‘ভাইবোনেরা রাস্তায় রক্ত দিচ্ছে, আমি ঘরে বসে থাকব কেন?’— এই প্রশ্ন থেকেই রাজধানী ঢাকার নতুনবাজারের রাস্তায় নেমেছিলেন রনি। আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। আজো শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন চারটি রাবার বুলেটের যন্ত্রণা।

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মেহেদী হাসান রনি। জুলাই ২০২৪-এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সেই উত্তাল দিনগুলোতে তিনি হয়ে ওঠেন নতুনবাজারের মিছিলে সবচেয়ে পরিচিত মুখ। পুলিশের রাবার বুলেট তার শরীর ঝাঁঝরা করে দেয়। তিনি আজ লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে আছেন।

১৩ ও ১৪ জুলাই পুলিশের দমন-পীড়নের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই রনির ভেতরে ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। ১৫ জুলাই তিনি সহপাঠীদের নিয়ে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন নতুনবাজার ব্লকেড কর্মসূচিতে। সেখান থেকেই শুরু হয় তার জীবনের ভয়ঙ্কর অধ্যায়।

আরো পড়ুন:

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি

সেই রাতেই শুরু হয় হামলা, হুমকি, ভীতি প্রদর্শন। বন্ধু আহত হয়েছেন, নিজে হুমকি পেয়েছেন, কিন্তু পিছিয়ে যাননি রনি। সাতারকুলে থাকার সময় একাধিকবার ফোনে ভয় দেখানো হয়েছিল তাকে। তবে তার কণ্ঠে ছিল দৃঢ়তা।

১৮ জুলাই ভোরে তিনি আবারো রওনা দেন নতুনবাজারের দিকে। তখন বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থীরা একত্রিত হন। রনি  ছিলেন মিছিলের সামনের সারিতে। মাইকে স্লোগান দিতে দিতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু লিংক রোডে পৌঁছাতেই পুলিশ ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় শুরু হয়, ধেয়ে আসে টিয়ারশেল আর রাবার বুলেটের বৃষ্টি।

কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রনি গুলিবিদ্ধ হন। শরীরে একে একে লাগে ১৪টি রাবার বুলেট। সহপাঠীরা আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে নিরাপত্তাজনিত কারণে গোপনে আত্মীয়ের বাড়িতে রাখা হয়। এরপর নদীপথে কৌশলে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কিশোরগঞ্জের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে তার শরীর থেকে নয়টি বুলেট বের করা হয়। গলার ভেতরে থাকা একটি বুলেট বের করতে আলাদা করে অপারেশন করতে হয়। কিন্তু এখনো তার শরীরে রয়ে গেছে চারটি রাবার বুলেট। আজো তিনি সেই বুলেটের ব্যথা বয়ে বেড়াচ্ছেন।

শরীরে ক্ষতচিহ্ন আছে, কিন্তু চোখে অনুতাপ নেই। তিনি শুধু বলেন, “আমার শরীরে গুলি লেগেছে- মানে ওরা হাজার শিক্ষার্থীর কণ্ঠ রোধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি থামিনি, আজো থামিনি।”

ঢাকা/রাকিবুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস

জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।

বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ