গণ–অভ্যুত্থানে কারফিউ ভাঙার ‘গানের মিছিল’ স্মরণে ছাত্র ফ্রন্টের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
Published: 27th, July 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় কারফিউ ভাঙার ‘গানের মিছিল’ স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কারফিউ ভাঙার গান’–এর আয়োজন করা হয়েছে। অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মাসব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আজ রোববার সন্ধ্যায় টিএসসির সামনে সঞ্জীব চত্বরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গত বছর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সাংস্কৃতিক কর্মীরা ২৬ জুলাই ‘গানের মিছিলের’ মাধ্যমে কারফিউ ভাঙেন। এই কর্মসূচি গণ-অভ্যুত্থানে নতুন এক মাত্রা যুক্ত করেছিল। সেই দিনটি স্মরণ করা হয় আজ। এ সময় ‘কোরাস’ নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সঞ্জীব চত্বরে অস্থায়ী শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং নতুন সাংস্কৃতিক সংগঠন কোরাসের সদস্যরা। এ সময় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের পক্ষে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তামজিদ হায়দার চঞ্চলও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ স্মরণে এবং উত্তরার মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হলো বলিদান.
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফের বাবা নাসির উদ্দীন আহমেদ ও মা সাফাত সিদ্দিকী। আহনাফের মা বলেন, গত বছর যখন শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মানুষ ফেটে পড়ে, সে সময় শেখ হাসিনার সরকার সেই আন্দোলনকে কারফিউ দিয়ে দমন করার চেষ্টা চালায়। ঠিক সেই সময় ২৬ জুলাই কারফিউ ভাঙার গানের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তিত্বরা এগিয়ে আসেন।
শহীদ আহনাফের বাবা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাই বিচার। সরকারের কাছে আবেদন, যত দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করুন। জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই।’
সভাপতির বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিয়ে শহীদ পরিবার এবং জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আজ শহীদদের স্মরণ মানে শুধু স্মৃতিচারণা নয়, নতুন সময়ের লড়াইয়ের জন্য সংগঠিত হওয়ারও প্রয়োজন। শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের লড়াই জারি রাখতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গান, কবিতা ও আলোচনা করেন সমগীতের বিথী ঘোষ, সহজিয়া ব্যান্ডের রাজীব আহমেদ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য, শিল্পী অরূপ রাহী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর জামশেদ আনোয়ার, রহমান মুফিজ, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি মফিজুর রহমান, মাহা ও ওয়ারদার গান, মীর সাখাওয়াত, ফেরদৌস আরা, আনন্দলোক, কুহক প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র ফ রন ট র আহম দ স মরণ
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’