চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করেছেন, ওয়াসা নগরের হালিশহর এলাকায় রাস্তা কাটার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানছে না। সেখানে ইচ্ছেমতো টিনের ঘেরাও দিয়ে রাস্তা কাটছে। আবার সে কাটা সড়ক ঠিকভাবে সংস্কার করছে না। ওয়াসা হালিশহরকে নষ্ট করে দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ওয়াসার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।

আজ রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভের সঙ্গে এ কথাগুলো বলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। সম্প্রতি কানাডা সফর করে আসার পর নগরের টাইগারপাসে সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রাম ওয়াসা ‘চট্টগ্রাম মহানগরের পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের আওতায় নগরের হালিশহর এলাকার সড়ক কাটছে ওয়াসা। ২০২২ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তবে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে রাস্তা কাটছে বলে দাবি করেন ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আরিফুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশন বর্ষার সময় চার মাস সড়ক কাটা বন্ধ রাখতে বলেছিল। কিন্তু এই প্রকল্পের ঠিকাদার বিদেশি। এভাবে কাজ বন্ধ রাখলে সময় বাড়ানোসহ নানা জটিলতা রয়েছে। তাই সীমিতভাবে ৫০ কিলোমিটারের পরিবর্তে ১৮ কিলোমিটার রাস্তা কাটার সিদ্ধান্ত হয়। তা করা হচ্ছে সিটি করপোরেশনের জ্ঞাতসারে। অস্থায়ীভাবে সড়ক মেরামত করে দেওয়া হলেও বৃষ্টির জন্য তা টেকসই হচ্ছে না। তবে বর্ষার পর তা ঠিক করা হবে।

আজ সংবাদ সম্মেলনে কানাডা সফরের অভিজ্ঞতা, সেখানকার সিটি মেয়রসহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা ও চট্টগ্রাম নগরের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয় তুলে ধরেন শাহাদাত হোসেন।

৯ জুলাই নগরের হালিশহরের আনন্দিপুর এলাকার একটি নালায় পড়ে তিন বছরের শিশু হুমায়রা নিহত হয়। এ ঘটনার তদন্তে সিটি করপোরেশন নিজেদের কোনো দায় খুঁজে পায়নি। তদন্ত কমিটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের উদাসীনতা ও মায়ের কর্মস্থলের অবহেলাকে দায়ী করেছে। এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হলে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নালাটিতে স্ল্যাব দেওয়ার সুযোগ নেই। এখানে শিশুটির পরিবার ও তার মায়ের কর্মস্থলের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। তাদের শিশুটিকে দেখে রাখার দরকার ছিল। শিশুদের দেখাশোনার দায়িত্ব তো পরিবারের। সিটি করপোরেশনের পক্ষে তো প্রত্যেক শিশুর পেছনে গার্ড রাখা সম্ভব নয়। এটি অ্যাবসার্ড। তবে প্রাপ্তবয়স্ক কেউ যদি এভাবে মারা যেতেন, তাহলে সিটি করপোরেশন দায়িত্ব নিত।’

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘এমন একটি এলাকায় কীভাবে পোশাক কারখানার জন্য ভবন নির্মাণে অনুমোদন পেল? কীভাবে বাণিজ্যিক ভবন করেছে? এগুলো সিডিএর দেখার দায়িত্ব। সিডিএর কাছে তা জানতে চাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া: আবদুল আউয়াল মিন্টু

এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে তাতে অংশ নেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজ বুধবার ফেনীতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।

আজ দুপুরে ফেনী শহরের একটি মিলনায়তনে ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পের অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন মিন্টু। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করতে চাই, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। দেশে এখন যে অবস্থা ফেব্রুয়ারি আগেই নির্বাচন হতে পারে। হয়তো জানুয়ারিতেও হয়ে যেতে পারে। কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটা ডেট পেন্ডিং আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তন হলে তার অধীনে ৯০ দিনে নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’

আবদুল আউয়াল মিন্টু আরও বলেন, দেশে যদি এক যুগ, দুই যুগ ধরে নির্বাচিত সরকার না থাকে, তবে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জানমালের উন্নয়ন হবে না। একটি দেশের সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকে তাহলে তারা কখনো ভালো কাজ করবে না।

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘২০০৬ সাল থেকে আমরা নির্বাচন চেয়ে আসছি। ১৯ বছর ধরে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন–সংগ্রাম করে যাচ্ছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন লন্ডনে যোগাযোগ করেছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সেটিতে আস্থা রাখতে চাই। আমরা চাচ্ছি, দ্রুত নির্বাচনটি হোক।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচনে ফেনীর অতীত ইতিহাস সবাই জানে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখানে বিএনপি জয়লাভ করবে। আমাদের দলের নেত্রীও (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করবেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন।’

পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ফেনীর মুহুরী-কহুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন।

ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ওরফে ভিপি জয়নাল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ রেহানা আক্তার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ