পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের পর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

রবিবার (২৭ জুলাই) বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শনিবার রাতে দুই পক্ষ বেড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে। বেড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওলিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি

পঞ্চগড় প্রেস ক্লাবে ১৪৪ ধারা জারি

তিনি বলেন, ‘‘তারাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল মতিন প্রামাণিক বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি সেলিম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’’

‘‘অপরপক্ষে একই গ্রামের শাহ আলমের স্ত্রী হোসনে আরা খাতুন বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেছেন। মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।’’- যোগ করেন ওসি।

গ্রেপ্তার সেলিম হোসেন (৪৮) তারাপুর গ্রামের মৃত সুলতান হোসেনের ছেলে। রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে গ্রামের পুরনো মসজিদে মিলাদ মাহফিলে কিয়াম পড়া নিয়ে একটি ঝামেলা হয়। মসজিদের তৎকালীন ক্যাশিয়ার মতিনসহ একটি পক্ষ কিয়াম পড়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে নতুন মসজিদ নির্মাণ করেন।

সম্প্রতি এ মসজিদের বারান্দা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু একই গ্রামে দুটি মসজিদ নির্মাণে আপত্তি জানায় আরেকটি পক্ষ। শুক্রবার সকালে নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণ করতে গেলে তাতে বাধা দেয় ওই পক্ষ।

এ সময় হাঁসুয়া, ট্যাটা ও লাঠিসোটা নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।

শনিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত হাদিস নামের একজন মারা যান। এ খবর এলাকায় পৌঁছালে ফের দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় অন্তত ২০টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে অভিযোগ উঠে।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোরশেদুল ইসলাম বলেন, “যেহেতু পরিস্থিতি থমথমে। যেকোনো সময় আবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। সে কারণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।”

ঢাকা/শাহীন/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১৪৪ ধ র স ঘর ষ ন হত আহত মসজ দ র ১৪৪ ধ র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া: আবদুল আউয়াল মিন্টু

এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে তাতে অংশ নেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজ বুধবার ফেনীতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।

আজ দুপুরে ফেনী শহরের একটি মিলনায়তনে ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পের অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন মিন্টু। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করতে চাই, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। দেশে এখন যে অবস্থা ফেব্রুয়ারি আগেই নির্বাচন হতে পারে। হয়তো জানুয়ারিতেও হয়ে যেতে পারে। কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটা ডেট পেন্ডিং আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তন হলে তার অধীনে ৯০ দিনে নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’

আবদুল আউয়াল মিন্টু আরও বলেন, দেশে যদি এক যুগ, দুই যুগ ধরে নির্বাচিত সরকার না থাকে, তবে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জানমালের উন্নয়ন হবে না। একটি দেশের সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকে তাহলে তারা কখনো ভালো কাজ করবে না।

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘২০০৬ সাল থেকে আমরা নির্বাচন চেয়ে আসছি। ১৯ বছর ধরে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন–সংগ্রাম করে যাচ্ছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন লন্ডনে যোগাযোগ করেছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সেটিতে আস্থা রাখতে চাই। আমরা চাচ্ছি, দ্রুত নির্বাচনটি হোক।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচনে ফেনীর অতীত ইতিহাস সবাই জানে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখানে বিএনপি জয়লাভ করবে। আমাদের দলের নেত্রীও (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করবেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন।’

পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ফেনীর মুহুরী-কহুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন।

ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ওরফে ভিপি জয়নাল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ রেহানা আক্তার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ