দেশের শেয়ারবাজারে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন তথা বাজার মূলধন অতিক্রম করেছে বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক। পুঁজিবাজারে একমাত্র দেশীয় ব্যাংক হিসেবে এই ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জন করেছে ব্যাংকটি।

ব্র্যাক ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, এই অর্জন ব্র্যাক ব্যাংকের সফল কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার বিষয়ে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবিচল আস্থার প্রতিফলন। ধারাবাহিক এই সাফল্যের মূলে রয়েছে ব্যাংকের করপোরেট সুশাসন, আর্থিক সক্ষমতা ও দেশি–বিদেশি ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া সেরা ক্রেডিট রেটিং বা ঋণমান।

ব্লু-চিপ শেয়ার হিসেবে বিবেচিত ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে রয়েছে। ১০ টাকা ফেস ভ্যালু বা অভিহিত মূল্যের এই শেয়ারের প্রতিটির দাম গত ২১ জুলাই বেড়ে ৬৩ টাকা ৭০ পয়সায় উন্নীত হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্র্যাক ব্যাংকের ১৯৯ কোটি তালিকাভুক্ত শেয়ারের মধ্যে পরিচালক ও স্পন্সরদের অংশ ৪৬ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হিস্যা ৩৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এ ছাড়া স্থানীয় প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হিস্যা হচ্ছে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্র্যাক ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ৫ হাজার কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। এই ব্যাংক সব গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সূচক, যেমন—আর্নিং পার শেয়ার (ইপিএস), রিটার্ন অন ইকুইটি (আরওই), রিটার্ন অন অ্যাসেট (আরওএ), নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) এবং কর–পরবর্তী মুনাফায় প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী (চলতি দায়িত্ব) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ব্যাংক হিসেবে বাজার মূলধনে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় আমরা অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। এই মাইলফলক ব্র্যাক ব্যাংকের সব শেয়ারধারী ও গ্রাহকের অবিচল আস্থার প্রতিফলন।’

তারেক রেফাত উল্লাহ খান আরও বলেন, ‘এই অর্জন সবার কাছে আমাদের শক্তিশালী সুশাসন সংস্কৃতি, বিচক্ষণ আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং দীর্ঘমেয়াদি ভ্যালু ও ইমপ্যাক্ট তৈরির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে। আমরা টেকসই প্রবৃদ্ধি ও শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে ব্র্যাক ব্যাংক। বর্তমানে সারা দেশে ১৯১টি শাখা, ৯৪টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১ হাজার ১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ও ৮ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়ে এই ব্যাংকের কার্যক্রম বিস্তৃত রয়েছে। আর গ্রাহক সংখ্যা ১৮ লাখের বেশি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম লধন দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের প্রথম ৫ লাখ কোটি ডলারের কোম্পানি এনভিডিয়া

চিপ কোম্পানি এনভিডিয়ার অগ্রযাত্রা চলছেই। এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির প্রাণভোমরা হচ্ছে এই চিপ। ফলে এনভিডিয়ার ব্যবসায়িক বিকাশই এখন প্রযুক্তি খাতের স্বাভাবিক ঘটনা। সে সুবাদে কোম্পানিটি একের পর এক সমৃদ্ধির মাইলফলক অর্জন করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

সফলতার ধারাবাহিকতায় জেনসেন হুয়াং প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি গত বুধবার বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম কোম্পানি হিসেবে ৫ ট্রিলিয়ন বা ৫ লাখ কোটি মার্কিন ডলারের বাজার মূলধনের নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। খবর অ্যারাবিয়ান বিজনেসের।

বাজার মূলধন ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে ওঠার খবরে বুধবার এনভিডিয়ার শেয়ারের দর ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়ে যায়। এই দাম বাড়ার ফলে দিন শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় ৫ দশমিক শূন্য ৩ ট্রিলিয়ন বা ৫ লাখ ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

এক মাইলফলক থেকে আরেক মাইলফলক অর্জন করতে এনভিডিয়ার তেমন একটা সময় লাগছে না। ২০২৩ সালের জুন মাসে কোম্পানিটি প্রথম এক ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি ডলারের বাজার মূলধনের মাইলফলক স্পর্শ করে। তার ২৯ মাসের মাথায় কোম্পানিটি ৫ লাখ কোটি ডলারের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলল।

এক লাখ কোটি ডলারের বাজার মূলধন থেকে দুই লাখ কোটি ডলারে পৌঁছাতে এনভিডিয়ার সময় লেগেছিল ১৮০ দিন। এরপর দুই লাখ কোটি ডলার থেকে তিন লাখ কোটি ডলারে যেতে লেগেছে মাত্র ৬৬ দিন। সর্বশেষ চার লাখ কোটি ডলার থেকে পাঁচ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছাতে সময় লেগেছে ৭৮ দিন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উত্থানের ঢেউয়ে চেপে এগিয়ে চলেছে এনভিডিয়া—যে প্রবণতা শুরু হয়েছে ২০২২ সালের শেষ দিকে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি চালুর পর থেকে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আর গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ১ হাজার ৫০০ শতাংশের বেশি। সেই তুলনায় এ বছর এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক বেড়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ ও ন্যাসডাকে ২৩ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্তমানে এনভিডিয়ার বাজার মূলধন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ছাড়া এখন বিশ্বের যেকোনো দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকারের চেয়ে বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির আকার ২৯ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার, আর চীনের জিডিপি ১৮ দশমিক ৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার। এর পেছনে জার্মানির অবস্থান। সে দেশের জিডিপির আকার ৪ দশমিক ৬৬ ট্রিলিয়ন ডলার।

কোম্পানিস মার্কেট ডট কমের তথ্যানুসারে, বাজার মূলধনের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে আছে মাইক্রোসফট; তাদের বাজার মূলধন ৪ লাখ ২৫ হাজার কোটি ডলার। ৪ লাখ কোটি ডলারের বাজার মূলধন নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে অ্যাপল। ৩ লাখ ৩২ হাজার কোটি ডলার নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে অ্যালফাবেট। ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি ডলার নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে অ্যামাজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বের প্রথম ৫ লাখ কোটি ডলারের কোম্পানি এনভিডিয়া