নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮, স্বজনকে দেখতে তাঁরা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন
Published: 23rd, July 2025 GMT
নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮ হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় উপজেলার আইড়মারী এলাকার তরমুজ পাম্পের সামনে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ এলাকার জাহিদুল ইসলাম (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী শেলি বেগম (৬০), তাঁদের স্বজন ইতি খাতুন (৪০), আঞ্জুমান আরা (৬০), আন্না বেগম (৬০), আনু বেগম (৫৫), সিমা খাতুন (৪০) ও সাহাব হোসেন (৩৫)। এর মধ্যে মাইক্রোবাসের চালক সাহাব ও সিমা খাতুনের বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায়। বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাহিদুল ইসলামের ছেলে সোহানুর রহমান কুয়েতপ্রবাসী। সোহানুরের স্ত্রী সাফিয়া বেগম সিরাজগঞ্জে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে জাহিদুল ইসলাম স্বজনদের নিয়ে মাইক্রোবাসে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলেন। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আইড়মারী এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। মাইক্রোবাসের আট আরোহীর পাঁচজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়।
নিহত ব্যক্তিদের স্বজন দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের বাসিন্দা আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহতের মধ্যে আমার বেয়াইনও আছে। খবর শোনার পর বেয়াই মিজানুর রহমান নাটোরে চলে গেছেন। বাড়ির লোকজন কান্না করছে। নিহত প্রায় সবার বাড়ি পাশাপাশি।’
আরও পড়ুননাটোরে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের চালকসহ ৬ জন নিহত৫ ঘণ্টা আগেবনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, নারী আটক
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গরুচোর সন্দেহে আবদুস সালাম (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার ভোররাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবদুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। সালাম মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুলালী বেগম (৪৩) নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক দুলালী বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আবদুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, গত শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের গণি মিয়ার গোয়ালঘরে ঢোকেন সালাম। টের পেয়ে গণি মিয়ার স্ত্রী দুলালী বেগম বিষয়টি তাঁর স্বামীকে জানান। পরে তাঁরা গিয়ে গোয়ালঘরে সালামকে দেখতে পান। এরপর দুলালী বেগম আশপাশের লোকজন ও আত্মীয়স্বজনকে খবর দেন। তাঁরা এসে সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে সালাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে পুকুরের তীরে বেঁধে রাখা হয়। আজ ভোররাতে তাঁকে গোয়ালঘরে নিয়ে গিয়ে আবারও নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম মারা যান।
গোয়ালঘরের মালিক আবদুল গণি মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমার একটি শ্যালো মেশিন হারিয়েছে। রাতে যখন গোয়ালে গিয়ে সালামকে দেখতে পাই, তখন প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনকে খবর দিই। পরে তারা এসে মারধর করেছে।’
খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা–পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিকেলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। শনিবার বিকেল পাঁচটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, আবদুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। এর আগে কখনো তাঁর বিরুদ্ধে চুরি বা অপকর্মের অভিযোগ ওঠেনি। তাঁরা দাবি করেন, সালামকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির ছোট তিনটি ছেলে সন্তান রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।