চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অফিস সহকারী উসমান সিকদার খুনের মামলায় গ্রেপ্তার এক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আসামির নাম মো. রাসেল। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান জিনিয়া শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আসামি রাসেলের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ জানায়, বিমানবন্দরসংলগ্ন সরকারি কোয়ার্টারের বাসায় থাকতেন উসমান সিকদার। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালে বিমানবন্দরসংলগ্ন লিংক রোড থেকে উসমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ভাই এমরান সিকদার বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশনের ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহিম খলিল, নিরাপত্তাকর্মী বাদল মজুমদার ও ফটিকছড়ির মো.

রাসেল নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইব্রাহিম, বাদল ও তাঁর সহযোগী মো. আরিফকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে ইব্রাহিম আদালতে জবানবন্দি দেন।

এতে বলা হয়, ফটিকছড়ির মো. রাসেল নামের এক ব্যক্তি উসমান সিকদারের সঙ্গে ৩৭ হাজার রিয়াল শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পাচার করানোর চুক্তি করেন। কিন্তু পরে উসমান রাসেলকে জানান, রিয়ালগুলো বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা তাঁর কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছেন। রাসেলের কথামতো বিমানবন্দরের অভিবাসন পার হওয়া যাত্রীর হাতে তুলে দিতে পারেননি। বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশনের ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহিম খলিলসহ অন্যরা ভাগ–বাঁটোয়ারা করে নেন। এদিকে রাসেল তাঁর রিয়ালের জন্য চাপ দিতে থাকেন। তখন উসমান রিয়ালগুলো ভাগ–বাঁটোয়ারায় কারা কারা জড়িত, তা বলে দেবেন বলে হুমকি দেন। এতে বিমানবন্দরের জড়িত কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। পরে তাঁরা বাসা থেকে তুলে নিয়ে উসমানকে খুন করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উসম ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ