জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সনদে অন্তর্ভুক্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হবে—সনদের এ বিষয়টি নিয়েই মূলত আপত্তি। দলগুলো বলছে, জুলাই সনদকে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে এনে তা বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিতে হবে। না হলে পুরো সংস্কারপ্রক্রিয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে। তবে এ খসড়ার সঙ্গে মোটামুটি একমত বিএনপি।

গতকাল মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার ফাঁকে সাংবাদিকদের কাছে সনদের খসড়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায় কয়েকটি দল। আজ বুধবার দুপুরের মধ্যে দলগুলোকে এ খসড়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মতামত জানাতে বলেছে ঐকমত্য কমিশন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শেষ করে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। গতকাল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, সংসদে নারী আসন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে এসব বিষয়ে গতকালও ঐকমত্য হয়নি। দ্বিতীয় পর্বের আলোচ্য সূচিতে থাকা ২০টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে এখনো ৮টি প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়নি।

আলোচনা শেষ না হলেও গত সোমবার জাতীয় সনদের একটি খসড়া দলগুলোকে দেয় ঐকমত্য কমিশন। খসড়ায় বলা হয়েছে, জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের

মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে অঙ্গীকার করবে রাজনৈতিক দলগুলো। সেখানে মোট সাতটি অঙ্গীকার করার কথা বলা আছে।

রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার আনতে ছয় সংস্কার কমিশনের যেসব প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে, সেগুলো নিয়ে তৈরি হবে জাতীয় সনদ। তবে কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, খসড়ায় তা উল্লেখ করা হয়নি। দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর বিষয়গুলো সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

খসড়া নিয়ে দলগুলোর বক্তব্য

সনদের কিছু অংশ ‘বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। গতকাল তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা যেকোনো একটি পদ্ধতিতে এই সনদকে আইনগত বৈধতা দেওয়ার পক্ষে। এটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা না হলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিয়শ্চয়তার দিকে চলে যেতে পারে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হচ্ছে, সেগুলো বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। তাঁর মতে, সেটি দুইভাবে হতে পারে। অধ্যাদেশের মাধ্যমে একটি আইনি কাঠামো গঠন করে পরে নির্বাচিত সংসদে তা অনুমোদন অথবা গণভোটের মাধ্যমে জনগণের চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া। জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদের একটি খসড়া ঐকমত্য কমিশনের কাছে জমা দেবে বলেও জানান তিনি।

* তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। * আজ আবার আলোচনা। * খসড়া নিয়ে মতামত জানাতে হবে আজকের মধ্যেই।

খসড়াটি দলীয়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই খসড়ায় আমরা মৌলিক সংস্কারের প্রতিটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত দেখতে চাই। যদি তা বাদ দেওয়া হয়, তাহলে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সই করব কি না।’

আখতার বলেন, আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে তারা ‘লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার’ (আইনি আদেশ) করার প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে যে সংস্কারগুলো রাজনৈতিক দলগুলো সম্মিলিতভাবে মেনে নিচ্ছে, তা যেন পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসা কোনো দল উপেক্ষা করতে না পারে, এ নিশ্চয়তাও চান তাঁরা।

শুরু থেকে সংবিধান পুনর্লিখনে গণপরিষদ গঠনের কথা বলে আসছে এনসিপি। এ বিষয়ে গতকাল আখতার হোসেন বলেন, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান পুনর্লিখন করা গেলে সঠিকভাবে সব বিষয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।

সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য ছয়টি বিকল্প পদ্ধতির কথা বলেছিল ঐকমত্য কমিশন। সেগুলো নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। বিষয়টি উল্লেখ করে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি। আলোচনার পদ্ধতি নিয়েই আলোচনা হয়নি, অথচ তারা খসড়া প্রকাশ করেছে। এটা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।’

জুলাই সনদের খসড়াকে আইনি বাধ্যবাধকতাহীন একটি দুর্বল উপস্থাপনা বলে অভিহিত করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ গতকাল দলের নিয়মিত বৈঠকে এ প্রতিক্রিয়া জানান।

ইসলামী আন্দোলনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খসড়ায় একবারের জন্যও পতিত ফ্যাসিবাদের মূল হোতা ও অশুভ চক্রের প্রধান শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করা হয়নি। জুলাই সনদের ক্ষেত্রে প্রধান চাওয়া ছিল, এর আইনি মর্যাদা ও বাধ্যবাধকতা। কিন্তু খসড়া সনদে এ সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। ফলে সনদের আদতে কোনো তাৎপর্য আছে বলে মনে হয় না।

অন্যদিকে ঐকমত্য কমিশনের খসড়ার সঙ্গে মোটামুটি একমত বিএনপি। গতকাল দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, খসড়ার সঙ্গে তাঁরা মোটামুটি একমত। অঙ্গীকারের বিষয়েও বিএনপি একমত। খসড়ায় শব্দ-বাক্য গঠন-সংক্রান্ত বিষয়ে বিএনপি তাদের পর্যবেক্ষণ আজ কমিশনকে জানাবে।

কাল সনদ চূড়ান্ত করার আশা

গতকাল দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার শুরুতে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের প্রাথমিক খসড়া পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত দলগুলোর মন্তব্যের জন্য তাঁরা অপেক্ষা করবেন। তিনি আশা করছেন, বিভিন্ন মন্তব্য সমন্বয় করে একটি চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করতে পারবেন। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সেসব বিষয় ও মন্তব্যগুলো নিয়ে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সনদের চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছাতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

গতকাল সন্ধ্যায় আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, কেউ কেউ মৌখিকভাবে সনদের খসড়ায় কিছু কিছু সংশোধনীর কথা কমিশনকে বলেছেন। বড় ধরনের আপত্তির কথা কমিশন এখনো শুনতে পায়নি। কমিশন এখনো আশাবাদী, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ রূপ দাঁড় করানো যাবে।

গতকালের আলোচনা

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলেও এ সরকারের রূপরেখা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। গতকালের আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন রূপরেখা নিয়ে একটি সংশোধিত প্রস্তাব দেয়। তবে সেটি নিয়েও ঐকমত্য হয়নি। প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের জন্য কয়েকটি ধাপে বিকল্পের কথা আছে।

আলোচনার এক পর্যায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রস্তাবের প্রথম কয়েকটি ধাপ নিয়ে ঐকমত্য আছে। এর পরের ধাপ কী হবে, সেটা ঠিক করার বিষয়টি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।

তবে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ কয়েকটি দল বিষয়টি পরবর্তী সংসদের জন্য ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। পরে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আলোচনা থেকে বোঝা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে গেলে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (ভিন্নমত) দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। কমিশন এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত জানাবে।

সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০টি করা এবং সরাসরি ভোটের বিধান করার প্রস্তাব দিয়েছিল সংস্কার কমিশন। কিন্তু তাতে ঐকমত্য না হওয়ায় কমিশন নতুন প্রস্তাব দেয়। তাতে বলা হয়, ৩০০ সাধারণ আসনের মধ্যে দলগুলো এক-চতুর্থাংশ বা এক-পঞ্চমাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। গতকালও এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।

গতকাল এ বিষয়ের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, সরাসরি নির্বাচনে নারী প্রার্থী দিতে জামায়াতের সমস্যা হবে না। জমিয়তে ওলামা ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব দলের ক্ষেত্রে নারী প্রার্থী দিতে ‘টেকনিক্যাল’ সমস্যা হবে। ইসলামী আন্দোলন যে সংস্কৃতির দল, তাদের পক্ষে নারী প্রার্থী দেওয়া কঠিন। তাই নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক না করে বলা যায়, এ বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। যারা পারবে, নারী প্রার্থী দেবে।

গতকালের আলোচনা শেষে আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনায় বিভিন্ন রকম প্রস্তাব এসেছে। পর্যায়ক্রমে নারী প্রতিনিধিত্ব কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে ঐকমত্যের কাছাকাছি আসা গেছে। বুধবার এ বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে একটি লিখিত ভাষ্য দেওয়া হবে। কমিশন আশা করছে, সেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

আলোচনায় অন্যদের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স ক র প রস ত ব ঐকমত য হয়ন প রস ত ব দ য় জ ল ই সনদ র ঐকমত য হয় সনদ র খসড় জ ত য় সনদ র সদস য র আল চ র পর খ র জন য ইসল ম আপত ত এনস প খসড় য় ব ষয়ট খসড় র গতক ল ব এনপ শ চয়ত

এছাড়াও পড়ুন:

বাকৃবিতে কম্বাইন্ড ডিগ্রি চান শিক্ষার্থীরা, একমত না শিক্ষকরা

প্রাণিসম্পদ খাতের সমতা ও কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে নারাজ অনুষদের শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে অনুষদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেআর মার্কেট, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হয়ে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে তারা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। উপাচার্য বিদেশ ভ্রমণে থাকায় তার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. জিএম মুজিবর রহমান।

এরপর আবার মিছিল নিয়ে ভেটেরিনারি অনুষদের করিডর প্রদক্ষিণ করে পশুপালন অনুষদের সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে একটি স্মারকলিপি অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন কাছে প্রদান করেন তারা। 

আরো পড়ুন:

কুবির নজরুল হল থেকে গুলি ও গাঁজা উদ্ধার

৩৫ বছর পর রাকসু তফসিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

স্মারকলিপিতে তারা বলেন, দেশে বর্তমানে ভেটেরিনারি সায়েন্স ও অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রিকে একীভূত করে কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে একটি ডিগ্রিতে প্রাণি চিকিৎসা ও উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকায় গ্র্যাজুয়েটরা সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সব ধরনের পদের জন্য আবেদন করতে পারছেন। অথচ বাকৃবিতে এখনো দুটি অনুষদ পৃথকভাবে থাকায় অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েটরা চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অবহেলিত হচ্ছে।

তারা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন ২০১৯ অনুযায়ী কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের প্র্যাকটিসের স্বীকৃতি থাকলেও অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েটদের ক্ষেত্র একেবারেই সংকুচিত করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি বেসরকারি খাতেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শুধু ডিভিএম বা কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি, ডেইরি, নিউট্রিশন ও জেনেটিক্স বিভাগের প্রভাষক পদে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি বাদ দিয়ে ডিভিএম ও কম্বাইন্ডদের উল্লেখ্য করে সার্কুলার দেওয়া হচ্ছে। অথচ উপর্যুক্ত বিষয়গুলো অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রির মূল পাঠ্যসূচি। এমনকি ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইনেও ভেটেরিনারির সংজ্ঞাতে উৎপাদন সংশ্লিষ্ট সব বিষয় প্রবেশ করিয়ে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েটদের কর্মপরিধি একদম সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা শিক্ষা নিচ্ছি দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের গুরুত্বপূর্ণ কোর বিষয়ের ওপর। অথচ বাস্তবে আমাদের কোনো স্বীকৃতি নেই। আমাদের সিনিয়ররাও চরম হতাশা ও পেশাগত অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়ন ও জাতীয় পর্যায়ে দক্ষ মানবসম্পদ নিশ্চিত করতে হলে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি ও ভেটেরিনারি সায়েন্সের সমন্বয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু করা সময়ের দাবি। প্রাণি চিকিৎসা ও উৎপাদন- দুই ক্ষেত্রেই প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ও কর্মসংস্থানের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে কম্বাইন্ড (বিএসসি ইন ভেট সাইন্স এন্ড অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি) ডিগ্রি চালু করতে হবে।

এ বিষয়ে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন বলেন, “আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদ ৬৪ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং এটা কম্বাইন্ড করার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমরা শিক্ষকরা একমত না। উপাচার্য স্যার বিদেশ থেকে এসে আমাদের ডাকলে আমরা সেভাবে আলোচনা করব।” 

ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. জিএম মুজিবর রহমান বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির স্মারকলিপিটি হাতে পেয়েছি। এখানে দুই অনুষদের সমঝোতার বিষয় রয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছুটি শেষে দেশে এসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

সোমবার থেকে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধনের মাধ্যমে তাদের দাবির পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন।

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক নয়, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পক্ষে বিএনপি
  • তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে একমত হলেও প্রধান উপদেষ্টা মনোনয়নের প্রক্রিয়ায় মূল বিরোধ: আলী রীয়াজ
  • ২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
  • জুলাই সনদের খসড়া অসম্পূর্ণ, কিছু অংশ বিপজ্জনক: জামায়াত
  • বাকৃবিতে কম্বাইন্ড ডিগ্রি চান শিক্ষার্থীরা, একমত না শিক্ষকরা
  • জুলাই সনদের খসড়া গ্রহণ করতে পারি না: এনসিপি
  • জুলাই সনদের খসড়া প্রস্তুত, পুলিশ কমিশনে ঐকমত্য
  • নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্দিষ্ট দিনের কথা বলেননি: জামায়াত
  • প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছরে ঐকমত্য