হঠাৎ রেললাইনে উঠে আসা অটোরিকশাটি আটকে যায় ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে। আর ওই অবস্থায় ট্রেনটি প্রায় এক কিলোমিটার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় অটোরিকশাটিকে। ট্রেনটি থামার পর দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশটাটি ছিটকে পড়ে বেশ দূরে

কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, রেললাইনে উঠে আসা অটোরিকশাটি ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেছে। এতে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ যাত্রীর সবারই।

আজ শনিবার বেলা দেড়টায় রামুর রশিদনগরের ধলিরছড়া রেলক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় অটোরিকশার চালক হাবিব উল্লাহ (৫০), ভারুয়ালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ছাদকপাড়ার রেণু আরা (৪৫) ও তাঁর বোন আসমা আরা (১৩), রেণু আরার তিন বছর ও দেড় বছর বয়সী দুই ছেলে আশেক উল্লাহ ও আতা উল্লাহ নিহত হন। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা ধলিরছড়া রেলক্রসিংয়ে অবস্থান নিলে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে পড়ে।

রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রেললাইনে উঠে যাওয়া অটোরিকশাটি ইঞ্জিনের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এরপর চলন্ত ট্রেনটির ইঞ্জিনে আটকে যায়। ট্রেনটি অটোরিকশাকে টেনে নিয়ে যায় এক কিলোমিটার দূরে।

আরও পড়ুনকক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় ৫ জনের মৃত্যুর পর বিক্ষুব্ধ জনতা আটকে রেখেছে সৈকত এক্সপ্রেস৪২ মিনিট আগে

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কোনো কারণে হার্ড ব্রেক বা তাৎক্ষণিক ব্রেক চাপলেও ট্রেন থামতে পারে ৪০২ মিটার বা ৪৪০ গজ দূরে গিয়ে। তবে কক্সবাজার রেললাইনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ট্রেন থেমেছে প্রায় এক কিলোমিটার বা ১ হাজার মিটার দূরে গিয়ে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে উপপ্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস প্রায় ৭০ কিলোমিটার গতিতে যাচ্ছিল। অনেক সময় সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক চাপা যায় না। পরিস্থিতি ও গতি বিবেচনা করতে হয়। এতে অনেক সময় হিতে বিপরীত হওয়ার শঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।

এদিকে এই দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। তদন্ত কমিটির প্রধান হচ্ছেন সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনকক্সবাজারের রামুতে অটোরিকশাকে ট্রেনের ধাক্কা, পাঁচ যাত্রী নিহত২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ক ল ম ট র কর মকর ত দ র ঘটন ট র নট তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ