সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (৩ আগস্ট) রাতে সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের পাঁচঠাকুরি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে সদর নৌ-পুলিশের ওসি রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাজিপুর উপজেলার চর থেকে ৭-৮ জন গরু চুরি করে নৌকায় করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। তারা নৌকা থামিয়ে দুইজনকে গণপিটুনি দেন। ঘটনাস্থলেই একজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে অপরজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডেকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
আরো পড়ুন:
সড়কের কাজে অনিয়ম, অস্বীকার করায় এলজিইডি কর্মচারীকে মারধর
চিকিৎসককে মারধর, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ গ্রেপ্তার ১০
সদর নৌ-পুলিশের ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, গরু চুরি করে কিছু লোক নৌকায় যমুনা নদী পাড় হচ্ছে এমন সন্দেহে স্থানীয়রা আরেকটি নৌকা নিয়ে তাদের ধাওয়া করেন। নৌকার ভেতরে কয়েকটি গরু পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান তারা। তখন উত্তেজিত জনতা চোর সন্দেহে তাদের গণপিটুনি দেন।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেসুর রহমান জানান, চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ন হত আহত গণপ ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিংড়ার ভ্যানচালক জিহাদ হত্যার রহস্য উদঘাটন, ২ বন্ধু গ্রেপ্তার
নাটোরের সিংড়ায় ভ্যানচালক মো. জিহাদ (২০) নামে এক তরুণকে হত্যার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এর রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তারও করেছে তারা। গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন আলামত এবং ছিনতাই হওয়া ভ্যান।
শনিবার (২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহীতে র্যাব-৫ সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের বড়িয়া গ্রামের মো. সাগর প্রামাণিক (১৮) এবং মো. সুলতান প্রামাণিক (১৯)। তারা বন্ধু। নিহত জিহাদও তাদের বন্ধু ছিলেন।
আরো পড়ুন:
স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মসমর্পণ
রাজধানীতে বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, আটক ৫
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ জানান, গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় সিংড়ার ইটালি ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকার চলনবিল থেকে এক তরুণের মুখ বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও র্যাব। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
পরিচয় শনাক্তের পর জানা যায়, নিহত তরুণের নাম জিহাদ, তিনি ভ্যানচালক। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে র্যাব-৫-এর গোয়েন্দা দল তদন্তে নামে। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জড়িতদের শনাক্ত করে তারা। শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় চৌগ্রাম ইউনিয়নের বড়িয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাগর ও সুলতানকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তারা জানান, চার মাস আগে জিহাদের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এরপর থেকে তারা প্রায়ই একসঙ্গে ঘোরাঘুরি ও মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়েন।
সাগর জানান, তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। চিকিৎসা ও সংসারের খরচ জোগাতে তিনি চরম আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন। সুলতানও দীর্ঘদিন ধরে বেকার ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এই পরিস্থিতিতে তারা জিহাদের ব্যাটারিচালিত ভ্যান ছিনিয়ে নিতে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৩০ জুলাই সন্ধ্যায় চৌগ্রাম বাজারে দেখা করেন তারা। আড্ডার ছলে সিংড়া বাজার থেকে কিছু ঘুমের ওষুধ সংগ্রহ করে তা একটি কোমল পানীয়র বোতলে মিশিয়ে রাখেন। পরে ঘোরাঘুরির কথা বলে জিহাদকে তার ভ্যানে উঠিয়ে চলনবিলের দিকে নিয়ে যান। পথে কোমল পানীয় পান করান জিহাদকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই জিহাদ অচেতন হয়ে পড়েন।
রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে ইটালি ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া বাজারসংলগ্ন একটি নির্জন জায়গায় তারা ভ্যান থামান। সেখানে অচেতন জিহাদকে গলা টিউব পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে গামছা দিয়ে মুখ শক্ত করে বেঁধে তাকে বন্যার পানিতে ফেলে দেন।
হত্যাকাণ্ডের পর সুলতান নিহতের মোবাইল ফোন নিজের কাছে রেখে দেন। সাগর ভ্যানটি বিক্রির জন্য ইটালি গ্রামের এক মেকারের বাসায় রেখে আসেন।
র্যাব-৫ গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভ্যান, মোবাইল ফোন এবং হত্যায় ব্যবহৃত টিউব উদ্ধার করে।
র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ জানান, গ্রেপ্তার দুইজনকে সিংড়া থানায় হস্তান্তর করা হবে। পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠাবে।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ