে মাফ চাইতে বাধ্য করা হয় সায়েমের কাছে। আশেপাশের লোকজন ছুটে এলে অভিযুক্তরা চলে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত সায়েম পরশুরাম পৌরসভার দক্ষিণ কোলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। দলীয় নিয়ম ভেঙে শীর্ষ নেতাদের ছবি দিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন বানানোর অভিযোগে গত ২৫ জুন তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরশুরাম পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিসফাকুস সামাদ রনি বলেন, ‘‘ভিডিওটি দেখেছি। শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য  সায়েমকে আগেই বহিষ্কার করা হয়েছে।’’

পরশুরাম মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

নুরুল হাকিম বলেন, ‘‘ঘটনাটি গত ৯ তারিখের। সুমন নামের ওই ব্যবসায়ী পাওনা টাকা চাওয়ায় মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি বণিক সমিতির মাধ্যমে আপস-মীমাংসা হয়েছে বলে শুনেছি। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সায়েমের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

ঢাকা/সাহাব/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ব এনপ পরশ র ম ব যবস ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্রিল্যান্সিং করে ২২ বছরের তানিয়ার মাসে আয় লাখ টাকা

অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল তানিয়া খলিলের (২২)। বিয়ের বছরখানেক পরই মা হন তিনি। এরই মধ্যে সংসার আর শিশুসন্তান সামলিয়েই তিনি হয়ে ওঠেন ফ্রিল্যান্সার। নিজে ফ্রিল্যান্সিং শিখে অন্যদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এখন তাঁর মাসে আয় প্রায় এক লাখ টাকা।

তানিয়ার বাড়ি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌরসভার বাজারপাড়া এলাকায়। ২০২১ সালে মাটিরাঙ্গা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় তাঁর বিয়ে হয়। স্বামী ইব্রাহিম খলিল পেশায় ফ্রিল্যান্সার। সেই সুবাদে তানিয়ারও এ জগতে চলা শুরু। ২০২৩ সালের শুরুতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই খাগড়াছড়ি সদরে চলে আসেন। সেখানেই এখন দুজন ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালান।

তানিয়া জানান, বিয়ের পর পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের দায়িত্বে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এর মধ্যেও ঘরে বসে কিছু করতে চাইতেন। এরপর স্বামী ইব্রাহিম খলিল তাঁকে ফ্রিলান্সিং শেখার জন্য উৎসাহ দিতে থাকেন। তিনিও সে সুযোগ হাতছাড়া করেননি।

প্রথম আয় আমাকে অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। মনে হয়েছিল, সত্যিই কিছু করার সামর্থ্য আছে আমার।—তানিয়া খলিল, ফ্রিল্যান্সার

তানিয়া খলিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি প্রথমে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ শেখা শুরু করি। রং, লে আউট, টাইপোগ্রাফি—সবই আমার কাছে নতুন ছিল। নিজের আগ্রহ থাকায় দ্রুত শিখে ফেলি। কয়েক মাসের মধ্যেই নিজেকে ফ্রিল্যান্সিং বাজারের জন্য তৈরি করে ফেলতে সক্ষম হয়েছি।’

ফ্রিল্যান্সিং শেখার মধ্যেই ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রথম কাজ পেয়েছেন তানিয়া। লোগো ডিজাইন করে সে মাসে তিনি ১৩ ডলার আয় করেছিলেন। এর পর থেকে আর থেমে থাকতে হয়নি তাঁকে। সেই স্মৃতি মনে করে তানিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম আয় আমাকে অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। মনে হয়েছিল সত্যিই কিছু করার সামর্থ্য আছে আমার।’

তানিয়া বলেন, লোগো ডিজাইনের পর ব্র্যান্ড আইডেনটিটি, বিজনেস কার্ড, লেটারহেড তৈরিসহ নানান ধরনের কাজে দক্ষ হয়ে ওঠেন তিনি। গ্রাহকদের খুশি করতে পারায় দ্রুতই আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম বাড়ে তাঁর। এরপর একের পর এক কাজ আসতে থাকে। আয়ও সমানতালেই বাড়তে থাকে। বর্তমানে তিনি ফাইভারের পাশাপাশি আপ ওয়ার্কে ফ্রিল্যান্সের কাজ করেন।

সম্প্রতি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তিনতলা ভবনের দোতলায় প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের বিশাল কক্ষে সারিবদ্ধভাবে ল্যাপটপ নিয়ে বসে রয়েছেন কয়েকজন তরুণী। তানিয়া তাঁদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। একটু শুনতেই বোঝা গেল তানিয়া তরুণীদের গ্রাফিক ডিজাইন কীভাবে করতে হয়, তা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।

তানিয়ার জন্য এসব কাজ অবশ্য খুব একটা সহজ ছিল না। সময়মতো কাজ জমা দেওয়া, গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ, সন্তানকে দেখাশোনা—সব মিলিয়ে প্রতিদিনই ছিল চ্যালেঞ্জের। তানিয়া বলেন, ‘পরিবারের সাপোর্ট না থাকলে এটা সম্ভব হতো না। আমার স্বামী এখনো আমার সবচেয়ে বড় সহযোগী।’

খাগড়াছড়ি শহরে নারীদের ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তানিয়া খলিল। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিপণ আদায়ে ফেসবুকে বন্ধুত্ব, ব্যর্থ হয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড
  • কোহলির ৫২তম সেঞ্চুরিতে ভারতের রান পাহাড়
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি স্থগিত
  • রেলক্রসিংয়ে উঠতেই বন্ধ হয়ে যায় মোটরসাইকেল, অতপর...
  • মাছ শিকারের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ইগল, পাঠানো হলো হাসপাতালে
  • বিপিএল নিলাম আজ, যা যা জানা প্রয়োজন
  • চন্দ্র কেন কম আলো দেয়
  • খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও স্থিতিশীল, চিকিৎসকদের নির্দেশনা অনুসরণ করতে পারছেন: নাসীরুদ্দীন
  • ফ্রিল্যান্সিং করে ২২ বছরের তানিয়ার মাসে আয় লাখ টাকা
  • সাড়ে ৩ কেজি সোনা পরেন রাজস্থানের ফল ব্যবসায়ী, এখন চাঁদা দাবি করছে সন্ত্রাসীরা