চাঁদাবাজিতে গ্রেপ্তার সিয়াম-সাদাব রাজনীতিতে জড়িয়ে টিউশন ছাড়েন
Published: 28th, July 2025 GMT
রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা দাবির ঘটনায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে দুজন রাজশাহীর কেচুয়াতৈল এলাকার বাসিন্দা। সম্পর্কে তারা দুই ভাই। বড় ভাই সাকাদাউন সিয়াম ও ছোট ভাই সাদমান সাদাব—দুজনেই প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী।
তাদের বাবা এসএম কবিরুজ্জামান গ্যাস ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী। মাসিক বেতন মাত্র সাড়ে ছয় হাজার টাকা। এক সময় নাটোরের গোপালপুরে বাড়ি ছিল তাদের, কিন্তু ব্যবসায় মার খেয়ে দেনার দায়ে তা বিক্রি করে এক দশক আগে রাজশাহীতে চলে আসেন। এখন রাজশাহীর কেচুয়াতৈল এলাকায় মেসার্স এন বি ফিলিং অ্যান্ড সিএনজি স্টেশনের পাশে একটি ছোট ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন। বাড়ি ভাড়া মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা।
সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৪টায় সরেজমিন ফিলিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, কবিরুজ্জামান গাড়িতে গ্যাস দিচ্ছেন। সেখানে তিনি বলেন, “আমার আয় খুব কম। সাড়ে ৬ হাজার টাকা বেতন পাই। ভাড়া দিতেই প্রায় সব শেষ হয়ে যায়। ছেলেদের পড়াশোনায় মাসে ২০ হাজার টাকার মতো লাগে। কেউ কিছু দিলে, সেটা দিয়েই চলে।”
তিনি আরো বলেন, “আমার ছেলেরা আগে টিউশন করত। কিছুদিন হলো ওরা তা বন্ধ করে দিয়েছে। শুনেছি, রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। রবিবার (২৭ জুলাই) সকালে জানতে পারলাম, ওরা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার। আমি অবিশ্বাস্য মনে করছি। ওরা দাড়ি রাখে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। চাঁদাবাজির মতো কাজ— এটা আমার মাথায়ই ঢোকে না।”
চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে
সাকাদাউন সিয়াম সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি রেসিস্টেন্স ডে উদযাপন কমিটির সদস্য। দুই ভাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সমন্বিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদ্য স্থগিত হওয়া ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিয়াদের সঙ্গে তাদের একাধিক ছবি রয়েছে।
ফিলিং স্টেশনের কয়েকজন সহকর্মী বলেন, কবিরুজ্জামানের জীবনে কখনো বিত্তবৈভব ছিল না, এখনো নেই। তার ছেলেরা এমন কাণ্ডে জড়াতে পারে— এ খবর পেয়ে তারাও বিস্মিত।
সিয়াম ও সাদাব রাজশাহীর খড়খড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজশাহী মহানগর সমন্বয় কমিটির প্রধান মোবাশ্বের আলী বলেন, “ওরা আমাদের স্কুলের ছাত্র ছিল। এরা ভালো ছেলে।’’
শনিবার (২৬ জুলাই) রাত ৮টার দিকে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, মো.
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’