‘প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি হতে পারবেন না’
Published: 22nd, July 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ব্যক্তি একইসঙ্গে দলীয় প্রধানের পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন না- এ মর্মে তিন-চতুর্থাংশ রাজনৈতিক দল ও জোট একমত হয়েছে। তবে কিছু দল এ বিষয়ে ভিন্নমত দিয়েছে এবং কমিশনের ‘জাতীয় সনদে’ তারা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দাখিলের সুযোগ পাবে।”
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজধানীন ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে কমিশনের ১৭তম দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন অধ্যাপক রীয়াজ। এ সময় কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো.
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে নীতিগত ঐকমত্য
কমিশনের সহ-সভাপতি জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। এর আগে ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে সংশোধিত ও সমন্বিত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয় দলগুলোর কাছে।
আরো পড়ুন:
যদি কোনোদিন জেলে যেতে হয়, সেখানে উঁচু কমোড পাব?
সহিংসতা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবের সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত পোষণ করে মতামত উপস্থাপন করে। আলোচনায় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়।
তবে অধ্যাপক রীয়াজ জানান, র্যাংকড চয়েস (Ranked Choice) ভোটিং পদ্ধতির বিষয়ে এখনো কোনো ঐক্যমত্যে পৌঁছানো যায়নি। তিনি বলেন, “এই বিষয়ে আগামী বৃহস্পতিবার পুনঃআলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আশাবাদ ব্যক্ত করছি।”
অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহ
আজকের আলোচনায় বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি—সহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
নোট অব ডিসেন্টের সুযোগ
কিছু দল বা জোট যারা প্রধানমন্ত্রীর দলীয় প্রধান না থাকার প্রস্তাবে দ্বিমত পোষণ করেছে, তারা ‘জাতীয় সনদে’ নোট অব ডিসেন্ট সংযোজন করতে পারবে। এটি কমিশনের পক্ষ থেকে সমন্বিত প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে