নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের (বালুবোঝাই নৌযান) ধাক্কায় একটি মাছ ধরার নৌকা ডুবে গেছে। এ সময় নদীতে ডুবে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন এক জেলে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে হাতিয়ার সুখচর ইউনিয়নের কাছে মেঘনা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত জেলের নাম মাইন উদ্দিন (১৭)। তিনি হাতিয়া উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শুল্লুকিয়া গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে। নিখোঁজ জেলের নাম আরাফাত উদ্দিন‌ (১৮)। তিনি সুখচর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দেলোয়ার মো.

হোসেনের ছেলে। তাঁরা দুজনই ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ছিলেন। এই দুজনের সঙ্গে মাছ ধরার নৌকাটিতে আরও দুজন থাকলেও তাঁদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন আশপাশের জেলেরা। তাঁরা হলেন মো. আফসার (৪০) ও আবদুর রহমান (৩০)। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

হাতিয়ার নলচিরা নৌ পুলিশ ও স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত তিনটার দিকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে হাতিয়ার সুখচর ইউনিয়নের মেঘনা মোহনায় মাছ ধরছিলেন চার জেলে। এ সময় বাল্কহেডটি নৌকাটিকে ধাক্কা দিলে চার জেলে নদীতে পড়ে যান। খবর পেয়ে আশপাশের জেলেরা দুজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। তবে দুজন নিখোঁজ থাকায় ভোরে নলচিরা নৌ পুলিশের সদস্যরা নদীতে তাঁদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে সকালের দিকে একজনের লাশ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিয়ার নলচিরা নৌ পুলিশের পরিদর্শক আশীষ চন্দ্র সাহা। দুপুরে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এক জেলের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এখনো একজন নিখোঁজ। তাঁকে খুঁজে পেতে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন য ন র এক জ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ