কোনো আলোচনায় গণমানুষ নেই: কামার আহমাদ সাইমন
Published: 23rd, July 2025 GMT
গণ–অভ্যুত্থানে রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল, তাদের এখন আর কোনো আলোচনায় দেখা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে কামার আহমাদ সাইমন এ কথা বলেন। প্রথম আলোর উদ্যোগে এই গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়।
গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় শোক জানানো হয়। এ সময় সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
কামার আহমাদ সাইমন বলেন, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের মতো জটিল বিষয় নিয়ে হাস্যকর বিতর্ক টানা চলছে। কে কয়টা সিট (আসন) বিক্রি করবে, কাকে কত ভাগ দেবে। পুরো আলোচনায় গণ শব্দের কোনো প্রতিফলন নেই। গণ–অভ্যুত্থানে একদম সাধারণ মানুষ নেমেছিল। কিন্তু কোনো আলোচনায় এই মানুষগুলো নেই।
অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘোরার অভিজ্ঞতা থেকে এই নির্মাতা বলেন, এ দেশে অনেকগুলো বাংলাদেশ। একটার সঙ্গে আরেকটার পার্থক্য আছে। এই পার্থক্যগুলোকে এক করতে পারে সংস্কৃতি। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন লাগবে। কিন্তু সমস্যাগুলোও ধরতে হবে।
কামার আহমাদ সাইমন বলেন, যে রিকশাওয়ালা অভ্যুত্থানে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের তুলল, অভ্যুত্থানের পর সে রিকশা ভেঙে দেওয়া হলো। কেউ পাশে দাঁড়াল না। এ আন্দোলনে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁরা পাঁচ তারকা হোটেলে ইফতার নিয়ে যত ব্যস্ততা দেখালেন, তার অর্ধেকটাও দেখাননি এই রিকশাওয়ালাদের মতো মানুষের কাছে যেতে। এটা সাংস্কৃতিক সমস্যা। তাঁরাও দ্রুত ওই কোরাম রাজনীতিরই আরেকটা অংশ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। সেটার জন্য মুরব্বিরা দায়ী।
প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফের সঞ্চালনায় গোলটেবিলে আরও অংশ নেন লেখক ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা, তরুণ গবেষক সহুল আহমদ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ম র আহম দ স ইমন
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’