নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮ হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় উপজেলার আইড়মারী এলাকার তরমুজ পাম্পের সামনে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ এলাকার জাহিদুল ইসলাম (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী শেলি বেগম (৬০), তাঁদের স্বজন ইতি খাতুন (৪০), আঞ্জুমান আরা (৬০), আন্না বেগম (৬০), আনু বেগম (৫৫), সিমা খাতুন (৪০) ও সাহাব হোসেন (৩৫)। এর মধ্যে মাইক্রোবাসের চালক সাহাব ও সিমা খাতুনের বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায়। বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।

নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাহিদুল ইসলামের ছেলে সোহানুর রহমান কুয়েতপ্রবাসী। সোহানুরের স্ত্রী সাফিয়া বেগম সিরাজগঞ্জে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে জাহিদুল ইসলাম স্বজনদের নিয়ে মাইক্রোবাসে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলেন। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আইড়মারী এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। মাইক্রোবাসের আট আরোহীর পাঁচজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তিদের স্বজন দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের বাসিন্দা আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহতের মধ্যে আমার বেয়াইনও আছে। খবর শোনার পর বেয়াই মিজানুর রহমান নাটোরে চলে গেছেন। বাড়ির লোকজন কান্না করছে। নিহত প্রায় সবার বাড়ি পাশাপাশি।’

আরও পড়ুননাটোরে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের চালকসহ ৬ জন নিহত৫ ঘণ্টা আগে

বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র ন হত র

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা

অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।

সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা