এবার আষাঢ় কী উপহার দিয়ে গেল—এ প্রশ্নে যে কেউ বলে উঠবেন, কেন, কদম ফুল। আর মাসজুড়ে বৃষ্টির ঘ্যানর ঘ্যানর। রাজশাহীতে ছাতা ছাড়া কোথাও বের হওয়া যায়নি। তবে হাওয়াটা ছিল বেশ শীতল, বাতাসটা নির্মল। গাছের পাতারা প্রতিদিনই বৃষ্টির ফোঁটায় ধুয়ে নিয়েছে গায়ের ময়লাধুলো। এতে সবুজ পাতারা আরও সবুজ হয়েছে। প্রাণপ্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে।

কিন্তু আষাঢ়ের এই ৩১ দিনের সরাসরি কোনো আর্থিক অবদানও কি আছে? রাজশাহী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব বলছে, হ্যাঁ। এবার আষাঢ় মাসে লাগাতার বৃষ্টির কারণে আবহাওয়া শীতল ছিল। ফলে এসি (শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) ও বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবহার কম ছিল। এতে গত বছরের চেয়ে রাজশাহী শহরে ১ কোটি ১৬ লাখ ১৯ হাজার ৮ টাকা মূল্যের বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়েছে। যাকে কেউ কদম ফুলের সঙ্গে এবারের আষাঢ়ের বাড়তি উপহার বলতেই পারেন। কারণ, গত বছর আষাঢ়ে বৃষ্টি হয়েছিল মাত্র এক দিন। আর এবার হয়েছে সব দিন।

রাজশাহীতে নিয়মিত আবহাওয়ার তথ্য লিপিবদ্ধ করেন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের সাবেক শিক্ষক ও নওগাঁর শাহ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীর শাহ। তাঁর হিসাবমতে, এবার আষাঢ়ের প্রথম দিন থেকে শুরু করে প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এক দিনও ভারী বৃষ্টি হয়নি। গত বছর আষাঢ় মাসে মাত্র এক দিন বৃষ্টি হয়েছে। তার আগের বছর ২০২৩ সালে হয়েছে মাত্র তিন দিন। ২০২২ সালে হয়েছে চার দিন, ২০২১ সালে ছয় দিন এবং ২০২০ সালে হয়েছে পাঁচ দিন। তিনি ১৩ বছর ধরে আবহাওয়ার ডায়েরি লিখছেন। তার মধ্যে এ বছরের মতো বৃষ্টির চেহারা দেখেননি।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত, জলমগ্ন রাস্তায় মাছ শিকার২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, গত বছর আষাঢ়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আষাঢ় মাসজুড়েই এ রকম চড়া তাপ সইতে হয়েছে রাজশাহীর মানুষকে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আজিজুল হক জানিয়েছেন, মানুষের শরীরের ভেতরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ৩৬ দশমিক ৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। বাইরের তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি মানুষের কাছে অসহনীয় লাগে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর আষাঢ়ের ২৮ তারিখে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মানুষের শরীরের ভেতরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়েও কম। শুধু তা–ই নয়, মাসজুড়েই সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান ছিল কম।

গাছের পাতারা প্রতিদিনই বৃষ্টির ফোঁটায় ধুয়ে নিয়েছে গায়ের ময়লাধুলো। ৯ জুলাই রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ডাকরা গ্রামে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গত বছর

এছাড়াও পড়ুন:

ইভ্যালির রাসেল ও তাঁর স্ত্রীর আরও এক মামলায় ৩ বছর কারাদণ্ড

প্রতারণার আরও একটি মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তাঁর স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম এ রায় দেন। রায় ঘোষণার পর রাসেল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এ নিয়ে প্রতারণার পৃথক পাঁচটি মামলায় রাসেল ও শামীমা নাসরিনের ১২ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হলো।

এর আগে সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল প্রতারণার একটি মামলায় রাসেল ও তাঁর স্ত্রীর তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

আজ যে মামলায় রাসেল দম্পতির সাজা হয়েছে, সেই মামলায় প্রতারণার মাধ্যমে ২৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন আবুল কালাম আজাদ নামের একজন গ্রাহক।

৬ এপ্রিল ঢাকার সিএমএম আদালত প্রতারণার আরেকটি মামলায় এই দম্পতিকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া গত ২৯ জানুয়ারি প্রতারণার অভিযোগে করা আরেকটি মামলায় তাঁদের দুই বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।

গত বছরের ২ জুন চেক প্রত্যাখ্যানের মামলায় রাসেল ও তাঁর স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন চট্টগ্রামের আদালত।

২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে রাসেল ও শামীমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনে মুক্ত হন।

আরও পড়ুনইভ্যালির রাসেল ও তাঁর স্ত্রীর আরও ৩ বছর কারাদণ্ড১৩ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ