বান্দরবান পলিটেকনিক প্রকল্পে অনিশ্চয়তা
Published: 23rd, July 2025 GMT
দীর্ঘ আট বছরেও বান্দরবান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ২০১৮ সালে সরকার ২৩টি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয়। তবে প্রকল্পের বর্ধিত মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হলেও বান্দরবান পলিটেকনিকের জমি এখনও অধিগ্রহণই হয়নি। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যেতে পারে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের সুয়ালক মাঝেরপাড়া এলাকায় পাঁচ একর জমি নির্বাচন করা হয়। জেলা প্রশাসনকে অধিগ্রহণের প্রস্তাবও পাঠানো হয়। তবে এক পক্ষ দাবি করে, জমির মালিকদের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগ নেতার ভাই থাকায় আপত্তি উঠেছে। পাশাপাশি এলাকাটি পাহাড়িদের পাড়াসংলগ্ন এবং ভবিষ্যতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার ঝুঁকি রয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
তবে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রস্তাবিত জায়গার পাশে কোনো জনবসতি নেই এবং একটি পাহাড় স্থানটিকে পাড়া থেকে আলাদা করেছে। পাহাড়ি-বাঙালী স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে পাহাড়ি বা বাঙলীদের মধ্যে কোনো সমস্যাও নেই।
বরং তারা বলছেন, এ এলাকায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হলে তাদের ছেলে-মেয়েরা আরো বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এলাকার উন্নয়ন হবে। যারা বাধা দিচ্ছেন, তারা সবাই বহিরাগত লোকজন। কিছু কুচক্রী মহল ইনস্টিটিউটের জন্য সুলতানপুরে বিকল্প প্রস্তাবিত এলাকা নির্ধারণ করেছে- যা বান্দরবান সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে।
স্থানীয় বাসিন্দা আকাশ মার্মা, উসাচিং মার্মা ও গড়াঅং বলেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত সুয়ালকে জায়গাটি সবচেয়ে উপযুক্ত। আশপাশে চা-বোর্ড অফিস, রেডক্রিসেন্ট হাসপাতাল, পিটিআই, ম্যাটস, ম্রো স্কুল ও আনসার ব্যাটালিয়ন রয়েছে।
বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা সুলতানা বলেন, “তদন্তকালে প্রস্তাবিত জায়গায় উপস্থিত অধিকাংশ লোকজন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত জায়গায় পলিটেকনিক করার বিপক্ষে মতামত দেন। তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন। আমি স্পটে যাদের পেয়েছি, তাদের মতামতের ভিত্তিতেই প্রতিবেদন দিয়েছি।”
স্থানীয় সুয়ালক ইউপি চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা বলেন, “যারা আপত্তি করছে, আপত্তির পেছনে ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে। প্রভাবশালী একটি মহল চায় ইনস্টিটিউটি সুলতানপুর তাদের জমিতে স্থাপিত হোক।”
একই কথা বলেন স্থানীয় উছামং মার্মা ও নাসির উদ্দিন। তারা বলেন, শুরুতে কোনো আপত্তি ছিল না কিন্তু বহিরাগতরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এখন স্থানীয়দের প্রলোভন দেখিয়ে আপত্তি তুলেছে।
সুয়ালক মাঝের পাড়া এলাকায় প্রস্তাবিত জমির মালিক ইদ্রিছ চৌধুরী, শহীদুল আলম ও তানজিনা আফরিন। তাঁরা জানিয়েছেন, এলাকায় শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে ইনস্টিটিউটের জন্য তারা জমি দিতে রাজি আছেন।
এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান অভিযোগ করেন, “একটি গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রকল্পটি বানচালের চেষ্টা করছে। প্রস্তাবিত জায়গায় জনবসতি নেই। পাহাড়ি-বাঙালী সহিংসতার মিথ্যা আশঙ্কা তুলে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসএম মনজুরুল হক বলেন, “প্রস্তাবিত মাঝেরপাড়ার জমিটি উপযুক্ত এবং অধিকাংশ মহল তা সমর্থন করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন হলে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।”
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসাইন বলেন, “উপযুক্ত জায়গা না পেলে বান্দরবানে ইনস্টিটিউট স্থাপন সম্ভব হবে না। প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, “জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত হলেই অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হবে। বিলম্ব হলে প্রকল্প বাতিলের শঙ্কা রয়েছে।”
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ন দরব ন প রকল প স য় লক এল ক য় র জন য আশঙ ক আপত ত
এছাড়াও পড়ুন:
ইউরোপে পাইলটদের বেতন কোন দেশে কত
ইউরোপে সবচেয়ে বেশি বেতনের পেশার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে পাইলট। ফ্রান্সে এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ মাসিক বেতনের পেশা। জার্মানিতে জটিল ভূমিকার পাইলটেরা মাসে ২৮ হাজার ৯৬ ইউরো উপার্জন করেন। যুক্তরাজ্যে পূর্ণকালীন পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা মধ্যম আয়ে পঞ্চম স্থানে। ডেনমার্কে ২০২৩ সালে মাসিক বেতন ১৩ হাজার ৫২৩ ইউরো, দেশটির হিসাবে সপ্তম সর্বোচ্চ বেতন।
অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বেতনের বৈচিত্র্য
পাইলটদের বেতন দেশ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়। যুক্তরাজ্যে বেতন শুরু হয় বছরে ৫৪ হাজার ২৮৩ ইউরো (৪৭,০০০ পাউন্ড) থেকে, অভিজ্ঞ পাইলটদের জন্য এটি প্রায় ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৪৩ ইউরো (১ ইউরো সমান ১৪১ টাকা ৭৭ পয়সা, ২২ অক্টোবর ২০২৫ হিসাবে) পর্যন্ত হতে পারে, জানিয়েছে ব্রিটিশ ন্যাশনাল ক্যারিয়ার্স সার্ভিস।
ইআরআই অর্থনৈতিক গবেষণা ইনস্টিটিউট জানায়, আট বছরের বেশি অভিজ্ঞতার পাইলটরা এক থেকে তিন বছরের অভিজ্ঞ পাইলটের চেয়ে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি আয় করেন। অর্থাৎ অভিজ্ঞ পাইলটরা প্রায় তিন গুণ বেশি উপার্জন করেন।
আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সিংয়ে নামার আগে এ পাঁচটি বিষয় ভাবুন১৯ অক্টোবর ২০২৫দেশভিত্তিক তথ্যযুক্তরাজ্য
২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এএনএসের তথ্যানুসারে, পূর্ণকালীন ‘এয়ারক্রাফট পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার’-এর বার্ষিক আয় প্রায় ৯৫ হাজার ২৪০ ইউরো (৮০,৪১৪)। ইআরআইয়ের মতে, গড় বার্ষিক বেতন ৯০ হাজার ২৫৩ ইউরো (৭৮,১৪৬ পাউন্ড), লন্ডনের জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৬২ ইউরো (১০০,০৬০ পাউন্ড)।
জার্মানি
জার্মানির ফেডারেল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসের তথ্যমতে, গড় মাসিক বেতন ১২ হাজার ৫৬৬ ইউরো (বার্ষিক ১,৫০,৭৯২ ইউরো)। মধ্যম আয় ১০ হাজার ২০৭ ইউরো (বার্ষিক ১,২২,৪৮৪ ইউরো), অভিজ্ঞ ও বিশেষায়িত পাইলটদের ক্ষেত্রে তা ৩ লাখ ৪২ হাজার ৭২ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। ইআরআইয়ের তথ্য অনুসারে, এক থেকে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পাইলটের গড় বেতন ৭৩,৭৮৫ ইউরো, আট বছরের বেশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পাইলটদের জন্য ১ লাখ ৩২ হাজার ১১৭ ইউরো।
ফ্রান্স
INSEE জানায়, ‘সিভিল এভিয়েশন টেকনিক্যাল ও কমার্শিয়াল ফ্লাইট অফিসার’দের গড় মাসিক বেতন ৯ হাজার ৩০০ ইউরো (বার্ষিক ১,১১,৬০০ ইউরো)। ERI অনুসারে, অভিজ্ঞ পাইলটদের জন্য গড় বেতন ১ লাখ ৯ হাজার ২৯২ ইউরো।
ছবি: এমিরেটসের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া