বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ না থাকা, ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা, কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারের (সিইটিপি) ত্রুটি ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থায় ঘাটতি—এসব সমস্যার কারণে বাংলাদেশের চামড়াশিল্প পিছিয়ে পড়ছে বলে মনে করেন এই খাতের উদ্যোক্তারা। তাঁরা বলেন, দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় শিল্প চামড়া খাত। বৈশ্বিক বাজারেও চামড়াজাত পণ্যের বেশ বড় চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এই খাতের একটি বড় সমস্যা হলো, দেশের প্রক্রিয়াজাত চামড়ার আন্তর্জাতিক মান না থাকা।

দেশে নবমবারের মতো আয়োজিত ‘বাংলাদেশ লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপো’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে উদ্যোক্তারা এ কথাগুলো বলেন। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ), লেদার ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্ট সোসাইটি বাংলাদেশ (এলইটিএসইবি) ও লিমরা এক্সিবিশনস যৌথভাবে রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় প্রদর্শনীটির আয়োজন করেছে। এতে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের মোট ১৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চামড়াজাত পণ্য, চামড়ার জুতা, খেলার জুতা, ব্যাকপ্যাক ও বিভিন্ন কাঁচামাল উৎপাদক। সেই সঙ্গে রয়েছে চামড়াশিল্পে ব্যবহৃত স্কাইবিং, স্ট্যাম্পিং, প্রিন্টিং, লেমিনেশন, সুইং, ফিউজিং, কনভেয়ার, লাস্টিং ও ফিনিশিং মেশিন। এ ছাড়া চামড়াশিল্পে ব্যবহৃত আঠা, সিলিকা জেলসহ নানা ধরনের চামড়াজাত পণ্যও প্রদর্শিত হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এ প্রদর্শনী আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

প্রদর্শনীতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান রিফ লেদার লিমিটেডের পরিচালক মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে চামড়ার অভাব নেই। যদি আমাদের এলডব্লিউজি সনদ থাকত, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও বড় পরিসরে রপ্তানি করা যেত।’ তিনি জানান, এ বছর গরুর লাম্পি রোগের কারণে প্রায় ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়েছে। চামড়া কাটাছেঁড়ায় ত্রুটির কারণে নষ্ট হয়েছে আরও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ চামড়া।

এ বি এস ট্যানারির এমডি ইমাম হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন হয়তো ৪০ সেন্টে চামড়া বিক্রি করি, কিন্তু সার্টিফিকেশন পেলে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কাছে ৩-৪ ডলারেও বিক্রি করা সম্ভব। সিইটিপি ও ট্যানারির কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক উপায়ে না হলে আমাদের রপ্তানি বাড়ানো কঠিন হয়ে যাবে।’

প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘চামড়া শিল্পনগরের আধুনিকায়ন, রপ্তানি প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও গবেষণায় বিনিয়োগ এই খাতকে টেকসই উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে আমাদের চামড়া ও পাদুকা খাতকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পরিবেশবান্ধব ট্যানারি ব্যবস্থা, আধুনিক যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে।’

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক। তাদের সঙ্গে আমাদের সরকারের ভালোভাবে যোগাযোগ করতে হবে। আমাদের শুল্ক যেন প্রতিযোগী দেশ ভারত, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার চেয়ে বেশি না হয়। এটা নিশ্চিত করা গেলে আমাদের দেশের চামড়া খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরাও এগিয়ে আসবেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যুগ্ম সচিব বেবী রানী কর্মকার, লেদার ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্ট সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রদর শ ব যবস থ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব

বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি

২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।

 তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।

আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।

কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন

সম্পর্কিত নিবন্ধ