জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগের স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পর্বের (৪৮তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের ক্লাস শেষ হয়েছে তিন মাস আগে। তবে শিক্ষকদের কোন্দলে এখনো পরীক্ষা হয়নি তাঁদের।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে ৪৮তম ব্যাচের স্নাতকোত্তর শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের পরীক্ষা আটকে আছে। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টি জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভাগটিতে স্নাতকোত্তরে দুই পর্বে পরীক্ষা হয়। প্রথম পর্বের পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত বছরের ২১ নভেম্বর। এরপর দ্বিতীয় বা চূড়ান্ত পর্বের ক্লাস ও শ্রেণি মূল্যায়ন (টিউটোরিয়াল) পরীক্ষা শেষ হয় চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল। কিন্তু এখনো পরীক্ষা শুরু হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৪৮তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের। দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’

জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ওই বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজিদ ইকবাল অভিযোগ করেন, তাঁর থিসিসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পরীক্ষক হিসেবে অধ্যাপক শফিক-উর রহমান ও সহযোগী অধ্যাপক লুৎফর রহমান উদ্দেশ্যমূলকভাবে কম নম্বর দিয়েছেন। ওই দুজনকে এ কাজের জন্য প্রভাবিত করেছেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফসানা হক। আফসানা হক প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গেও জড়িত। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে ১৬ এপ্রিল বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গাণিতিক ও পদার্থ অনুষদের ডিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এ ঘটনার জের ধরে বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাসফিয়া নাহরিন বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের কাছে প্রশ্নপত্র চাওয়া হয়েছে, সেগুলো পেলে আমরা পরীক্ষা নেব। বিভাগের সভাপতি (অধ্যাপক আনিসা নূরী) হেল্পফুল নন। এ ছাড়া বিভাগের পরীক্ষা–সংক্রান্ত গোপনীয় বিষয় কে বা কারা ফাঁস করে বিভাগের সুনাম নষ্ট করেছেন—এসব নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। বিষয়গুলো তদন্তে উঠে আসার পর সমাধান হলে শিক্ষকেরা হয়তো প্রশ্নপত্র দেবেন। তখন পরীক্ষা নেওয়া যাবে।’ বিভাগের কোন কোন শিক্ষক এখনো প্রশ্নপত্র দেননি জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

একই কথা জানিয়েছেন ব্যাচটির স্নাতকোত্তরের একটি কোর্সের শিক্ষক অধ্যাপক শফিক-উর রহমান। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিভাগের সভাপতির বিরুদ্ধে অতি গোপনীয় বিষয় ফাঁসের সন্দেহ বা অভিযোগে ২-৩ জন ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষক পরীক্ষা–সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করছেন না।

এসব বিষয়ে জানতে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আনিসা নূরীর মুঠোফোনে কয়েক দফায় কল এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাহবুব কবির বলেন, তদন্তের কাজ প্রায় শেষের দিকে। দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

সার্বিক বিষয়ে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকদের মধ্যে দুটো পক্ষের দ্বন্দ্বে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উপাচার্য দেশের বাইরে আছেন, তিনি দেশে এলে আমরা প্রয়োজনে প্রশাসনিক সভা করে এটার ব্যবস্থা নেব। এভাবে একটি বিভাগ চলতে পারে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৪৮তম ব য চ শ ক ষকদ র র পর ক ষ র রহম ন শ ষ হয় তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব

বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি

২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।

 তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।

আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।

কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন

সম্পর্কিত নিবন্ধ