বাবার কাছ থেকে আইসক্রিম নিয়ে বাড়ি ফিরছিল রাবেয়া, পথে ট্রাকচাপায় নিহত
Published: 25th, July 2025 GMT
বাবার কাছ থেকে আইসক্রিম কিনে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল রাবেয়া খাতুন (১০)। কিন্তু বাড়ি পৌঁছার আগেই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেছে ছোট্ট মেয়েটি। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে নাটোরের সিংড়া উপজেলার খেজুরতলা বাজার মোড়ে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে।
নিহত রাবেয়া সিংড়া উপজেলার আতাইকুলা আদর্শ গ্রামের রাজু আহমেদের মেয়ে। রাজু আহমেদ খেজুরতলা জামে মসজিদের ইমাম।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, রাবেয়া সকাল সাড়ে নয়টার দিকে খেজুরতলা জামে মসজিদে যায়। বাবা রাজু আহমেদ তাকে একটা আইসক্রিম কিনে দেন। আইসক্রিম হাতে নিয়ে রাবেয়া মসজিদের পাশের নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক পার হচ্ছিল। তখন বগুড়াগামী একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে রাবেয়া নিহত হয়। আশপাশের লোকজনের চিৎকার শুনে রাজু আহমেদ সেখানে যান। মেয়ের মৃতদেহ দেখে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে খবর পেয়ে সিংড়া থানা পুলিশ ও ঝলমলিয়া হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করে এবং ট্রাকটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রাজু আহমেদ বলেন, জুমার দিন হওয়ায় তিনি সকাল থেকে মসজিদে কাজ করছিলেন। মেয়ে রাবেয়া তাঁর কাছে এসে আইসক্রিম খাওয়ার বায়না ধরে। তিনি পাশের একটা দোকান থেকে আইসক্রিম কিনে দেন। মেয়েটি আইসক্রিম খেতে খেতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। এক মিনিট পার না হতেই চিৎকার শুনে তিনি সড়কে গিয়ে মেয়েকে ট্রাকের চাকার নিচে মৃত অবস্থায় দেখেন। তখনো আইসক্রিমটি পাশেই পড়ে ছিল।
খেজুরতলা বাজারের ব্যবসায়ী মখলেছুর রহমান বলেন, মহাসড়কের পাশেই বাজারের দোকানপাট। অথচ সেখানে গতিরোধক নেই। তাই যানবাহন বেপরোয়া চলাচল করে। আজও নাটোর থেকে বগুড়ারমুখী একটি ট্রাক বেপরোয়া গতিতে এসে রাবেয়াকে চাপা দিয়েছে। এর আগেও এখানে কয়েকটা দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। ট্রাকটির চালক পালিয়েছেন। তাঁকে ধরার চেষ্টা চলছে। মেয়েটির মরদেহ নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইসক র ম খ জ রতল আহম দ মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’