অতি দ্রুত নির্বাচনই উত্তরণের পথ: মির্জা ফখরুল
Published: 23rd, July 2025 GMT
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ‘অতি দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই একমাত্র পথ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকেছিলেন, আমরা আলোচনা করেছি। আমরা পূর্বে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব—সেটাই তাঁকে আবার জানিয়েছি। একই সঙ্গে নির্বাচনপ্রক্রিয়া দ্রুত করার ওপর জোর দিয়েছি।’
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন, সেটা তিনি বাস্তবায়ন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া উচিত, যেন আর কোনো অস্পষ্টতা না থাকে। আমরা তাঁকে অনুরোধ করেছি, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবস্থা নেবেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা চাই, দ্রুত নির্বাচন হোক এবং একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা পাক। রাজনৈতিক সরকার না থাকলে যে সমস্যাগুলো আরও বৃদ্ধি পায়, সেটা তাঁকে (প্রধান উপদেষ্টাকে) বলেছি।’
মঙ্গলবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংকট দেখা দিলে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ডাকেন, আমরা যাই। তবে আমি মনে করি, এটা ঘন ঘন হলে ভালো হতো, তাহলে হয়তো অনেক সমস্যা সৃষ্টি হতো না।’ তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যারা সংগ্রাম করেছে, তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্যই প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ডেকেছিলেন। আমরা তাঁকে বলেছি, সরকারের প্রতি আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঐক্য অটুট আছে। মিডিয়ায় অনেক সময় রাজনীতিকদের মধ্যে কথার লড়াই দেখা যায়। এগুলো রাজনীতিরই অংশ। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কথার ব্যবহার থাকবে। এটাই রাজনীতির সৌন্দর্য। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে শত ফুল ফুটতে দিতে হবে, সবার কথা বলার সুযোগ থাকতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সোমবার একটি বিমান দুর্ঘটনায় অনেক কচি প্রাণ ঝরে গেছে। ওই দুর্ঘটনার সূত্র ধরে মাইলস্টোন স্কুলে দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিবকে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ করে রাখে এবং সচিবালয়ে পরীক্ষাসংক্রান্ত জটিলতায় শিক্ষার্থীরা ভেতরে ঢুকে পড়ে। এটা একটা প্রশাসনিক জটিলতা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে, যা সবাই দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘এর কয়েক দিন আগেই গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শক্তি “রেইন অব টেরর” সৃষ্টি করেছিল।’
গোপালগঞ্জের সহিংসতা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। এটি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। সচিবালয়ে যারা প্রবেশ করেছিল, তাদের মধ্যে ফ্যাসিস্টদের লোক ছিল বলেই আমরা মনে করি। তবে জনগণ এসব চক্রান্ত প্রতিহত করবে—আমাদের এই বিশ্বাস রয়েছে।’
বিমান বিধ্বস্তের পর পদক্ষেপ যথাযথ ছিল?
উত্তরায় স্কুলের ওপর বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর সরকারের পদক্ষেপগুলো কি সঠিক ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় হয়তো তাদের অভিজ্ঞতার কারণে কিছু ঘাটতি ছিল.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক সরক র র আম দ র ব এনপ সমস য ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’