পোশাকের ভাঁজে ইয়াবা রেখে পাচারের চেষ্টা, এক রোহিঙ্গা নারীসহ গ্রেপ্তার ২
Published: 26th, July 2025 GMT
কক্সবাজারের রামুতে দুই নারীর কাছ থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গতকাল শুক্রবার রাতে কক্সবাজার-টেকনাফের আঞ্চলিক সড়কে মরিচ্চ্যা এলাকায় যৌথ বাহিনীর তল্লাশিচৌকি থেকে এসব উদ্ধার করা হয়। বিজিবি জানায়, ওই দুই নারী বোরকার নিচে একটি পোশাকের ভাঁজে এসব ইয়াবা লুকিয়ে রেখেছিলেন। তাঁরা এসব ইয়াবা কক্সবাজারে পাচারের চেষ্টা করেছিলেন।
গ্রেপ্তার দুই নারী হলেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুলাতলী গ্রামের মোকতার আহম্মদের স্ত্রী তৈয়বা আক্তার (৩৯) ও কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং এক নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের নূর আলমের স্ত্রী দিলবার খাতুন (৩২)।
বিজিবি সূত্র জানায়, ইয়াবা চালানের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে বিজিবির রামু-৩০ ব্যাটালিয়নের একটি বিশেষ টহলদল ওই তল্লাশিচৌকিতে ছিলেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা সন্দেহজনক একটি ইজিবাইককে সংকেত দেন। পরে ওই ইজিবাইকে থাকা দুই নারীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাঁদের নামিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তাঁরা কিছু স্বীকার করেননি। পরে তাঁদের তল্লাশি করে বোরকার ভেতরে একটি পোশাকের ভাঁজের ভেতর ২৫ হাজার করে ইয়াবা পাওয়া যায়। এসব ইয়াবার বাজারমূল্য আনুমানিক দেড় কোটি টাকা।
রামু-৩০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.
লে. কর্নেল কাজী মাহতাব উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন অভিযানে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৫৫৩ ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিজিবি। এসব ইয়াবার বাজারমূল্য ৩৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। অভিযানে এখন পর্যন্ত ২১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৭ জন বাংলাদেশি পুরুষ আর ২৭ জন রোহিঙ্গা পুরুষ। আর বাকি ৪৯ জনের মধ্যে ২৪ জন বাংলাদেশি নারী আর ২৫ জন রোহিঙ্গা নারী।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫