রাসুল (সা.) বলেছেন, “দুটি বাক্য এমন আছে, যা উচ্চারণে হালকা, কিন্তু তা মিজানে (পরকালের তুলাদণ্ডে) ভারী এবং আল্লাহর নিকট অত্যন্ত প্রিয়। তা হলো: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি এবং সুবহানাল্লাহিল আযীম।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৬৮২; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৮৪৬)।

সুতরাং বলা যায়, এটি একটি আধ্যাত্মিক অভিব্যক্তি, যা আল্লাহর মহত্ত্ব, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং তাঁর পবিত্রতার স্বীকৃতি প্রকাশ করে। এই জিকির মুমিনের জীবনে শান্তি, ঈমানের দৃঢ়তা এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পথ প্রশস্ত করে।

অর্থ ও তাৎপর্য

‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ এর অর্থ হলো, “আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।”

এই জিকিরে দুটি মৌলিক বিষয় প্রকাশ পায়:

প্রথমত, ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে আল্লাহর পবিত্রতা ও তাঁর সব ধরনের ত্রুটি থেকে মুক্তির স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

দ্বিতীয়ত, ‘ওয়া বিহামদিহি’ বলে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা প্রকাশ করা হয়।

কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, “তাঁরই প্রশংসা যিনি সবকিছুর রব এবং তিনি সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র।” (সুরা ফাতিহা, আয়াত:২; সুরা ইসরা, আয়াত: ১১১)।

আরও পড়ুনইয়া জালালি ওয়াল ইকরামের ফজিলত১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪পাঠের ফজিলত

হাদিসে এই জিকিরের বিশেষ ফজিলত উল্লেখ করা হয়েছে। রাসুল (সা.

) বলেছেন, “যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ বলবে, তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনার চেয়েও বেশি হলেও তা মাফ করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৪০৫)।

আরেকটি হাদিসে আছে, “আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় বাক্য হলো ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১৩৭)।

আরেক হাদিসে আছে, “যে ব্যক্তি সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ বলে, তার জন্য জান্নাতে একটি গাছ রোপণ করা হয়।” (জামে তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৬৪)

হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় তিনবার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ বলবে, সে সব ধরনের বিপদ থেকে সুরক্ষিত থাকবে।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৮৮)।

আরও পড়ুন‘ফজিলত’ বলতে কী বোঝায়১৩ জুলাই ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব হ মদ হ আল ল হ বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ