রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত শিক্ষার্থী মাহতাব রহমান ভূঁইয়াকে (১৪) কুমিল্লার দেবীদ্বারে দাফন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে জানাজা শেষে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার চুলাশ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চুলাশে ভূঁইয়া বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির আঙিনায় পড়ে আছে জানাজায় ব্যবহৃত খাটিয়া। তখন বাড়িতে ছিলেন না মাহতাবের বাবা মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়া ও মা লিপি আক্তারকে। কথা হয় মাহতাবের চাচা তানভীর হায়দার ভূঁইয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুতে বোন নাবিলা কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারছিল না। ভাইয়ের সুস্থতার জন্য সে এক মাস রোজা রাখার মানত করেছিল। গতকাল থেকে সে রোজা রাখে। কিন্তু দুপুরেই মাহতাব চলে যায়। নাবিলা এতটাই ভেঙে পড়ে যে হাসপাতালে নিতে হয়। সেখানেই ওর মা-বাবা গেছে।

বেলা পৌনে একটার দিকে মিনহাজুর রহমান গ্রামের বাড়িতে আসেন। সন্তানের শোকে তাঁর চেহারায় ছিল গভীর বেদনার ছাপ। তিনি কথা বলতেও পারছিলেন না। তাঁর তিন সন্তানের মধ্যে মাহতাব ছিল দ্বিতীয়। বড় মেয়ে নাবিলা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা মাধ্যমের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাহতাব ছিল ইংরেজি মাধ্যমের সপ্তম শ্রেণিতে। তাঁরা উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের ফ্ল্যাটে থাকতেন। মিনহাজুর রহমান গাজীপুরে গ্রেটওয়াল সিরামিকসে এজিএম হিসেবে কর্মরত।

মাহতাবের বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা অনেক জায়গায় খুঁজছিলাম। হঠাৎ অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। চিকিৎসক বলেন, আপনার ছেলের অবস্থা গুরুতর। পরে জানি, ছেলেটা নিজেই চিকিৎসককে বলেছিল, “আঙ্কেল আমার আব্বুকে একটা কল দেন।” তখন চিকিৎসক জিজ্ঞাসা করে, তুমি নম্বর বলতে পারবা, তখন মাহতাব আমার মুঠোফোন নম্বর বলে। এরপর আমরা সেখানে যাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাওয়ার পর ছেলেটা আমাদের উল্টো সান্ত্বনা দিয়ে বলে, “আমার সঙ্গে যারা ছিল সবাই মারা গেছে, তোমরা চিন্তা করো না। আমি সুস্থ হয়ে যাব, ইনশা আল্লাহ। আব্বু-আম্মু তোমরা চিন্তা করো না, আমি ঠিক হয়ে যাব।”ছেলেটার কথাগুলো এখনো কানে ভেসে আসছে।’

মাহতাব রহমানের গ্রামের বাড়ি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হত ব র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।

আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ