যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটানে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সন্তান দিদারুল ইসলাম রতন (৩৬)। তিনি নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা ছিলেন। তার মৃত্যুর খবরে স্বজনদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

দিদারুল ইসলাম রতনের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার মাগুরা এলাকায়। রতন এলাকার মো.

আব্দুর রব ও মিনারা বেগমের ছেলে। তার দুই বোন নাঈমা ও নাদিমা। তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। রতনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কসের পার্চেস্টার এলাকার বাসিন্দা। 

গতকাল সোমবার ম্যানহাটনের মিডটাউন অফিস টাওয়ারের ভেতরে এক বন্দুকধারী হামলা চালিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামসহ চারজনকে হত্যা করে। হামলাকারী পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

নিউ ইয়র্কে গুলিতে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা ‘বীর বাংলাদেশি’

পুতিনকে এবার ১২ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) কুলাউড়ার মাগুরা এলাকায় রতনের বাড়িতে কথা হয় তার আত্মীয় তাহেরা বেগম দুলির সঙ্গে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‍“আমার ভাইপো রতনের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তিনি খুব শান্ত, ভদ্র, মেধাবী ছেলে ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশে চাকরি করতেন। ওকে নিয়ে কত গর্ব করতাম আমরা, এখন সে নেই...।”

দুলির চোখের জল যেন থামতেই চাইছিল না। তিনি জানান, নিউইয়র্কে থাকা রতনের মা-বাবা, স্ত্রী ও বোনরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হাসপাতাল থেকে মরদেহ বুঝে নেওয়ার সময় তাদের ছিল শুধু দীর্ঘশ্বাস আর বুকফাটা কান্না।

রতনের জন্ম মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার শিক্কারমহল গ্রামে। তার বাবা আব্দুর রব দীর্ঘদিন কুয়েতে কর্মরত ছিলেন। পরে কুলাউড়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। রতন ২০০৯ সালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। উচ্চশিক্ষা শেষ করে যুক্ত হন নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে।

এলাকার শিক্ষক আবু জাফর বলেন, “রতন আমার ছাত্র ছিল। মাগুরা এলাকার গর্ব ছিল। দেশে থাকতে সে ভালো খেলোয়াড় ছিল, খুবই মেধাবী ছিল। তার মৃত্যু আমাদের ক্রীড়াঙ্গনেও গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে।”

সরেজমিনে দেখা যায়, রতনের শূন্য বাড়ির সামনে মানুষের ভিড়, মুখে কারো কোনো শব্দ নেই। 

রতনের প্রতিবেশী ও এলাকার যুবক হাসিম খান ভূট্টো বলেন, “রতন ভাই ছিলেন আমাদের গর্ব। ছোটবেলা থেকেই তিনি পড়ালেখায় দারুণ ছিলেন। খেলাধুলাতেও এগিয়ে ছিলেন। পরে শুনি, আমেরিকায় গিয়ে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন—তখন খুব গর্ব লাগতো। এলাকায় এসে আমাদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন। তার মতো ভদ্র, নম্র একজন মানুষকে এভাবে হারাব, তা কখনো কল্পনাও করিনি। রতন ভাইয়ের মৃত্যু শুধু তার পরিবারের নয়, পুরো মাগুরা এলাকারই অপূরণীয় ক্ষতি।”

ঢাকা/আজিজ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ন হত য ক তর ষ ট র ন উ ইয়র ক কর মকর ত এল ক র রতন র

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে বন্দুকধারীর গুলিতে পুলিশসহ নিহত ৫

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানের মধ্যাঞ্চলে এক বন্দুকধারীর গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও রয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। আরও বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়ে নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস জানান, একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘আঘাত’ করা হয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান মেয়র।

যদিও নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র পরবর্তী সময় বলেন, তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত কিংবা অস্বীকার—কোনোটাই করতে পারছেন না।

পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল ৩৪৫ পার্ক এভিনিউ এবং ইস্ট ফিফটি ওয়ান স্ট্রিটের চারপাশ এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারী নিহত হয়েছেন। যদিও তাঁর নাম-পরিচয় এখনো জানানো হয়নি।

এক্সে পোস্ট দিয়ে পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিসচ লিখেন, এ মুহূর্তে ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে জানান, একটি অফিস ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘আমি তখন পাশেই ছিলাম। তিনি (বন্দুকধারী) একের পর এক ফ্লোরে ঘুরছিলেন।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানান, ঘটনাটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোন ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির একটি কার্যালয়ে ঘটেছে।

ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স জড়ো করা হয়েছে। আকাশে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিক ও উৎসুক জনতাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

ম্যানহাটানের ওই এলাকায় বেশকিছু পাঁচ তারকা হোটেল এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তাহলে কি ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠছে
  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দিদারুলের কুলাউড়ার বাড়িতে শোকের ছায়া
  • তিনি ছিলেন আমাদের গর্ব—নিহত দিদারুলকে নিয়ে বললেন নিউইয়র্কের মেয়র
  • নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে বন্দুকধারীর গুলিতে পুলিশসহ নিহত ৫
  • উগান্ডায় মামদানির বিয়ের অনুষ্ঠানে জমকালো আয়োজন, ছিল মুখোশধারী নিরাপত্তারক্ষী