যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভালো আছে: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 23rd, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভালো আছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। কারণ হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানির বকেয়া পরিশোধ করে দেওয়ার কথা তুলে ধরেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি ও মেটলাইফের বকেয়া পরিশোধ করে দিয়েছি। বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে ইউএস চেম্বার আমাকে চিঠি লিখেছে।’
আজ বুধবার ঢাকায় সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে পাল্টা শুল্ক (৩৫ শতাংশ) আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, সে হার দেশটি কিছুটা কমাবে হবে বলে আশাবাদী সালেহউদ্দিন আহমেদ। আশাবাদী হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘাটতি তো খুব কম। ৬৫০ কোটি মার্কিন ডলারের মতো।’
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকরের আর আট দিন বাকি। এর মধ্যে দেশটির সঙ্গে আলোচনা ও দর-কষাকষি করতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কেমন, জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আলোচনা করতে আগামী ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে।
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতে নীতিগত অনুমোদনের পর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে আজ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আনার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা একটু বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছি। অনেক সময় রাশিয়া বা ইউক্রেন থেকে গম আমদানিতে অনিশ্চয়তা দেখা যায়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখন আমাদের আমদানি বৃদ্ধির দর-কষাকষি চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের গমের মানও ভালো।’
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম যে তুলনামূলক বেশি, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দাম একটু বেশি হলেও অন্যদিক দিয়ে সুবিধা পাওয়া যাবে। তাদের গমে আমিষ কিছুটা বেশি। খুব বেশি, তা নয়, একটু বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত পাল্টা শুল্কের হার কমানো নিয়ে দর-কষাকষি করতে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, লবিস্ট নিয়োগের প্রসঙ্গ নেই এখানে। লম্বা সময় নিয়ে দর-কষাকষির ক্ষেত্রে সাধারণত এ ধরনের লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। এখানে যা করতে হবে, জলদি করতে হবে।
লবিস্টদের প্রতি ইঙ্গিত করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ওরা তো ঢুকতেই পারবে না, ওই অফিসের কাছাকাছি। দর-কষাকষি তো দূরের কথা।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ ক র ন ত উপদ ষ ট য ক তর ষ ট র র
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’