বাংলাদেশে যারা ক্ষমতাবান হচ্ছে, তারাই স্বৈরাচারী হয়ে যাচ্ছে এবং অল্প সময়ের মধ‍্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কমে যাচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের মাত্র এক বছরের ব্যবধানে অনেকে আওয়ামী লীগের চরিত্র ধারণ করছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে এক প্রীতি সম্মেলনে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এ কথা বলেন। দলটির যুব সংগঠন আমার বাংলাদেশ (এবি) যুব পার্টির তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মজিবুর রহমান বলেন, ‘আগে আমরা ভয় ও নির্যাতনের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু এখন আমরা এক নতুন বাংলাদেশের দ্বারপ্রান্তে। এই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকসহ বহু সাধারণ মানুষ জীবন দিয়েছে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার সন্তান নিহত হয়নি। আবু সাঈদের মৃত্যু জাতিকে জাগিয়ে তোলে—এটি বিবেকের বিপ্লব ছিল।’

এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইতিহাস বলে, গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতিত ফ্যাসিবাদীরা আর ফিরে আসতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে অনেকে আওয়ামী লীগের চরিত্র ধারণ করছে। মজলুম থেকে হয়ে উঠছে জালিম।’

মজিবুর রহমান বলেন, ‘হাসিনার দুঃশাসন আমাদের শিক্ষা দেয়নি। আজ ধর্মভিত্তিক দলগুলো যেভাবে অহংকার করছে, তা জনগণ পছন্দ করছে না। ক্ষমতার চক্রটি একধরনের “চাঁদাবাজি পদ্ধতি” তৈরি করেছে। এ ব্যবস্থাকে ভাঙতেই আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলেছি।’

এবি পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার চূড়ায় থাকা ব্যক্তিরাও ইতিহাসে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমান এর বড় উদাহরণ।

আলোচনা সভায় এবি যুব পার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুলের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে কর্নেল (অব.

) দিদারুল আলম, লে কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ বি এম খালিদ হাসান, শহীদ ফারদিনের বাবা নুর উদ্দিন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি জাহেদুজ্জামান, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি আদনান আহমেদ, বিপ্লবী যুব সংহতির সদস্যসচিব মীর রেজাউল হক, বাংলাদেশ যুব সংহতির আহ্বায়ক হারুন-অর রশিদ প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ব র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ